News update
  • Hadi is no more, state mourning on Saturday: CA     |     
  • Bangladesh capital market falls; weekly turnover lowest     |     
  • Sharif Osman Hadi No More     |     
  • Tarique Rahman to Return Home With Daughter on Dec 25     |     
  • ILO praises Bangladesh’s labour reforms, new milestones     |     

আয় বৈষম্য কমানোর প্রধান উপায় প্রত্যক্ষ কর বাড়ানো

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক সংগঠন সংবাদ 2022-11-19, 7:14pm




ক্রমবর্ধমান বৈষম্য আয় কমাতে প্রত্যক্ষ কর বাড়াতে হবে। এটিই প্রধান উপায়। এ ক্ষেত্রে সব করযোগ্য ব্যক্তিরা আয়কর স্লাব অনুযায়ী কর প্রদান করলে জিডিপির অনুপাতে বর্তমানে ব্যক্তি আয়কর ১ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩.১ শতাংশ অর্জন করা সম্ভব। এ জন্য নিবন্ধিত করদাতার সংখ্যা বাড়াতে হবে। একইসাথে কর অব্যহতি সুবিধা বাদ দিলে জিডিপির অনুপাতে আরও ২ শতাংশ কর বাড়ানো সম্ভব।     

শনিবার রাজধানীর পুরানা পল্টনে ‘বৈষম্য মোকাবেলা ও রাজস্ব আয় বৃদ্ধিতে প্রত্যক্ষকর প্রয়োগ’ শীর্ষক সেমিনারে এমন তথ্য তুলে ধরে গবেষণা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্ট (র‌্যাপিড)। র‌্যাপিড এবং ইকোনমিক রিপোটার্স ফোরাম (ইআরএফ) যৌথভাবে সেমিনারের আয়োজন করে। 

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন র‌্যাপিড চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুর রাজ্জাক। 

তিনি বলেন, বাংলাদেশের কর জিডিপি অনুপাত ৯ শতাংশ, যা সারা বিশ্বে সর্বনিম্ন। এর বড় কারণ প্রত্যক্ষকর অনেক কম। এটা বাড়াতে হবে। বর্তমানে পরোক্ষকর ৬৫ শতাংশ এবং প্রত্যক্ষকর ৩৫ শতাংশ। তবে সরকার আগামী দিনে প্রত্যক্ষকর ৭০ শতাংশ ও পরোক্ষকর ৩০ শতাংশে আনার যে উদ্যোগ নিয়েছে- সেটি সঠিক সিদ্ধান্ত। তিনি বলেন, বাংলাদেশে প্রধানতম দুটি সমস্যা ক্রমবর্ধমান বৈষম্য এবং সরকারি ব্যয় জিডিপির অংশ হিসাবে অনেক কম। এর বড় কারণ প্রত্যক্ষকর কম। যদিও টাকার অংকে প্রত্যক্ষকর আগের চেয়ে বেড়েছে। তবে জিডিপির অনুপাতে ও পরিমানের দিক থেকে বিশ্বের অনেক দেশের তুলনায় অনেক কম। 

র‌্যাপিড চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের উচ্চ প্রবৃদ্ধি ও উন্নত দেশে যেতে হলে জিডিপির অনুপাতে রাজস্ব আয় ২০৩০ সালের মধ্যে ১৭ শতাংশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ২১ শতাংশ করতে হবে। আর এর উল্লেখযোগ্য অংশ প্রত্যক্ষকর থেকে আসতে হবে। বর্তমানে কর নেট অনেক কম। টিআইনধারীর সংখ্যা ৭.৬ মিলিয়ন হলেও রিটার্ন দাখিলকারির সংখ্যা মাত্র ২.৪ মিলিয়ন। 

তিনি বলেন, করের আওতা বাড়ানোর এমন একটি পদ্ধতি আনতে হবে- যেটা দিয়ে আয় বাড়াবে। যেমন বিশে^র অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশে সোস্যাল ইন্সুরেন্স নাম্বার চালু করলে, আয়-ব্যয়সহ করের হিসাব রাখা সহজ হবে। এতে কর আহরণ বৃদ্ধি পাবে।  

রাজ্জাক বলেন, যাদের কর দেওয়ার ক্ষমতা আছে তারা কম দেন। সরকার অনেক খাত থেকে কর পাচ্ছে না। অপ্রচলিত খাতে প্রায় ৮০ ভাগ জনশক্তি কাজ করে। এসব খাত থেকে প্রত্যক্ষকর বাড়াতে পারলে বৈষম্য দূর করতে পারবে সরকার। এছাড়াও অনেক খাতেই কর অব্যহতি দেওয়া আছে। এসব অব্যহতির তেমন কাজে আসছে না। এসব অব্যহতি তুলে দিয়ে রাজস্ব আয় বাড়িয়ে বৈষম্য কমাতে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক খাতে ব্যয় বাড়ানো যাবে। তিনি করনীতি ও কর প্রশাসন আলাদা করার সুপারিশ করেন। করনীতি বিভাগকে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।  

এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ড. নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রত্যক্ষ কর বাড়ানো উচিত। তবে ৭০ শতাংশ প্রত্যক্ষকর বৃদ্ধি উচ্চাভিলাষী লক্ষ্য। এই লক্ষ্য বাস্তবায়নের নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ করা প্রয়োজন। কারণ এনবিআরের কাঠামোগত সমস্যা রয়েছে। রাজনৈতিক অর্থনীতির কারণে এনবিআর রাজস্ব আয়ে পিছিয়ে আছে। রাজস্ব আয় বাড়াতে এখন বড় বাধা রাজনৈতিক অর্থনীতি। কারণ অনেক খাতেই কর অবকাশ সুবিধা দিতে হচ্ছে। বিশেষ কর হার আরোপ করতে হচ্ছে। 

অর্থমন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কবিরুল ইয়াজদানী বলেন, জিডিপির তুলনায় বাজেট ছোট। এর পরেও রাজস্ব আয় কম থাকায় বাজেটের ঘাটতি মেটাতে সরকারকে দেশি-বিদেশি উৎস থেকে ঋণ নিতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, আবাসন খাত এবং ফেসবুক, আমাজন ও ফুডপান্ডার মতো নতুন ব্যবসার প্রসার হচ্ছে- সেখান থেকেও সরকার কাক্সিক্ষত করা পায় না। এর জন্য করনীতি সংস্কার করতে হবে।     

অর্থমন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, প্রত্যক্ষকর বাড়াতে জনসচেতনতা তৈরি করতে হবে। অফিস কক্ষে বসে মানুষের মধ্যে ভয়ভীতি সৃষ্টি না করে জনগনের কাছে যেতে হবে- যাতে তারা কর দিতে উৎসাহী হয়। তাদেরকে বোঝাতে হবে যে- কর না দিলে সরকারি সুযোগ সুবিধা বন্ধ হয়ে যাবে। 

র‌্যাপিডের নির্বাহী পরিচালক ড. এম আবু ইউসুফের সঞ্চালনায় সেমিনারে অংশ নেন এনবিআরের সদস্য মাহমুদুর রহমান, ইআরএফ সভাপতি শারমিন রিনভী ও সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলাম। তথ্য সূত্র বাসস।