যুদ্ধবিরতি উপেক্ষা করে পবিত্র রমজানে গাজায় ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। দখলদারদের এমন নৃশংসতায় এখন পর্যন্ত ২০০ শিশুসহ ৫০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ভয়াবহ এই হামলার জবাবে এবার ইসরায়ালে হামলা চালিয়েছে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস।
বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানায়, হামলার ঘটনায় তেল আবিবের বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরে বিমান চলাচলও ব্যাহত হয়েছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানায়, গাজা উপত্যকা থেকে রকেট নিক্ষেপের পর সতর্কতামূলক সাইরেন বেজে ওঠে। দক্ষিণ গাজা থেকে আসা তিনটি রকেটের মধ্যে একটি ভূপাতিত করেছে এবং অন্য দুটি খোলা জায়গায় পড়েছে। কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
হামাসের সশস্ত্র শাখা কাসাম ব্রিগেডস এক বিবৃতিতে বলেছে, গাজার বেসামরিক নাগরিকদের ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিশোধে তেল আবিবে এই রকেট নিক্ষেপ করা হয়েছে।
এর আগে, তেল আবিবের বেন গুরিয়ন বিমানবন্দর লক্ষ্য করে একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ইয়েমেনের হুতিরা। যদিও ক্ষেপণাস্ত্রটি ধ্বংস করার দাবি করেছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরামর্শে যুদ্ধবিরতি উপেক্ষা করে গত ১৮ মার্চ ভোরে গাজায় ভয়াবহ বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। সেহরির সময় দখলদারদের এই হামলার ভয়াবহতা ফুটে উঠে ভোর পেরিয়ে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে। বিভিন্ন গণমাধ্যম ও নিউজফিডে রক্তাক্ত-মৃত-আহত নারী ও শিশুদের লাশের ছবি ও ভিডিওতে ছেয়ে যেতে থাকে।
নৃশংস এমন তাণ্ডব চালানোর পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় হামাসের বিরুদ্ধে পূর্ণশক্তিতে যুদ্ধ আবার শুরু করেছে ইসরায়েল। এটা কেবল শুরু।
জাতিসংঘে নিযুক্ত ইসরাইলের রাষ্ট্রদূত হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, আমরা আমাদের শত্রুদের প্রতি কোনো দয়া দেখাব না। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমাদের সব জিম্মির বাড়ি ফিরে না আসা পর্যন্ত ইসরায়েল থামবে না।
এদিকে, আরব ও মুসলিম দেশগুলোর জনগণ এবং বিশ্বের মুক্ত মানুষকে গাজায় ইসরায়েলের বিধ্বংসী হামলার প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসার আহ্বান জানিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন হামলার পর থেকে গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৫০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন লাখেরও বেশি মানুষ।
এ ছাড়া দখলদারদের হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েলি আগ্রাসনে লাখ লাখ বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।আরটিভি