News update
  • Israel Isolates Gaza, Butchers 508 Palestinians in One Week      |     
  • BNP disapproves Nat’l Const Council formation: Salahuddin     |     
  • Khaleda taken to Evercare Hospital for health check-up     |     
  • Iran Won’t Accept Forced War or Surrender: Khamenei     |     
  • Israeli strikes killed 585 people in Iran, HR group says     |     

সুন্দরবনে একাধিক স্থানে আগুন, বিপাকে বনবিভাগ ও ফায়ার সার্ভিস

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক বিপর্যয় 2025-03-24, 8:18am

56d1da3ebfad8529ae924d0d9ab7e048b46e0ac250cbc35d-e7776abb8dc8a97f6a019d1f002d968a1742782685.jpg




সুন্দরবনে লাগা একটি স্থানের আগুন নেভাতে না নেভাতেই সুন্দরবনের নতুন করে আরেকটি স্থানে আগুন লেগেছে। কোথাও কোথাও দাউদাউ করে জ্বলছে, আবার কোথাও কোথাও ধোঁয়ার কুণ্ডলি উড়তে দেখা যাচ্ছে। অন্তত আধা কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আগুন জ্বলছে।

রোববার (২৩ মার্চ) দুপুরে বনবিভাগ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সেখানে পৌঁছে আগুনের বিস্তৃতি ঠেকাতে ফায়ার লাইন কাটার (মাটি কেটে বিচ্ছিন্ন করা) কাজ শুরু করেছে। তবে এই স্থানে কীভাবে আগুনের সূত্রপাত তা জানাতে পারেনি বনবিভাগ। কলমতেজি টহল ফাঁড়ি এলাকায় লাগা আগুনের উত্তর পশ্চিম দিকের অন্তত দুই কিলোমিটার দূরে তেইশের ছিলার শাপলারবিল এলাকা বলে জানিয়েছে তারা। নতুন করে আগুন লাগা এবং পানির উৎস দূরে থাকায় তা নেভাতে বিপাকে পড়তে হচ্ছে বনবিভাগ। রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের তেইশের ছিলার শাপলারবিল এলাকায় ওই আগুন জ¦লতে দেখে বনবিভাগ।

এদিকে, কলমতেজি টহল ফাঁড়ি এলাকায় লাগা আগুন রবিবার দুপুরের মধ্যে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে এসেছে।  তবে এই আগুনের স্থান বনবিভাগ পর্যবেক্ষণে রেখেছে।

এর আগে গত শনিবার সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের কলমতেজি টহল ফাঁড়ি এলাকায় আগুন লাগে।

সরজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, আগুন লাগার স্থানটি সুন্দরবন সংলগ্ন বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার ধানসাগর গ্রাম। এই গ্রামের মানুষ সুন্দরবনের মরা ভোলা নদীটি পার হয়ে সুন্দরবনের ভেতরে অবাধে প্রবেশ করে থাকে। বিশেষ করে শীত মৌসুমে নদীটিতে পানি থাকে অনেক কম। ফলে শীত মৌসুমেই ওই গ্রামের বাসিন্দাদের যাতায়াত বাড়ে। তারা গরু ছাগল নিয়ে বনের মধ্যে প্রবেশ করে।

ধানসাগর গ্রামের বাসিন্দারা বলেন, গ্রামের পাশেই সুন্দরবন। শীত মৌসুম আসলে মরা ভোলা নদীতে পানি থাকে কম। যার ফলে এখানকার বাসিন্দারা বনের ভেতরে ঢুকে শুকিয়ে যাওয়া কাঠপাতা সংগ্রহ করে। কেউ কেউ তাদের পালন করা গরু ছাগল চরাতে বনে নিয়ে যায়। সুন্দরবনে সাধারণ মানুষের প্রবেশ বন্ধ করতে সুন্দরবন লাগোয়া মরা ভোলা নদীটি খনন করা খুব জরুরী হয়ে পড়েছে। নদীটি খনন হলে সাধারণ মানুষের প্রবেশ বন্ধ হবে আর বনের ভেতরেও জোয়ারের পানি ঢুকতে পারবে। তাই সরকারের উচিত নদীটি খনন করে আগের নাব্যতা ফিরিয়ে আনা। শীত মৌসুমে সুন্দরবনে প্রায় আগুন লাগার ঘটনা ঘটছে। আগুনে বনের গাছপালা পুড়ে বনভূমির কমবেশি ক্ষতি হচ্ছে। আগুন নেভানোর পানির তীব্র সংকট রয়েছে। সুন্দরবনের মরে যাওয়া নদী ও খালগুলো সংষ্কার করা এবং প্রয়োজনে বনের ভেতরে কিছু পুকুর খনন করারও দাবী বাসিন্দাদের।

পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বনকর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মুহাম্মদ নূরুল করিম বলেন, সুন্দরবনের কলমতেজি টহল ফাঁড়ি এলাকায় লাগা আগুন নেভানো কাজের মধ্যে নতুন করে চাঁদপাই রেঞ্জের তেইশের ছিলার শাপলারবিল এলাকায় আগুন লেগেছে। সকাল সাড়ে এগারোটার দিকে ড্রোন ও জিপিআরএস ট্রাকিং এর মাধ্যমে ওই আগুনের উৎপত্তি স্থলের সন্ধান পেয়ে দ্রুত সেখানে ছুটে যায় বনকর্মীরা। সেখানে যেয়ে দেখি কোথাও কোথাও দাউদাউ করে জ্বলছে, আবার কোথাও কোথাও ধোঁয়ার কুন্ডলি উড়ছে। এখানকার আগুনের তীব্রতা বেশি, বনের মধ্যে হালকা বাতাস থাকায় আগুন ছড়াচ্ছে বেশি। স্থানীয় গ্রামবাসী ও বনকর্মীদের সাথে নিয়ে আগুনের বিস্তৃতি ঠেকাতে ফায়ার লাইন কাটার কাজ শুরু করা হয়েছে। এই কাজটি করার পরে পাইপ লাইনের মাধ্যমে পানি সংগ্রহ করে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করা হবে।

তিনি আরও বলেন, কলমতেজির মতো এখানেও পানির উৎসব প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে। একটার মধ্যে আরেকটা দূর্ঘটনায় বনবিভাগকে বিপাকে ফেলে দিয়েছে। তারপরেও আমরা আগুন নিয়ন্ত্রণে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। বনের এই এলাকায় মূল্যবান কোন গাছপালা না থাকলেও লতাগুল্ম বলা জাতীয় গাছপালা রয়েছে। আগুনের সূত্রপাত এখনই বলা যাচ্ছে না। কলমতেজিতে লাগা আগুন এখন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে তবে ওই এলাকাটি পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

তিনি আরও বলেন, সুন্দরবনে আগুন লাগার কারন এবং আগুনে বনভূমির ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণ এখনো আমরা করতে পারিনি। কারন অনুসন্ধান ও ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণ করতে পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারি বন সংরক্ষক দিপন চন্দ্র দাসকে প্রধান তিন সদস্যের একটি কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। তাদের দেয়া তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলে বিস্তারিত জানা যাবে।

খুলনা ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক মতিয়ার রহমান বলেন, কলমতেজির আগুনের থেকে এখানকার আগুনের তীব্রতা বেশি। ছড়িয়ে ছিটিয়ে বিভিন্ন স্থানে আগুন জ¦লছে। বাগেরহাট ও খুলনার ছয়টি ইউনিট শনিবার থেকে আগুন নেভানোর কাজে যোগ দিয়েছে। কলমতেজির আগুন নেভানোর মধ্যে নতুন আরেকটি এলাকায় আগুন লাগার খবর পেয়ে আমরা সেখানে পৌঁছেছি। পানির উৎস তিন কিলোমিটার দূরে হওয়ায় আমরা এখনো কাজ শুরু করতে পারিনি। আগুনের বিস্তার রোধে বনবিভাগ, ফায়ার সার্ভিস ও গ্রামবাসী মিলে ফায়ার লাইন কাটার কাজ চলছে। সময়