News update
  • Fire at UN climate talks in Brazil leaves 13 with smoke inhalation     |     
  • 5mmcfd gas to be added to national grid from Kailashtila gas field     |     
  • ArmArmed Forces Day: Tarique's message draws on historic closeness     |     
  • UNGA urges renewed int’l efforts for a resolution of Rohingya crisis      |     
  • First National AI Readiness Assessment Report Published     |     

ফুলগাজী-পরশুরামের পানি নেমে ছাগলনাইয়া ও সদরের ৩০ গ্রাম প্লাবিত

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক বিপর্যয় 2025-07-11, 8:06am

76c01e32023582095aef3cf10e896d93dc202556a21ea677-a56f780d3b47df57c9f2995c7a6335491752199609.jpg




ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানির তোড়ে বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধের ভাঙাস্থান দিয়ে আসা পানি পরশুরাম ও ফুলগাজী থেকে গড়িয়ে ছাগলনাইয়া ও ফেনী সদর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ঢুকে পড়েছে। এতে নতুন করে অন্তত ৩০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) পর্যন্ত বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ২১টি স্থানে ভেঙে শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বন্যাকবলিত গ্রামের হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বৃষ্টিপাত কমায় পরশুরামে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও ফুলগাজীতে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত স্থিতি অবস্থা দেখা গেছে।

তবে বাঁধভাঙা পানিগুলো নিম্নাঞ্চল ছাগলনাইয়া ও ফেনী সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ঢুকে নতুন নতুন গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টার বৃষ্টি কমে আসায় নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। প্রশাসন, বিভিন্ন সংগঠন ও স্বেচ্ছাসেবীরা দুর্গত এলাকাবাসীর পাশ থেকে মানবিক সেবা দিয়ে যাচ্ছে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ফেনী-ফুলগাজী ও ফেনী-ছাগলনাইয়া আঞ্চলিক সড়কের ওপর দিয়ে ২ থেকে ৪ ফুট পর্যন্ত পানির প্রবাহ রয়েছে। তবে ফেনী শহরের প্রধান সড়কে যে জলাবদ্ধতা ছিল তা কেটে গেছে। শহর এলাকায় যান চলাচল স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে।

জানা গেছে, গত সোমবার থেকে ভারি বর্ষণের কারণে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ফেনীর ফুলগাজী ও পরশুরামে মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনীয়ায় নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ২১টি স্থান ভেঙে যায়। এতে করে ফুলগাজী, পরশুরাম, ছাগলনাইয়া, ফেনী সদর উপজেলার অন্তত শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বুধবার থেকে বৃষ্টি কমতে শুরু করায় সকাল থেকে পরশুরাম উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হতে থাকে। তবে বন্যার পানি নিম্নাঞ্চল ফুলগাজী গড়িয়ে ছাগলনাইয়া ও ফেনী সদর উপজেলায় ঢুকতে শুরু করে।

বৃহস্পতিবার সকালে ফেনী-ছাগলনাইয়া সড়কের রেজুমিয়া থেকে পৌরসভা পর্যন্ত অংশে এক থেকে দুই ফুট ওপর দিয়ে গড়িয়ে যেতে দেখা গেছে। এতে করে নতুনভাবে ছাগলনাইয়া উপজেলার পাঠাননগর, রাধানগর ও ছাগলনাইয়া পৌরসভার অন্তত ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে পানিগুলো ফেনী সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ঢুকে পড়ছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বাঁধভাঙা পানি ঢুকে ফেনী সদর উপজেলার কাজিরবাগ, মোটবী, ছনুয়া, ফাজিলপুর ইউনিয়নের অন্তত ২০টি গ্রাম নতুন ভাবে প্লাবিত করেছে। এসব এলাকার পুকুর ডুবে মাছ ভেসে গেছে।

মোটবী ইউনিয়নের সাইদুর ইসলাম বলেন, ‘বুধবার রাত থেকে আমাদের ইজ্জতপুর গ্রামে পানি বাড়তে থাকে। বৃহস্পতিবার বিকাল পর্যন্ত সড়কের কোথায়ও কোথায়ও ৩ থেকে ৪ ফুট পর্যন্ত ডুবে গেছে। এলাকার সব পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। অনেকেই গরু-ছাগল নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন।’

ফেনীর আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মজিবুর রহমান বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ৫৮ দশমিক ৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। ক্রমান্বয়ে বৃষ্টিপাত কমছে। তাই বন্যা পরিস্থিতিও উন্নতির দিকে রয়েছে।’

ফেনী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতানা নাসরিন কান্তা বলেন, ‘আমাদের খালগুলো পরিষ্কার করা অবস্থায় রয়েছে। তারপরও বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রশাসকদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়ে নাগরিকদের সচেতন করতে বলা হয়েছে। কবলিতদের আশ্রয় কেন্দ্রে ওঠার জন্য নির্দেশনা দেয়া আছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড ফেনীর নির্বাহী প্রকৌশলী আক্তার হোসেন মজুমদার বলেন, ‘মুহুরী নদীর পানি ১ দশমিক ৯৩ মিটার বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফুলগাজী এলাকার বন্যা কবলিত গ্রামগুলোতে পানির অবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে। পানির চাপ কমে যাওয়ায় নতুন করে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভাঙার আশঙ্কা নেই। পানি কমে গেলেই ভাঙন কবলিত স্থানগুলো মেরামত করা হবে।’

ফেনী জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘ফেনীতে বন্যা কবলিত ৪ উপজেলার মধ্যে পরশুরামে পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। ফুলগাজীতেও কিছুটা ভালোর দিকে রয়েছে। তবে বৃহস্পতিবার বন্যার পানি ছাগলনাইয়ার প্রধান সড়ক গড়িয়ে বিভিন্ন নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। আশাকরি শুক্রবার পর্যন্ত জেলাজুড়ে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি শুরু হবে। এখন পর্যন্ত ৫০টি আশ্রয় কেন্দ্রে ৪ উপজেলায় প্রায় ৭ হাজার মানুষ আশ্রিত রয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘২০ হাজারের ওপরে কবলিত জনসাধারণের মাঝে খাবার সরবরাহের জন্য প্রশাসনের সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নেতারাও কাজ করে যাচ্ছে।’