News update
  • Muslim League leads new electoral alliance, Jatiya Muslim Jote     |     
  • Tk 500cr Drive to Turn Haor Fallow Land Into Farmland     |     
  • Tarique Rahman returns home amid rapturous reception     |     
  • Home After 17 Years: Tarique Returns to Gulshan Residence     |     
  • Tarique Calls for United Effort to Build a Safe Bangladesh     |     

বৈরুতে এক রাতে ৩০ দফা হামলা, সর্বাত্মক যুদ্ধের শঙ্কা

সংঘাত 2024-10-06, 10:12pm

ertertert-8d3707975628bf503a1cf408ee0f637b1728231147.jpg




মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই লেবাননের রাজধানী বৈরুতে রাতভর হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। সারা রাতে প্রায় ৩০ দফা বিমান হামলা চালায় দেশটি। পুরো বৈরুতজুড়ে শোনা গেছে এই হামলার শব্দ। এদিকে ইসরায়েলে আরও বড় ধরনের হামলার প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে ইরান। এ অবস্থায় সর্বাত্মক যুদ্ধের আশঙ্কা ছড়িয়ে পড়েছে পুরো মধ্যপ্রাচ্যে, যা পরবর্তীতে অস্থিতিশীল অবস্থা সৃষ্টি করতে পারে বিশ্ব জুড়ে।

এমন ইঙ্গিত মিলেছে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রতিরক্ষা সচিব ও সিআইএর সাবেক প্রধান লিওন প্যানেটার বক্তব্যেও। সম্প্রতি এমএসএনবিসি রিপোর্টস-এ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি ইঙ্গিত দেন, যদি ইসরায়েল তাদের আক্রমণের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়, তবে যুদ্ধের পুরো মাত্রায় রূপ নেওয়া সময়ের ব্যাপার মাত্র।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক কৌশল নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে প্যানেটা বলেন, এটি বোঝা কঠিন হয়ে পড়েছে যে, ইসরায়েলের বর্তমান সরকার আসলে কী চায়। গত ৭০ বছরে ইসরায়েল সামরিকভাবে কখনোই তাদের সব লক্ষ্য অর্জন করতে পারেনি এবং এই ধারা চলমান থাকলে ভবিষ্যতের সামরিক পদক্ষেপগুলোও প্রভাবিত হতে পারে।

সবশেষ রোববারের (৬ অক্টোবর) হামলার রাতটিকে ইসরায়েলের আগ্রাসন শুরুর পর বৈরুতের সবচেয়ে সহিংস রাত হিসেবে আখ্যায়িত করেছে লেবাননের জাতীয় সংবাদ সংস্থা এনএনএ।

আল জাজিরা বলছে, ইসরায়েলের হামলায় বৈরুতের দক্ষিণের শহরতলি পুরোটা কালো ধোঁয়ার চাদরে ঢেকে গেছে। তবে হামলায় হতাহতের বিষয়ে এখনো কোনো তথ্য জানা যায়নি।

জানা গেছে, লেবাননের সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহর ঘাঁটি হিসেবে বিবেচিত বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলটি। এ কারণেই সেখানে হামলার মাত্রা বাড়িয়েছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। গত সপ্তাহেই এ অঞ্চলে হামলা চালিয়ে হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরুল্লাহকে হত্যা করে আইডিএফ সেনারা। পরবর্তীতে গত বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) রাতে তার সম্ভাব্য উত্তরসূরি হাশেম সাফিএদ্দিনের ওপরও হামলা চালায় ইসরায়েল। এরপর থেকেই যোগাযোগ করা যাচ্ছে না সাফিএদ্দিনের সঙ্গে

ইসরায়েলের তিন কর্মকর্তার বরাতে মার্কিন গণমাধ্যম অ্যাক্সিওস জানায়, গত বৃহস্পতিবার শেষ রাতে বৈরুতের দক্ষিণের শহরতলিতে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছিল ইসরায়েল। হাশেম সাফিএদ্দিনের অবস্থান লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয়েছিল। সেখানে তিনি ভূগর্ভস্থ একটি বাংকারে ছিলেন।

এদিকে গত মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) দখলদার ইসরায়েলের সামরিক অবকাঠামো লক্ষ্য করে ১৮১টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার পর এবার আরও বড় হামলার প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে ইরান।

বার্তাসংস্থা তাসনিম নিউজকে নাম গোপন রাখার শর্তে এক ইরানি কর্মকর্তা বলেছেন, ইহুদিবাদীদের (ইসরায়েল) সম্ভাব্য হামলার প্রয়োজনীয় জবাব সম্পূর্ণ প্রস্তুত আছে। যদি ইসরায়েল হামলা চালায়, কোনো সন্দেহ নেই ইরান পাল্টা হামলা চালাবে।

তিনি আরও জানান, ইরানের কাছে ইসরায়েলি টার্গেটের তালিকা আছে। গত মঙ্গলবার যে হামলা চালানো হয়েছে, তাতেই প্রমাণ হয়ে গেছে, ইরান চাইলে যেখানে ইচ্ছা সেখানে পৌঁছাতে পারে।

অবশ্য ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমেও দাবি করা হয়েছে, মিসাইল হামলার জবাব দিতে ইরানে ব্যাপক ও বড় হামলা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে দখলদার ইসরায়েলের সেনাবাহিনী।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, হামাসের হামলার প্রায় এক বছর পেরিয়ে ইসরায়েল বর্তমানে সাতটি ফ্রন্টে যুদ্ধ করছে। এই সাতটি ফ্রন্টের মধ্যে রয়েছে উত্তর সীমান্তে ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহ, গাজায় হামাস, ইয়েমেনে হুথি বিদ্রোহীরা, পশ্চিম তীরের ‘সন্ত্রাসী’ গোষ্ঠীগুলো এবং ইরাক ও সিরিয়ায় শিয়া জঙ্গিরা।

তিনি দাবি করেন, আমরা ইরানের বিরুদ্ধেও যুদ্ধ করছি। গত সপ্তাহে ইসরায়েলে প্রায় ২০০টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে তারা।

লেবাননে হামলা প্রসঙ্গে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত বছরের ৮ অক্টোবর থেকে হিজবুল্লাহ প্রায় দেড় হাজার হামলা চালিয়েছে ইসরায়ালে। বিপরীতে লেবাননের ভেতরে প্রায় ৯ হাজার হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।

গাজা প্রসঙ্গে নেতানিয়াহু বলেন, ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার আছে এবং আমরা ১০১ জন জিম্মিকে ভুলিনি। তাদের ফিরিয়ে আনতে আমরা আমাদের সব শক্তি দিয়ে চেষ্টা করব।

শুধু তাই নয়, ইসরায়েলের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জানানোয় ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁসহ অন্য দেশগুলোর কঠোর সমালোচনা করেছেন নেতানিয়াহু। সেইসঙ্গে বলেছেন, ইসরায়েল শেষ পর্যন্ত লড়াই করবে— আমাদের নিজেদের জন্য এবং বিশ্বব্যাপী শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের এক বছরের আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত ৪১ হাজার ৮২৫ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন গাজায়।

আর লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত এক মাসে ইসরায়েলি হামলায় লেবাননে ১ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছে প্রায় সাড়ে সাত হাজার।