News update
  • Bangladesh Army takes 15 officers into custody     |     
  • DUCSU wants trial of all involved in enforced disappearances, killings     |     
  • ICT to Hear Hasina Crimes Against Humanity Case     |     
  • Army Detains 15 Officers Over War Crimes Warrants     |     
  • Machado dared to imagine a better world, worked tirelessly: Prof Yunus     |     

ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব আবার আলোচনার টেবিলে

বিবিসি সংঘাত 2025-03-30, 2:40pm

rt43534534sfrwe-35685a3171f6f3a9d7e230203edf25c41743324025.jpg




ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি পুনরায় কার্যকর করতে নতুন করে দর কষাকষি শুরু হয়েছে।

পাঁচ জন জিম্মির মুক্তির বিনিময়ে ৫০ দিনের যুদ্ধবিরতির একটি প্রস্তাবে সমর্থন জানানোর কথা বলছে ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠীটি।

কাতার ও মিশরের মধ্যস্ততাকারীদের তরফে দেওয়া এই প্রস্তাব অনুমোদনের কথা জানিয়েছেন, গাজার বাইরে হামাসের সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ নেতা খলিল আল-হায়াম।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকেও প্রস্তাবটি পাওয়ার কথা বলা হয়েছে।

তবে, "যুক্তরাষ্ট্রের সাথে পূর্ণ সমন্বয়ের মাধ্যমে মধ্যস্থতাকারীদের কাছে একটি পাল্টা প্রস্তাব" দিয়েছে তারা।

যদি উভয় পক্ষ প্রস্তাবে ঐক্যমতে পৌঁছুতে পারে, তাহলে এই নতুন সীমিত পরিসরের যুদ্ধবিরতি চুক্তিটি ঈদুল ফিতরের সময়ই কার্যকর হতে পারে।

শনিবার নেতানিয়াহুর কার্যালয় জানিয়েছে, মধ্যস্থতাকারীদের কাছ থেকে পাওয়া যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করেছেন তিনি।

আরো জানানো হয়, পাল্টা প্রস্তাবটি যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ঐকমত্যের ভিত্তিতে দিয়েছে ইসরায়েল। যদিও এর বিস্তারিত প্রকাশ করেনি নেতানিয়াহুর কার্যালয়।

যুক্তরাষ্ট্রও এই ইস্যুতে এখনো প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করেনি।

এই প্রস্তাবটি এমন সময়ে এসেছে যখন, প্রথম দফার যুদ্ধবিরতি শেষে ইসরায়েলি বাহিনী রাফায় স্থল অভিযান শুরু করেছে। এছাড়া, গাজা উপত্যকায় বিমান হামলাও অব্যাহত রেখেছে তারা।

গত ১৯শে জানুয়ারি থেকে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি মার্চের প্রথম দিকে শেষ হয়।

প্রথম দফা শেষ হওয়ার পর উভয় পক্ষ আর দ্বিতীয় দফার ব্যাপারে ঐকমত্যে পৌঁছুতে পারেনি।

ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠীটির কাছে এখনও ৫৯ জন জিম্মি রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও তাদের সবাই জীবিত আছেন কী না তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।

এর আগে, হামাস মূল চুক্তিতে অটল থাকার কথা বলেছিল।

তাতে বলা ছিল, দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনার শুরুর জন্য গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনী সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করতে হবে এবং যুদ্ধ বন্ধের বিনিময়ে বাকি সব জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে।

কিন্তু সেই আলোচনা আর শুরু হয়নি।

তার পরিবর্তে, ইসরায়েল এবং যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল যুদ্ধবিরতির প্রথম পর্যায়ের মেয়াদ বাড়ানো উচিত। প্রথম পর্যায় শেষ হয়েছে মাসখানেক আগে।

এই প্রস্তাবে যুদ্ধ শেষ হওয়ার কোনও স্পষ্ট নিশ্চয়তাও ছিল না।

মেয়াদ বৃদ্ধির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের জন্য হামাসকে দায়ী করে ১৮ই মার্চ গাজায় পুনরায় সামরিক হামলা শুরু করে ইসরায়েল।

এরপর থেকে গত কয়েকদিনের বিমান হামলায় নয়শোর বেশি মানুষ নিহত হওয়ার কথা বলছে হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

এদিকে, স্বজনদের অভিযোগ, যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে নেতানিয়াহু জিম্মিদের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিয়েছেন।

হামাসের পোস্ট করা একটি নতুন ভিডিওতে এলকানা বোহবোট নামে একজন জিম্মিকে দেখা গেছে।

ভিডিওতে নিজের মুক্তির জন্য প্রার্থনা করতে দেখা যায় মি. বোহবটকে।

হামাসের হাত থেকে এখনো উদ্ধার না হওয়া ৫৯ জন জিম্মির মধ্যে ২৪ জন জীবিত বলে ধারণা ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের।

যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে এর আগে ইসরায়েলি জিম্মি এবং ফিলিস্তিনি বন্দি বিনিময় করা হয়।

প্রথম পর্যায়ে, হামাস প্রায় ১৮০০ ফিলিস্তিনি বন্দির বিনিময়ে প্রথমে ২৫ জন ও পরে আরও আটজন জীবিত ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেয়।

অন্যদিকে, ইসরায়েল গাজার জনবহুল এলাকা থেকে সেনা প্রত্যাহার করে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের তাদের এলাকায় ফিরে যেতে দেয়।

তবে, চুক্তিকে কীভাবে পরের ধাপে এগিয়ে নেওয়া যায় এ নিয়ে ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে মতবিরোধের কারণেই যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা এখনো থমকে আছে।

গত ১৯ শে জানুয়ারি শুরু হওয়া যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে তিনটি ধাপের কথা বলা হয়েছিল।

তিন ধাপের মধ্যে দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা ছয় সপ্তাহ আগে শুরু হওয়ার কথা ছিল, যা এখনো হয়নি।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েল প্রথম পর্যায়ের মেয়াদ বাড়িয়ে আরও জিম্মিদের মুক্তি দিতে চুক্তির কিছু শর্ত পরিবর্তন করতে চেয়েছিল।

চুক্তির দ্বিতীয় ধাপের উদ্দেশ্য ছিল স্থায়ী যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠা করা এবং গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনাদের প্রত্যাহার করা।

কিন্তু হামাস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কাতার এবং মিশরীয় মধ্যস্থতাকারীদের মধ্যস্থতায় এই প্রস্তাবিত চুক্তির পরিবর্তনকে প্রত্যাখ্যান করে, এটিকে অগ্রহণযোগ্য বলে উল্লেখ করে।

গত সপ্তাহে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে লেবাননে একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।

এর আগে লেবানন থেকে ইসরায়েলে বেশ কয়েকটি রকেট নিক্ষেপ করা হয়। যার জবাবে পাল্টা হামলা চালায় ইসরায়েল।

২০২৩ সালে সাতই অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস।

দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে ওই হামলায় বারোশো জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়। তাদের বেশিরভাগই ছিল বেসামরিক নাগরিক।

ওই সময় ২৫১ জন ইসরায়েলিকে জিম্মি করা হয়েছিল।

হামাসের ওই হামলার জবাবে গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েল।

ইসরায়েলের হামলায় এ পর্যন্ত ৫০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে বলে জানায় হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

গাজার ২১ লাখ জনসংখ্যার বেশিরভাগকেই একাধিকবার বাস্তুচ্যুত হতে হয়েছে।

আনুমানিক ৭০ শতাংশ ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছে।

স্বাস্থ্যসেবা, পানি ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। খাদ্য, জ্বালানি, ওষুধ ও আশ্রয়ের অভাবেও ভুগতে হচ্ছে গাজার বাসিন্দাদের।