News update
  • Cumilla City’s Tk 2cr CCTV cameras fall blind     |     
  • Abu Sayeed murder: Charge-framing hearing Sunday     |     
  • Milestone tragedy: Death toll reaches 34     |     
  • Sudan's rival forces declare parallel govt, deepening crisis     |     
  • UN Scientific Panel to Study Nuclear War Consequences     |     

২২ বছরে ২৫ বার পুড়েছে সুন্দরবন

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক বিপর্যয় 2024-05-06, 4:15pm

uuiuuiu-c67de3245b914ed85d1cf83a45cc4d851714990505.jpg




বারবার আগুনে পুড়ছে ম্যানগ্রোভ সুন্দরবন। এসব অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সুন্দরবনের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সর্বশেষ শনিবার (৪ মে) লাগা আগুন রোববার (৫ মে) সন্ধ্যা পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে চার একরের অধিক এলাকাজুড়ে। এ নিয়ে গত ২২ বছরে ২৫ বার আগুনে পুড়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ অরণ্য সুন্দরবন।

এদিকে আগুন লাগার ঘটনায় বনবিভাগকে দায়ী করে মানববন্ধন করেছে পরিবেশবাদী সংগঠন। দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে আগুন নেভানো সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ নৌবাহিনী।

প্রতিবার অগ্নিকাণ্ডের পর বনবিভাগের তদন্তে আগুন লাগার কারণ হিসেবে মৌয়ালীদের ব্যবহৃত আগুনের কুণ্ডলী, জেলেদের সিগারেট, দাবদাহ, অনাবৃষ্টি, খরা, বন অপরাধে সাজাপ্রাপ্তদের প্রতিশোধমূলক আচরণ, দুষ্কৃতকারীদের দিয়ে বনের মধ্যে আগুন ধরানোকে দায়ী করা হয়। আগুনের স্থায়িত্বের কারণ হিসেবে বিভিন্ন গাছের পাতার পুরু স্তরকেও দায়ী করেছে তদন্ত কমিটি।

সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ২০০২ সালে সুন্দরবনের পূর্ব বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের কটকায় একবার, একই রেঞ্জের নাংলী ও মান্দারবাড়িয়ায় দু’বার, ২০০৫ সালে পচাকোড়ালিয়া, ঘুটাবাড়িয়ার সুতার খাল এলাকায় দুবার, ২০০৬ সালে তেড়াবেকা, আমুরবুনিয়া, খুরাবাড়িয়া, পচাকোড়ালিয়া ও ধানসাগর এলাকায় পাঁচবার, ২০০৭ সালে পচাকোড়ালিয়া, নাংলি ও ডুমুরিয়ায় তিনবার, ২০১০ সালে গুলিশাখালীতে একবার, ২০১১ সালে নাংলীতে দুবার, ২০১৪ সালে গুলিশাখালীতে একবার, ২০১৬ সালে নাংলী, পচাকোড়ালিয়া ও তুলাতলায় তিনবার, ২০১৭ সালে মাদরাসারছিলায় একবার এবং ২০২১ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ধানসাগর এলাকায় একবার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ২০২১ সালের ৩ মে শরণখোলা রেঞ্জের দাসের ভারানি এলাকায় দুইবার আগুন লাগে। সর্বশেষ চলতি বছরের ৪ মে চাঁদপাই রেঞ্জের আমরবুনিয়া এলাকায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে যা এখনো নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। সুন্দরবনের সবকটি আগুনের ঘটনাই শুষ্ক মৌসুমে। আগের ২৪ বারের অগ্নিকাণ্ডে প্রায় ১০০ একর বনজ সম্পদের (সুন্দরী গাছসহ বিভিন্ন লতা-গুল্ম) পুড়ে যায়।

সন্দরবনে বারবার অগ্নিকাণ্ডের বিষয়ে সেভ দ্য সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম বলেন, সুন্দরবনের মধ্যে এমনি এমনি আগুন লাগতে পারে না। এর পেছনে অনেক কারণ আছে। হয়তো মাছ শিকারি, মধু সংগ্রাহকদের বিড়ি-সিগারেট থেকে আগুন লাগতে পারে।

বিভিন্ন সময়ে আগুন লাগার ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়ন করা জরুরি বলে উল্লেখ করেন তিনি। এতে সুন্দবনের আগুনে ক্ষয়ক্ষতি পরিমাণ কমানো সম্ভব হবে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) এর কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক ও সুন্দরবন রক্ষায় সমন্বয়কারী পশুর রিভার ওয়াটারকিপার নূর আলম শেখ বলেন, কিছু অসৎ মাছ ব্যবসায়ীরা বন কর্মীদের সহায়তায় অধিক মুনাফার লোভে বর্ষা মৌসুমে জাল পাতার জন্য মাঠ পরিষ্কারের উদ্দেশ্যে আগুন লাগিয়ে দেয়। পাশাপাশি অদক্ষ মৌয়ালদের জন্য আগুন লেগে যায়। এর দায় কোনোভাবেই বন বিভাগ এড়াতে পারে না। সরকার ও বনবিভাগ সুন্দরবন রক্ষায় আন্তরিক নয়। আন্তরিক হলে বারবার সুন্দরবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটত না।

তিনি আরও বলেন, সুন্দরবনের যে অংশে সর্বশেষ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে সেখানে চলাচলের রাস্তা তৈরি করে রেখেছে অসাধু লোকেরা। সুন্দরবনের গাছ কাটার জন্য এবং পরিবেশ ধ্বংস করার জন্য প্রতিনিয়ত এখান থেকে চলাচল করে। এর থেকে বোঝা যায় এখানে একটি অসৎ ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট রয়েছে। বন বিভাগের এসব অজানা থাকার কথা নয়।

এদিকে অগ্নিকাণ্ডের কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানতে চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক রানা দেবকে প্রধান করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন— সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের চাদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশন কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম ও ঝিউধারা স্টেশন কর্মকর্তা ওবায়দুর রহমান।

কমিটিকে আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। তদন্ত কমিটির রিপোর্টে যদি অগ্নিকাণ্ডের কারণ ‘মানবসৃষ্ট’ বলে উঠে আসে, তাহলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে উল্লেখ করেন এই বন কর্মকর্তা। আরটিভি নিউজ।