News update
  • Hadi is no more, state mourning on Saturday: CA     |     
  • Bangladesh capital market falls; weekly turnover lowest     |     
  • Sharif Osman Hadi No More     |     
  • Tarique Rahman to Return Home With Daughter on Dec 25     |     
  • ILO praises Bangladesh’s labour reforms, new milestones     |     

উত্তর কোরিয়ার দাবি কোভিড সেখানে ঢুকেছে 'বেলুনে চেপে' সীমান্ত পার হয়ে

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক বিবিধ 2022-07-02, 9:23am




পিয়ংইয়ং-এর রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত সংবাদ মাধ্যমে দাবি করা হয়েছে উত্তর কোরিয়ার কোভিডের প্রাদুর্ভাব শুরু হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে তাদের সীমান্তের কাছে এসে পড়া "অজানা বস্তু" দেশটির নাগরিকরা স্পর্শ করার পরেই।

দক্ষিণ কোরিয়া থেকে সীমান্ত দিয়ে উড়ে আসা বস্তু সম্পর্কে নাগরিকদের সজাগ থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।

বহু বছর ধরেই দক্ষিণ কোরিয়ার অধিকার কর্মীরা বেলুনে করে সীমান্তের অপর পারে পুস্তিকা, প্রচারপত্র এবং মানবিক সাহায্য পাঠিয়ে আসছে।

উত্তর কোরিয়ার এই দাবির প্রতিক্রিয়ায় সোল বলেছে এই ভাবে কোভিড ভাইরাসের সীমান্ত পার হয়ে সেখানে যাওয়া "একেবারেই অসম্ভব"।

উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত সংবাদ মাধ্যমে বলা হয়েছে সরকারি তদন্তে বের হয়ে এসেছে যে, এই ভাইরাস যখন ছড়াতে শুরু করে তখন প্রথম দিকে দক্ষিণ কোরিয়ার সাথে সীমান্ত এলাকায় অজ্ঞাত কিছু বস্তুর সংস্পর্শে আসার পর দুই ব্যক্তি কোভিড আক্রান্ত হন।

কী বলছে পিয়ংইয়ংএর তদন্ত?

সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে এপ্রিল মাসের গোড়ায় ইফো-রি পাহাড়ে এসে পড়া অজ্ঞাত কিছু বস্তু খুঁজে পাবার পর ১৮ বছর বয়সীএকজন সৈনিক এবং তার পাঁচ বছরের সন্তান কোভিড পজিটিভ শনাক্ত হয়।

তাদের খবরে আরও জানানো হয়: "এরপর থেকে প্রাণঘাতী কোভিড-১৯ ভাইরাস...ডিপিআরকে-তে [উত্তর কোরিয়া] দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে।"

এই তদন্তের ফলে উত্তর কোরিয়ার জনগণকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে "তারা যেন দুই কোরিয়ার মধ্যে চিহ্ণিত সীমানায় এবং সীমান্তবর্তী এলাকায় বেলুনে পাঠানো, কিংবা বাতাস ভেসে আসা বা আবহাওয়া মণ্ডলের কোন প্রক্রিয়া ব্যবহার করে পাঠানো অজানা বস্তু সম্পর্কে সজাগ থাকে এবং সেগুলো ধরাছোঁয়ার ব্যাপারে সতর্ক হয়।"

দেশের জনগণকে আরও নির্দেশ দেয়া হয়েছে কেউ রহস্যজনক কিছু দেখলেই যেন অবিলম্বে কর্তৃপক্ষকে জানায়, যাতে জরুরিকালীন মহামারি দমন বাহিনীর সদস্যরা সেগুলো দ্রুত সরিয়ে ফেলতে পারে।

এই রিপোর্টে সরাসরি দক্ষিণ কোরিয়ার নাম উল্লেখ করা না হলেও, সোলে দুই কোরিয়ার একত্রীকরণ বিষয়ক মন্ত্রণালয় কীভাবে কোভিড ভাইরাস উত্তর কোরিয়ায় ঢুকেছে তা নিয়ে পিয়ংইয়ং-এর এই ব্যাখ্যা জোরের সাথে অস্বীকার করেছে।

দুই কোরিয়ার মধ্যেকার বন্ধ সীমান্ত পৃথিবীর অন্যতম সবচেয়ে সুরক্ষিত একটি সীমানা। তার পরেও উত্তর কোরিয়া ত্যাগ করে দক্ষিণে যাওয়া ব্যক্তিরা এবং দক্ষিণ কোরিয়ার অধিকার কর্মীরা বহু বছর ধরেই উত্তর কোরিয়া বিরোধী বার্তা সীমান্তের অপর পারে পাঠাতে বেলুন ব্যবহার করে আসছে।

শুধুই 'জ্বর'?

গত এপ্রিলের শেষ থেকে উত্তর কোরিয়া ৪৭ লাখ মানুষের 'জ্বর'এ আক্রান্ত হওয়ার একটা বিশাল ঢেউ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে এরা সবাই কোভিড আক্রান্ত, যার পরীক্ষা করা হয়নি।

রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত সংবাদ মাধ্যম জানাচ্ছে মে মাসে দেশটিতে কোভিডের মহামারি শুরু হওয়ার ঘটনাকে কিম জং আন বর্ণনা করেছেন "জন্ম লগ্নের পর দেশটি সবচেয়ে ভয়াবহ সঙ্কটে নিমজ্জিত হয়েছে।"

এ বছরের গোড়ার দিক পর্যন্ত বিচ্ছিন্নই দেশটির দাবি ছিল উত্তর কোরিয়া সম্পূর্ণ কোভিড-মুক্ত দেশ। যদিও কিছু বিশেষজ্ঞের ধারণা এর আগে থেকেই দেশটিতে এই ভাইরাস ঘোরাফেরা করছিল।

আড়াই কোটি জনসংখ্যার এই দেশে টিকাদান কর্মসূচির অভাব রয়েছে, দেশটির স্বাস্থ্য সেবা ব্যবস্থাও অনুন্নত। যদিও সাম্প্রতিক কয়েক সপ্তাহে সংবাদ মাধ্যমের খবর থেকে জানা যাচ্ছে যে চীন তাদের তৈরি টিকা উত্তর কোরিয়াকে দেবার যে প্রস্তাব করেছে পিয়ংইয়ং তা গ্রহণ করেছে।

তবে দেশটিতে কত মানুষকে এ পর্যন্ত টিকা দেয়া হয়েছে বা আদৌ কাউকে টিকা দেয়া হয়েছে কিনা তা স্পষ্ট নয়।

গত কয়েক সপ্তাহে কর্মকর্তারা বলেছেন নতুন করে আক্রান্তের হার নাটকীয়ভাবে কমে গেছে, কিন্তু আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা সরকার চেপে রাখছে বলেই অনেকে সন্দেহ করছেন।

উত্তর কোরিয়া চীনের সঙ্গে তাদের সীমান্তে আরোপ করা কঠোর লকডাউন শিথিল করার কয়েক মাসের মধ্যে সেখানে কোভিডের প্রাদুর্ভাব শুরু হয়। দুই দেশের মধ্যে যে মালবাহী ট্রেনের চলাচল ২০২০ সালের গোড়ায় বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল, সেসময় তা আবার চালু করা হয়।

উত্তর কোরিয়া বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক লিম ইউলচুল রয়টার্স বার্তা সংস্থাকে বলেছেন, চীনে করোনার অমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার পর যখন চীন তা সামাল দিতে ব্যস্ত, তখন দুদেশের মধ্যে মালবাহী ট্রেনের চলাচল আবার শুরু করার কারণে ভাইরাস উত্তর কোরিয়ায় ঢুকে থাকতে পারে এমন ধারণা কঠিন এবং কূটনৈতিকভাবে স্পর্শকাতর প্রশ্নের জন্ম দিতে পারে।

"উত্তর কোরিয়া যদি বলত ভাইরাস চীন থেকে এসেছে, তাহলে তাদের চীন-উত্তর কোরিয়া সীমান্তে কঠোর কোয়ারেন্টাইন ব্যবস্থা বলবৎ করতে হতো আর সেটা করলে উত্তর কোরিয়া ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য আবার বড়ধরনের ক্ষতির মুখে পড়ত," বলছেন অধ্যাপক লিম ইউলচুল। তথ্য সূত্র বিবিসি বাংলা।