ঢাকাই সিনেমার এক সময়ের জনপ্রিয় অভিনেতা বাপ্পারাজ। ক্যারিয়ারে অসংখ্য রোমান্টিক সিনেমা দর্শকদের উপহার দিয়েছেন তিনি। তবে দর্শকের কাছে অভিনেতা বাপ্পারাজ মানেই ব্যর্থ প্রেম বা ট্র্যাজেডির গল্প! অর্থাৎ ত্রিভুজ প্রেম বা স্যাক্রিফাইসের গল্প নির্ভর সিনেমাগুলোর কারণে আজও এই নায়ক বেশ জনপ্রিয়!
‘প্রেমের সমাধি’ সিনেমায় বাপ্পারাজের সেই বিরহের সংলাপ ও দৃশ্য এখনও উপভোগ করেন নেটিজেনরা। সম্প্রতি সেই ছবির একটি সংলাপ ‘চাচা হেনা কোথায়?’ ব্যাপক ভাইরাল হয়েছে। সে থেকে এখন আবার আলোচনায় এই নায়ক।
এদিকে, কিছুদিন আগেও হঠাৎই একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ‘প্রেমের সমাধি’ সিনেমার বকুল চরিত্রের অভিনেতা বাপ্পারাজ হেনার খোঁজে টাঙ্গাইলে। সিনেমার মতোই দৌড়ে এসে বাপ্পারাজ নাঈমের সামনে দাঁড়ান, এই অভিনেতার মুখে শোনা যায়, ‘নাঈম ভাই, হেনা কোথায়?
নাঈম বলেন, হেনার সঙ্গে অনেক আগেই আমার বিয়ে হয়ে গেছে। ‘না’ বলে বাপ্পারাজকে জড়িয়ে ধরেন সান্ত্বনা দেন নাঈম। পরে দেখা যায়, গান গাইতে গাইতে হেনা চরিত্রের শাবনাজ হাজির। মজা করে মুঠোফোনের ক্যামেরার ধারণ করা এই ভিডিও আবার ভাইরাল হয়।
এসব মজার ঘটনা নিয়েই সম্প্রতি কথা বলেন নাঈম। এই অভিনেতা বলেন,‘বাপ্পা, ওমর সানীসহ আমাদের সেই সময়ের সবার সঙ্গে নিয়মিতই দেখা হয়, আড্ডা হয়। এবার যখন বাপ্পাসহ আরও অনেকে টাঙ্গাইলে আমাদের গ্রামের বাড়িতে আসেন, তখন যথারীতি আমাদের গ্রামের বাড়ির বাগানে চা খাচ্ছিলাম, মজা করছিলাম। ওমর সানী পেছন থেকে ভিডিও করছিল। সব সময়ই নানা মজার ঘটনা ঘটে। আড্ডার মাঝে আমার মেয়ে নামিরা জানায়, বাপ্পা আর আমাকে একটা অনুরোধ রাখতে হবে। মেয়ের আবদার তো রাখতেই হবে। বাপ্পা তখন জানতে চায়, কী মা বলো?
নাঈম বলেন, বাপ্পা তখন জানতেন না কী হতে যাচ্ছে। পরে নামিরার কাছে সব শুনে, সবার তো চোখ কপালে। হেনার যে অংশ ভাইরাল হয়েছে, সেই অংশ অন্যভাবে অভিনয় করে দেখাতে হবে। এখানে এবার নাঈমকেও থাকতে হবে। এই ভাইরালের যুগে এসব করলে মানুষ কি বলবে। সেই ভাবনা সবার মাথায় ছিল। মেয়ের কথা রাখতে গিয়েই, ভিডিওতে অংশ নিলাম। ওরাই সব ঠিক করল। আমাকে গাছের সঙ্গে হেলিয়ে তারা দাঁড় করিয়ে দিল। পরে আমার কাছে দৌড়ে বাপ্পা আসে। ডায়ালগ দিতে হয়। সেটা আপনারা ভিডিওতে দেখেছেন। মেয়ের ইচ্ছা পূরণ করতে বাপ্পাকে জড়িয়ে ধরি, শাবনাজ এসে নাচে। এটাও পরে দেখি ভাইরাল। আমরা ইচ্ছা করে ভাইরাল করব এমন চিন্তা ছিল না। অল্প সময়েই মধ্যেই ভিডিও করা। তবে বুঝতে পেরেছি দর্শকেরা এখনো আমাদের ভালোবাসেন। তাদের কাছে কৃতজ্ঞতা।
নাঈদের কথায়, একটা সিনেমা তো একজন বানায় না। নির্মাতা, শিল্পী, কলাকুশলীদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় একটা ভালো সিনেমা নির্মাণ হয়। আজ থেকে ২৮ বছর আগের সিনেমার একটি ডায়লগ যে এভাবে ছড়িয়ে পড়তে পারে সেটা আমাদের কারও জানা ছিল না। এটা শুধু বাংলা দেশে না, অভিনেতা গাব্বার সিং, শাহরুখ খানসহ অনেক অভিনেতা ডায়লগ কমবেশি সবাই আমরা জানি। একটি ডায়ালগ দিয়ে পুরনো একটি ছবি নতুন প্রজন্মের কাছ পরিচিত অর্জন করেছে। ভালোলাগার বিষয় হল- ‘প্রেমের সমাধি’ সিনেমার ‘হেনা কোথায়’ নিয়ে বাপ্পারাজ ও শাবনাজের সিনেমার যেভাবে প্রচার ঘটেছে তা অবশ্যই প্রসংশার দাবিদার। আমি মনে করে তারাই প্রকৃতশিল্পী।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৬ সালে মুক্তি পায় ‘প্রেমের সমাধি’ সিনেমা। ওই সময় সিনেমাটি ব্যাপক সাড়া ফেলে দর্শকমহলে। একইসঙ্গে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন চিত্রনায়ক বাপ্পারাজ ও চিত্রনায়িকা শাবনাজ। অন্যান্য চরিত্রে আরও অভিনয় করেছিলেন অমিত হাসান ও এটিএম শামসুজ্জামান। আরটিভি/