পারমাণবিক ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া প্রস্তাব প্রত্যাখান করে পাল্টা প্রস্তাব দিতে যাচ্ছে ইরান। ওমানের মাধ্যমে হোয়াইট হাউসে একটি যুক্তিসঙ্গত ও ভারসাম্যপূর্ণ প্রস্তাবনা পাঠানোর কথা জানিয়েছে দেশটি। আলোচনায় আগ্রহী হলে ওয়াশিংটন এ প্রস্তাবে সম্মত হবে বলে জানিয়েছে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
সোমবার (৯ জুন) ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাঘাই বলেন, ওমানের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রকে শিগগিরই একটি লিখিত পাল্টা প্রস্তাব দেবে তেহরান।
নতুন পরমাণু চুক্তির লক্ষ্যে চলমান আলোচনার ধারাবাহিকতায় গত ৩১ মে ইরানকে পরমাণু চুক্তির লিখিত প্রস্তাব দেয় যুক্তরাষ্ট্র। প্রস্তাবে ট্রাম্প প্রশাসনের প্রধান দাবি, ইরানকে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ পুরোপুরি বন্ধ করতে হবে। যে দাবি শুরু থেকেই নাকচ করে আসছে তেহরান।
ইরানের অভিযোগ, মার্কিন প্রস্তাবে পারস্পরিক সমঝোতার কোনো ছাপ নেই। এটি একতরফাভাবে চাপ প্রয়োগের চেষ্টা বলে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক শক্তি উৎপাদনের অধিকার থেকে কখনও সরে আসবে না ইরান। ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ইরানের বৈজ্ঞানিক অগ্রগতির পরিচয়বাহক বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আন্তর্জাতিক আণবিক সংস্থা বা আএইএ-এর এনপিটি চুক্তির ৪ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী এই সমৃদ্ধকরণের অধিকার তাদের আছে বলে দাবি করা হয়।
ট্রাম্পও স্বীকার করেছেন, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ চালিয়ে যেতে দেয়া হবে কিনা তা নিয়ে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে।সোমবার হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘তারা (ইরান) এমন জিনিস করতে চাইছে যা আমরা করতে দিতে পারি না। ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ চালিয়ে যেতে চায়, এটা ত্যাগ করতে হবে। আমরা সমৃদ্ধকরণ করতে দিতে পারি না।’
ট্রাম্প বলেছেন, দুই দেশের মধ্যে ষষ্ঠ দফার বৈঠক আগামী বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হবে। তবে ইরানি ও মার্কিন কর্মকর্তারা বলেছেন, বৃহস্পতিবারে আলোচনার সম্ভাবনা কম।
মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ ও ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচির নেতৃত্বে আগামী শুক্রবার বা রোববার ওমান বা নরওয়েতে বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে, আইএইএ’র বোর্ড অব গভর্নর্সের বৈঠকে ইরানের বিরুদ্ধে একটি প্রস্তাব গৃহীত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সংস্থাটির এক সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে ইরানের একাধিক গোপন স্থানে ঘোষণা ছাড়াই পারমাণবিক কার্যক্রম পরিচালনার অভিযোগ আনা হয়েছে।
এমন অবস্থায় পাল্টা জবাব দেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইরান। দেশটির পারমাণবিক শক্তি সংস্থার প্রধান মোহাম্মদ ইসলামী বলেন, সংস্থাটি একতরফাভাবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবে কাজ করছে এবং বিশ্বাসযোগ্যতা হারাচ্ছে।