News update
  • Govt to cut savings certificate profit rates from January     |     
  • Gold prices hit fresh record in Bangladesh within 24 hours     |     
  • Election to be held on time, Prof Yunus tells US Special Envoy     |     
  • Moscow wants Dhaka to reduce tensions domestically, also with Delhi     |     
  • Saarc experts meet to reduce livestock-origin greenhouse gases     |     

যেসব কারণে নির্বাচনে ধরাশায়ী মমতাজ

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক রাজনীতি 2024-01-09, 11:47am

akjhdjahdhak-5c5242b7d3adbdc9788088d38b1143181704779818.jpg




এবারের নির্বাচনে মানিকগঞ্জ-২ (সিঙ্গাইর, হরিরামপুর ও সদরের একাংশ) আসনে আওয়ামী লীগের হয়ে নির্বাচন করেছেন জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম। তবে শেষ পর্যন্ত বিজয়ের হাসি হাসতে পারলেন না তিনি। তাকে টপকে ট্রাক প্রতীক নিয়ে জয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহিদ আহমেদ টুলু।

মমতাজের হারের পর এলাকাবাসী তাকে নিয়ে মুখ খুলেছেন। তাদের অনেকের মতে, মমতাজ বেগম নিজের স্বার্থ সিদ্ধি করতেই ব্যস্ত ছিলেন। নিজের ইউনিয়ন ছাড়া অন্য কোথাও সেভাবে উন্নয়ন করেননি। এ ছাড়া এমন ধরাশায়ী হওয়ার পেছনে আরও বেশ কিছু যৌক্তিত কারণ তুলে ধরেছেন এলাকাবাসী।

কারচুপি ও কালো টাকা ব্যবহারের অভিযোগ :

সিঙ্গাইর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শহিদুর রহমানের মন্তব্য, কালোটাকার ব্যাপক বেপরোয়া ব্যবহার নির্বাচনকে প্রভাবিত করেছে। এ ছাড়া কোনো কোনো ভোটকেন্দ্রে কারচুপিও এই ফলাফলকে নিয়ন্ত্রণ করেছে।

উপজেলা চেয়ারম্যানের সঙ্গে বিরোধ :

দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মানিকগঞ্জ-২ আসনের নির্বাচনী এলাকার হরিরামপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেওয়ান সাইদুর রহমান এবং সিঙ্গাইর উপজেলা পরিষদের (সদ্য পদত্যাগ করা) চেয়ারম্যান মুশফিকুর রহমান খানের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পড়েন মমতাজ বেগম। গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মুশফিকুর রহমানের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে মমতাজ তার ঘনিষ্ঠ অনুসারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শহিদুর রহমানকে দাঁড় করান। নির্বাচনে মুশফিকুর রহমান উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলে তাদের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়। মুশফিকুর রহমান এই নির্বাচনেও দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরে যান। আর হরিরামপুরে একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি পদে সাইদুর রহমানের সঙ্গে মমতাজ বেগমও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দেন। এরপর ওই নির্বাচন স্থগিত হলে উপজেলা চেয়ারম্যান সাইদুর রহমানের সঙ্গে মমতাজের তুমুল বিরোধ দেখা দেয়। সাইদুর রহমান স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে প্রচণ্ডভাবে প্রচার-প্রচারণায় নামেন। এটি ভোটের মাঠে মমতাজের কঠিন পরীক্ষায় পড়তে হয়।

সৎ-মা ও তিন বোনের স্বতন্ত্র প্রার্থীকে সমর্থন :

মমতাজ বেগমের বাবা প্রয়াত মধু বয়াতীর প্রথম স্ত্রী মনোয়ারা বেগম (সৎ-মা) ও সৎ তিন বোন মানিকগঞ্জ-২ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ান জাহিদ আহমেদ টুলুকে সমর্থন দিয়েছেন। এ বিষয়টিও এলাকার মানুষের মনে প্রভাব ফেলে। অনেকে এমনও বলছেন, যিনি পরিবারে সমর্থন পান না, তিনি সবার সমর্থন কীভাবে পাবেন।

মমতাজের বোন শাহনাজ বেগম জয়মণ্টপ ইউপির সংরক্ষিত নারী সদস্য। তিনি বলেছিলেন, পারিবারিক বিভিন্ন সমস্যায় মমতাজ বেগমকে তারা পাশে পাননি। উল্টো জমিজমা ও সম্পত্তি বণ্টনে বৈষম্য করেছেন। এ কারণে তারা ক্ষোভে বোনের প্রতিপক্ষ স্বতন্ত্র প্রার্থীকে সমর্থন দিয়েছেন।

এলাকার উন্নয়নে ব্যর্থতা ও গরিবদের অবহেলার অভিযোগ :

মানিকগঞ্জের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের কেউ কেউ বলেছেন, উন্নয়নে কোনো কাজই করেননি মমতাজ। গরিব মানুষকে তিনি অবহেলা করেছেন। সিঙ্গাইরে যা কিছু হয়েছে, সবকিছু তিনি তার আত্মীয়স্বজন দিয়েই করিয়েছেন। হারার পর কেউ কেউ ডিপজলের প্রসঙ্গও এনেছেন। বলেছেন, ‘তিনি (মমতাজ) ডিপজলকে এনে নির্বাচনী বক্তব্য দিয়েছেন। ডিপজল বলেছে, সানডে-মানডে ক্লোজ কইরা দেবে। ক্লোজ কইরা দিতে গিয়ে তো নিজেই ক্লোজ হয়ে গেছেন।’

ইউনিয়ন চেয়ারম্যানদের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হওয়া :

মানিকগঞ্জ-২ নির্বাচনী আসনে মোট ১১ জন চেয়ারম্যানের মধ্যে ৮ জন মমতাজের বিরুদ্ধে কাজ করেছেন। তারা চেয়েছেন, মমতাজ ছাড়া অন্য কেউ আওয়ামী লীগের হয়ে সংসদ সদস্য হোক।

একজন ইউনিয়ন চেয়ারম্যান জানান, আমরা আটজন চেয়ারম্যান পাঁচ বছর ধরে তার সঙ্গে নেই। তিনি আমাদের অবমূল্যায়ন করেন, অসম্মান করেন। তিনি কিছু খারাপ লোক দ্বারা পরিবেষ্টিত আছেন। তারাই সব উন্নয়নমূলক কাজ করেন। আমরা চেয়ারম্যান হয়েও জনগণের জন্য কোনো কাজ করতে পারি না। তিনি থানা কমিটি করেছেন, সেখান থেকে আমাদের বাদ দেওয়ার চেষ্টাও করেছেন। পরে জেলা কমিটির মাধ্যমে নিজেদের জায়গা করেছি। আমি ছাত্রজীবন থেকে ছাত্রলীগের রাজনীতি করেছি, এরপরও আমাকে বাদ দিয়ে দিয়েছে। দুর্নীতিবাজদের তিনি পুনর্বাসন করেছেন। আমাদের কথাবার্তাকে তোয়াক্কা করেননি।

ভোটারদের আস্থা অর্জনে ব্যর্থতা:

দলের প্রার্থীর পরাজয়ের বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম মহীউদ্দীন বলেন, ভোটারদের আস্থা অর্জন করতে না পারা এবং নেতাকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতির কারণে মমতাজ বেগমের হেরে যাওয়ার মূল কারণ। এ ছাড়া বিভিন্ন দুর্নামেও পড়েছিলেন তিনি।

প্রসঙ্গত, কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম ২০০৮ সালে সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য হন। ২০১৪ সালের নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পান। ২০১৮ সালের নির্বাচনেও তিনি নির্বাচিত হয়েছিলেন। তথ্য সূত্র আরটিভি নিউজ।