News update
  • Thousands of Gaza patients await urgent medical evacuation     |     
  • Sudan war fuels famine, health system ruined, millions move     |     
  • UN denounces deadly Palm Sunday attack in Ukraine     |     
  • Israeli attack puts Gaza City hospital out of service     |     
  • Tourists see first sunrise of Bengali year 1432 in Kuakata     |     

বাঙালি বিয়ে দেখতে আমেরিকা থেকে পাবনায় তরুণী

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক বিবিধ 2025-04-14, 7:25am

rtertewrw-e9febeca8dc298bba6ecbc01e0187e901744593951.jpg




বাঙালি বিয়ে দেখতে আমেরিকা থেকে বাংলাদেশে রুশ তরুণী ভিক্টোরিয়া। শখ বিভিন্ন দেশের খাবারের স্বাদ গ্রহণ ও ঐতিহ্য দেখে বেড়ানো। সুযোগ পেলেই তিনি চলে যান বিভিন্ন দেশে। রুশ এই তরুণী শুধু বাঙালি বিয়ের অনুষ্ঠান দেখতে এবার এসেছেন পাবনায়।

আমেরিকা প্রবাসী তানভীর ইসলাম ও মেহেজাবীন মতিন মৌয়ের বিয়েতে অংশ নিতে গত ৭ এপ্রিল বাংলাদেশে আসেন তিনি।

তানভীর পাবনার শিবরামপুরের রফিকুল ইসলামের ছেলে। পাবনার জনপ্রিয় ব্যান্ড দল বিহঙ্গ এর লিড গিটারিস্ট ও ভোকালিস্ট। সংগীত পরিচালক হিসেবেও তার পরিচিতি রয়েছে।

অন্যদিকে ভিক্টোরিয়ার পুরো নাম ভিক্টোরিয়া ডেগতারেভা (৩৫)। তিনি জন্মসূত্রে রাশিয়ান। তার বাবা ও মা রাশিয়াতেই থাকেন। কাজের জন্য ১২ বছর ধরে তিনি থাকেন আমেরিকায়। বেড়াতে তার ভালো লাগে। বিভিন্ন দেশের খাবার ও ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে ইচ্ছা করে। তাই সুযোগ পেলেই অন্য দেশে বেড়াতে যান। তার সহকর্মী তনিমা ইসলামের ভাইয়ের বিয়ে হচ্ছে। আমেরিকায় কাজের ফাঁকে বিষয়টি জানার পরই তিনি বাংলাদেশে আসার সিদ্ধান্ত নেন।

শনিবার দুপুরে জেলা শহরের একটি রিসোর্টে বিয়ের অনুষ্ঠানে অতিথিদের নজর কাড়েন ভিক্টোরিয়া। রীতিমতো শাড়ি পরে হইহুল্লোড় করছিলেন তিনি। এর আগে, বর–কনের গায়েহলুদ, বিয়েবাড়ির নাচ-গান, বরবরণসহ সব আনুষ্ঠানিকতায় যোগ দিয়েছেন তিনি। খাচ্ছেন বাঙালি খাবার। মুহূর্তেই মিশে যাচ্ছেন সবার সঙ্গে। ঘুমাচ্ছেন বিয়েবাড়ির গণঘরে। এতে বাড়তি আনন্দ যোগ হয়েছে বিয়ের অনুষ্ঠানটিতে।

ভিক্টোরিয়া জানান, মিসর, গ্রিসসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে তিনি গেছেন। তবে বাঙালি বা ইন্ডিয়ান কালচার সম্পর্কে তার কোনো ধারণা ছিল না। তাই তিনি বাংলাদেশে এসেছেন। দু’জন মানুষের একসঙ্গে হওয়ার জন্য এত আয়োজন দেখে মুগ্ধ হয়েছেন ভিনদেশি এই তরুণী। তিনি অনুষ্ঠানে বাংলাদেশি মেয়েদের মতো সাজার চেষ্টা করেছেন। প্রতিদিন শাড়ি পরছেন। শাড়ি পরতে তার ভালো লাগছে।

ভিক্টোরিয়া ডেগতারেভা বলেন, বিয়েবাড়িতে গেট ধরে বরের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার ঐতিহ্য রাশিয়াতেও আছে। তবে বাংলাদেশেরটা ভিন্ন লাগছে। বড়–ছোট সবাই এক হয়ে গিয়েছিল। বর–কনের গায়েহলুদ থেকে শুরু করে পুরো আনুষ্ঠানিকতাটাই বেশ রঙিন ছিল। এটা তাঁকে মুগ্ধ করেছে। বাংলাদেশের খাবার তার ভালো লেগেছে। তবে সবচেয়ে মজা পেয়েছেন খিচুড়ি খেয়ে। তার দৃষ্টিতে বাংলাদেশের মানুষ অনেক ভালো। তারা মিলেমিশে থাকেন। অনেক মানুষ একসঙ্গে আনন্দ করেন। এই আনন্দে যোগ দিতে পেরে তিনিও বেশ আনন্দিত।

বিয়েবাড়ির আয়োজকেরা জানান, দেখতে অন্যদের চাইতে ভিক্টোরিয়া আলাদা। কনের গায়েহলুদ অনুষ্ঠানে তিনি নীল রঙের শাড়ি পরেছিলেন। বরণডালা হাতে অনুষ্ঠানে গেছেন। বিয়ের প্রতিটি পর্বেই তিনি শাড়ি পরেছেন। সবার সঙ্গে মিশে ছিলেন। প্রচুর ছবি তুলেছেন, ভিডিও করেছেন। ছোট-বড় সবার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছেন।

বিয়ের অনুষ্ঠানের বরের বোন ও ভিক্টোরিয়ার সহকর্মী তনিমা ইসলাম বলেন, ভিক্টোরিয়া তাদের চমকে দিয়েছে। একাই বাংলাদেশে চলে এসেছে। এরপর পাবনায় এসে তাদের সঙ্গে মিশে গেছে। বাড়িতে যা রান্না হচ্ছে, তা–ই খাচ্ছে। সবার সঙ্গে মিলে আছে। সে যে আমেরিকা থেকে আসছে, তা বোঝাই যাচ্ছে না। বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে তার দেশে যাওয়ার কথা ছিল। এরপর বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের কথা শুনে বলছে, কয়েক দিন পরে যাবে। বর্ষবরণ অনুষ্ঠানটি সে দেখবে বলে জানিয়েছে।

তনিমা ইসলাম আরও বলেন, ভিক্টোরিয়া আসার পর প্রথমে খুব টেনশনে ছিলাম। বিশেষ করে খাবার নিয়ে। এখন দেখছি সে সব খাচ্ছে। যে কোনো দিন হাত দিয়ে খায় না, চামচ দিয়ে খায়। সে সবার সঙ্গে হাত দিয়ে খাচ্ছে।

বর তানভির ইসলাম বলেন, বিয়ের অনুষ্ঠানে ভিক্টোরিয়ার এই আগমন পুরো আয়োজনটাকে ভিন্ন মাত্রা দিয়েছে। সবাই তার সঙ্গে ছবি তুলছে। সেও সবার সঙ্গে ছবি তুলছে। সবার সঙ্গে হাসি–আনন্দে মেতে আছে। এটা সবার ভালো লেগেছে। আমরা তার এই আনন্দে নিজেরাও আনন্দ বোধ করছি।

আরটিভি