News update
  • Hundreds evacuated from Ukraine border after Russian offensive     |     
  • More than 200 dead in Afghanistan flash floods: UN     |     
  • Road crashes claim 8 human lives in 5 dists     |     
  • AL leader and former UP chairman shot dead in Narail      |     

ভারতে লোকসভা ভোটের আগে একাধিক রাজ্যে বিজেপি সভাপতি বদলের প্রস্তাব

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক মিডিয়া 2023-06-08, 6:56am

01000000-0aff-0242-7d2f-08db6797b3dd_w408_r1_s-0716ccc9f3a048d2acc432cf1835cfae1686185799.jpg




ভারতের দক্ষিণে কর্নাটক বিধানসভার ভোটে ক্ষমতা হারানো শুধু নয়, ভরাডুবি হওয়া, শুধু একটি রাজ্যে ক্ষমতা হাতছাড়া হওয়া নয়, অনেক গুরুতর সমস্যা নিয়ে চোখ খুলে দিয়েছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের। সেই কারণে, কর্নাটকে পরাজয়ের কারণ বিশ্লেষণের পাশাপাশি জেপি নাড্ডা, অমিত শাহরা ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনকে বিবেচনায় রেখে গোটা দেশেই দলীয় সংগঠনকে ঢেলে সাজতে চান। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ঠিক হয়েছে, এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসাবে বেশ কিছু রাজ্যে সভাপতি বদলের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

গত সোম ও মঙ্গলবার দিল্লিতে দলীয় দফতরে ম্যারাথন বৈঠক করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডা, সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) বিএল সন্তোষ। এছাড়া ২০২৪-এর লোকসভা ভোটের জন্য বিশেষভাবে দায়িত্বপ্রাপ্ত তিন সাধারণ সম্পাদক তরুণ চুঘ, সুনীল বনসল এবং বিনোদ তাওড়ে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

লোকসভা ভোটের আগে গুরুত্বপূর্ণ চার রাজ্য - মধ্যপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, রাজস্থান ও ছত্তীসগড়ে নির্বাচন আসন্ন। এরমধ্যে একমাত্র মধ্যপ্রদেশে বিজেপি ক্ষমতায় আছে। তেলেঙ্গানা, রাজস্থান এবং ছত্তীসগড়ে তারা বিরোধী দল। লোকসভা ভোটের আগে চার রাজ্যের ভোট দলকে চিন্তায় ফেলেছে কর্নাটকের ফলাফলে। সেখানে বিপর্যয়ের পর পরই সিদ্ধান্ত হয় কর্ণাটকের রাজ্য সভাপতি নলিন কুমার কাতিলকে সরিয়ে দেওয়া হবে। যদিও দক্ষিণের ওই একমাত্র রাজ্যটি হাতছাড়া হওয়ার জন্য আঙুল উঠেছে সাধারণ সম্পাদক সন্তোষের দিকেই। বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের মতে, কর্নাটকের হারের প্রধান কারণ ভোট ম্যানেজমেন্টের দুর্বলতা। তার দায় অনেকটাই কাতিল এবং সন্তোষের।

তেলেঙ্গানার দলীয় সভাপতি বন্দি সঞ্জয় কুমারকে নিয়ে রাজ্যে তুমুল বিরোধ আছে। তাছাড়া তেলেঙ্গানার প্রশ্ন ফাঁস কেলেঙ্কারিতে নাম জড়িয়েছে বিজেপি রাজ্য সভাপতির। পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। বর্তমানে জামিনে আছেন। তাঁকে নিয়েও দলকে ভাবনাচিন্তা করতে হচ্ছে। ভোটের মুখে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করলে ভোট পরিচালনায় সমস্যা হবে।

পর্যবেক্ষকদের মতে, বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের মাথাব্যথার আসল কারণ লোকসভার ভোট। একাধিক রাজ্যে দলীয় সভাপতিদের কাজকর্মের উপর ভরসা রাখতে পারছে না শীর্ষ নেতৃত্ব। মূল সমস্যা নির্বাচন পরিচালনায় নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্যতা অনেকেরই নেই। যদিও এই বক্তব্য নিয়ে ভিন্ন মতও আছে। অনেক বিজেপি নেতা-ই মনে করেন, এই সমস্যা দেখা দেওয়ার প্রধান কারণ, ভোটের সময় রাজ্য সভাপতি এবং রাজ্যের নেতাদের স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেওয়া হয় না। দিল্লি থেকেই সব সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হয়। ২০২১-এ বাংলায় ভরাডুবির পর এই ব্যাপারে প্রকাশ্যে মুখ খুলেছিলেন রাজ্যে তৎকালীন সভাপতি দিলীপ ঘোষ।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন শাহ, নাড্ডারা এই সুযোগে নিজেদেরও শুধরে নিতে চান। রাজ্য পার্টিকে স্বশাসন দেওয়ার আলোচনাও শুরু হয়েছে কর্নাটকে বিপর্যয়ের পর। সেখানে মোদী, শাহ, নাড্ডাদের দেখিয়ে সব সিদ্ধান্তই নিয়েছেন বিএল সন্তোষ। এই ধারার পরিবর্তন আনতে নির্বাচনের ব্যাপারে দক্ষ নেতাদের রাজ্য সভাপতি করার ভাবনা শুরু হয়েছে।

এই খবর জানাজানি হতে সব রাজ্যের মতো পশ্চিমবঙ্গেও রাজ্য সভাপতিকে সরাতে তৎপর দলের একাংশ। সূত্রের খবর, ওই শিবিরের বক্তব্য, তৃণমূলের বিরুদ্ধে মানুষের যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে তার সুবিধা বিজেপি নিতে পারছে না। রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের দলকে উদ্দীপিত করার যোগ্যতার অভাব রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য বিজেপি দৃশ্যতই কয়েকটি শিবিরে বিভক্ত। দেখা যাচ্ছে এক শিবিরের অনুষ্ঠান বাকিরা এড়িয়ে যাচ্ছে।

হালে দুটি ঘটনা নিয়ে দলে প্রবল আলোচনা শুরু হয়েছে। দলের রাজ্য কার্যকরী কমিটির বৈঠকে প্রাক্তন সভাপতি তথা সর্ব ভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ রাজ্যে দল পরিচালনার ধরনধারণ নিয়ে সরব হন। তাঁর বক্তব্য, বিরোধী দল হিসাবে বিজেপি তৃণমূলকে শক্ত চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে পারছে না। তাঁর বক্তব্য মাঠে নেমে আন্দোলনের কোনও বিকল্প নেই। কিন্তু শাসক দলকে বেকায়দায় ফেলার মতো আন্দোলন নেই।

দ্বিতীয় ঘটনাটি রাজ্য বিজেপির মিডিয়া সেলের উদ্যোগে মোদী সরকারের নয় বছরের পূর্তি উদযাপনের অনুষ্ঠান। মধ্য কলকাতার একটি অভিজাত হোটেলে সম্প্রতি আয়োজিত সেই অনুষ্ঠানে প্রথম সারির নেতা বলতে শুধু রাজ্য সভাপতি সুকান্ত উপস্থিত ছিলেন। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ ঘোষদের সেই অনুষ্ঠানে দেখা যায়নি। অথচ, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব মোদী সরকারের নয় বছরের সাফল্য তুলে ধরতে দলকে ঝাঁপিয়ে পড়ার নির্দেশ দিয়েছে। একমাসব্যাপী প্রচার অভিযানেরও ডাক দিয়েছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সেখানেও দেখা যাচ্ছে সব শিবির এক টেবিলে হাজির নেই। যদিও সুকান্ত সম্পর্কে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ভাবনা কারও কাছেই স্পষ্ট নয়। অন্যদিকে অমিত শাহ তাঁর শেষ বঙ্গ সফরে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর প্রশংসা করে গিয়েছেন। তথ্য সূত্র ভয়েস অফ আমেরিকা বাংলা।