News update
  • Chittagong port tariffs increased up to 50 per cent     |     
  • Rising Heat Cost Bangladesh $1.8 Billion in 2024     |     
  • Stocks extend gains; turnover drops in Dhaka, rises in Ctg     |     
  • IAEA Chief Calls for Renewed Commitment to Non-Proliferation     |     
  • UN Aid Chief Warns Humanitarian Work Faces Collapse     |     

‘শুল্কারোপে দেশের রপ্তানিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে’

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক ব্যবসায় 2025-04-03, 5:19pm

45453453-6c23522cfa5ada32750c508f251dcc8d1743679183.jpg




বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্কনীতি বাংলাদেশের রপ্তানিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে এতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে এই প্রভাব পড়বে আমেরিকার অর্থনীতিতে চাহিদা কমার কারণে।

বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) একটি গণমাধ্যমকে এসব কথা বলেন তিনি।

অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, ধারণা করা হচ্ছে এই ট্যারিফ (শুল্ক) আরোপ করায় আমেরিকার অর্থনীতিতে মন্দা আসবে। সবকিছুর দাম বাড়বে। এতে ভোক্তাদের ক্রয় ক্ষমতা কমতে পারে। ফলে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি কমার আশঙ্কা রয়েছে।

তবে প্রতিযোগিতামূলক বাজারে বাংলাদেশের অবস্থান খুব বেশি পরিবর্তন হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, কারণ অন্যান্য দেশের ওপরও যুক্তরাষ্ট্র বাড়তি শুল্ক আরোপ করেছে, এমনকি কিছু দেশের ক্ষেত্রে তা বাংলাদেশের তুলনায় বেশি। ফলে বাংলাদেশের প্রতিযোগী দেশ ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলংকাসহ অন্য দেশগুলোও একই ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে, কোনো বাড়তি সুবিধা পাবে না। তবে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের ওপরে যেসব কারণে বাড়তি শুল্ক আরোপ করেছে, সেগুলো দূর করে এ শুল্ক কমিয়ে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করতে পারলে নেতিবাচক প্রভাব থেকে বের হয়ে আসার সুযোগ রয়েছে।

তিনি বলেন, আমেরিকা বলছে, বাংলাদেশের পণ্যের ওপর সরাসরি ও পরোক্ষভাবে ৭৪ শতাংশ শুল্ক আরোপিত হয়, যার ভিত্তিতে ট্রাম্প প্রশাসন ৫০ শতাংশ ছাড় দিয়ে ৩৭ শতাংশ শুল্ক নির্ধারণ করেছে। এখন দরকার আলোচনার মাধ্যমে এই হিসাব খতিয়ে দেখা এবং যুক্তি তুলে ধরা। বাংলাদেশকে মার্কিন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বসে আলোচনা করতে হবে যে, পরোক্ষ শুল্ক হিসাবের ভিত্তিগুলো যথাযথ কিনা। পাশাপাশি, সরকার ইতোমধ্যে যে সংস্কারগুলো করেছে, সেগুলো তুলে ধরা জরুরি।

এই অর্থনীতিবিদ বলেন, কিছু পণ্যের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক ছাড় দিচ্ছে, যেমন ওষুধ, লো প্রাইস (কম মূল্য) এবং এসেনসিয়াল আইটেম (নিত্য প্রয়োজনীয়)। চীনও এই ছাড় পাচ্ছে। অথচ বাংলাদেশ এই তালিকায় নেই। বাংলাদেশের উচিত যুক্তরাষ্ট্রকে বোঝানো যে, দেশটি কম দামের পোশাকসহ এসেনসিয়াল পণ্য রপ্তানি করে। এ কারণে এসব পণ্যের ক্ষেত্রে শুল্ক ছাড়ের দাবি করা যেতে পারে।

জাহিদ হোসেন বলেন, বাংলাদেশ ইতিমধ্যে কিছু ক্ষেত্রে এক্সপোর্ট সাবসিডি কমিয়েছে এবং সরকার সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে। এ ধরনের পদক্ষেপগুলো যুক্তরাষ্ট্রের সামনে উপস্থাপন করা উচিত। বাংলাদেশের উচিত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কূটনৈতিক আলোচনা করে শুল্ক কমানোর উদ্যোগ নেওয়া। সরকারের পাশাপাশি রপ্তানিকারকদেরও সম্মিলিতভাবে কৌশল নির্ধারণ করতে হবে।

এনিয়ে তিনি বলেন, এই বাড়তি শুল্ক সরবরাহকারীরা নয়, ক্রেতারা পরিশোধ করবে এই বিষয়ে তাদের ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত দরকার। যেমনটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের ব্যবসায়ীরা করছে। বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের নিজেদের মধ্যে গলাকাটা প্রতিযোগিতা থেকে বের হতে হবে। অর্থাৎ পণ্য বিক্রি করতে গিয়ে কেউ যেন এই বাড়তি শুল্ক নিজের ওপরে চাপিয়ে না নেয়। বাড়তি শুল্ক ক্রেতাদের ওপরেই চাপাতে হবে। 

তিনি আরও বলেন, বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ-কে একটি যৌথ নীতি নির্ধারণ করতে হবে, যাতে কোনো ব্যবসায়ী প্রতিযোগিতার কারণে নিজ উদ্যোগে পণ্যের দাম কমিয়ে এই বাড়তি শুল্কের চাপ নিজের ওপর না নেন। যদি কেউ এই কৌশল না মানে, তাহলে তার জন্য শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও রাখা উচিত।

ওয়াশিংটনের স্থানীয় সময় বুধবার (২ এপ্রিল) বিকেল ৪টায় (বাংলাদেশ সময় বুধবার দিনগত রাত ২টা) হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন করে বিভিন্ন দেশের ওপর শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ সময় উপস্থিত সাংবাদিকসহ সমবেতদের উদ্দেশে বক্তব্যের শুরুতেই ট্রাম্প বলেন, আজ খুব ভালো খবর থাকবে। প্রতিক্রিয়ায় দর্শক সারি থেকে করতালি দিয়ে তাকে অভিনন্দন জানানো হয়।

নতুন শুল্ক আরোপকে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা হিসেবে উল্লেখ করে ট্রাম্প বলেন, এই দিনের জন্য যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘ দিন ধরে অপেক্ষা করছে। বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কখনো কখনও ‘বন্ধু শত্রুর চেয়ে খারাপ হয়’।

তিনি বলেন, আজকের দিনকে আমেরিকান শিল্পের ‘পুনর্জন্ম’ এবং আমেরিকাকে ‘আবার সম্পদশালী’ করার দিন হিসেবে স্মরণ করা হবে।

 এশিয়ার দেশগুলোর ওপর ট্রাম্প নতুন করে কত শুল্ক আরোপ করেছেন, চলুন একনজরে জেনে নিই-

চীন - ৩৪ শতাংশ, ভিয়েতনাম - ৪৬ শতাংশ, তাইওয়ান - ৩২ শতাংশ, জাপান - ২৪ শতাংশ, ভারত - ২৬ শতাংশ, দক্ষিণ কোরিয়া - ২৫ শতাংশ, থাইল্যান্ড - ৩৬ শতাংশ, মালয়েশিয়া - ২৪ শতাংশ,

কম্বোডিয়া - ৪৯ শতাংশ, বাংলাদেশ - ৩৭ শতাংশ, সিঙ্গাপুর - ১০ শতাংশ, ফিলিপাইন - ১৭ শতাংশ, পাকিস্তান - ২৯ শতাংশ, শ্রীলঙ্কা - ৪৪ শতাংশ, মায়ানমার - ৪৪ শতাংশ, লাওস - ৪৮ শতাংশ।

এদিকে এক বিবৃতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যেসব দেশের পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে, তা কার্যকর করা হবে আগামী ৫ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় রাত ১২ টা ১ মিনিট থেকে। আর যেসব দেশের পণ্যের ওপর ১০ শতাংশের বেশি শুল্ক ঘোষণা করা হয়েছে, তা কার্যকর হবে আগামী ৯ এপ্রিল মার্কিন স্থানীয় সময় রাত ১২ টা ১ মিনিট থেকে।

আরটিভি