ঝিনাইদহে ডাকবাংলা নাসিং হোম এন্ড নূরহাজান ডায়াগনোষ্টিক সেন্টার ( কাজল ক্লিনিক) কে রোগীর মৃত্যুতে মাত্র ৪০ হাজার টাকায় মিমাংসার অভিযোগ উঠেছে। ঝিনাইদহের ১নং সাধুহাটি ইউনিয়নের পুতাহাটি গ্রামে মোঃ লিটন হোসেনের স্ত্রী ছালমা বেগমের মৃত্যুর ঘটনায় বিষয়টি ধামাচাপা দিতে টাকা লেনদেনের অভিযোগ পাওয়া গেছে ওই ক্লিনিক মালিকের বিরুদ্ধে।
বুধবার ( ২৪ মে) সকালে ডাকবাংলা নাসিং হোম এন্ড নূরহাজান ডায়াগনোষ্টিক সেন্টার ( কাজল ক্লিনিক) এ চিকিৎসা নিতে গিয়ে মারা যাওয়ায় ক্লিনিকের মালিক ওই পরিবারের সাথে ৪০ হাজার টাকায় রফাদফা করেন।
মৃত ছালমা বেগমের স্বামী লিটন জানান, গত ১২ মে ডাকবাংলা নাসিং হোম ক্লিনিকে তার স্ত্রীকে অপারেশনের (সিজার) মাধ্যমে পুত্র সন্তান হয়েছিল। অপারেশনের ৭দিন পর সেলাই খোলা হয়। তখন থেকেই ক্ষতস্থানে রক্ত আসছিলো। এরপর বুধবার (২৩ মে) মধ্যরাত হতে তার স্ত্রীর জরায়ু হতে রক্ত ক্ষরণ হতে থাকে। এসময় ভোর সকালে আবারো ওই ক্লিনিকে নিয়ে যান চিকিৎসার জন্য। তখন কর্তব্যরত ডাক্তার তার স্ত্রীকে ইনজেকশন পুশ করলে কিছুক্ষণের মধ্যেই মারা যান।
তিনি অভিযোগ করেন, ডাক্তার পেটের ভিতরটা ভালোভাবে পরিস্কার না করেই পেট শেলাই করে দিয়েছে। ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় তার স্ত্রী মারা গেছেন। তবে মারা যাবার কারনে ওই ক্লিনিকের মালিকের থেকে টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করেন নি তিনি।
এলাকাবাসির সূত্রে জানা যায়, ক্লিনিকের মালিক আসাদুজ্জামান কাজল ওই রোগীর মৃত্যুর ঘটনার বিষয়টি ধামা চাপা দিতে রোগীর পরিবারকে ৪০ হাজার টাকা দিয়েছেন। এসময় স্থানীয় প্রভাবশালীদের মাধ্যমে ওই টাকা লেনদেন হয়েছে বলেও অভিযোগ ওঠে।
ডাকবাংলা নাসিং হোম এন্ড নূরহাজান ডায়াগনোষ্টিক সেন্টার (কাজল ক্লিনিক) এর মালিক আসাদুজ্জামান কাজল বলেন, ছালমা বেগমের ১০/১২ দিন আগে আমাদের ক্লিনিকে অপারেশনের মাধ্যমে ছেলে বাচ্চা হয়। কিছুদিন ক্লিনিকে থাকার পর বাচ্চা ও তিনি সুস্থ অবস্থায় বাড়ি চলে যান। এরপর তিনি সুস্থ শরীরে আবারো ক্লিনিকে আসেন সেলাই কাটার জন্য। কিন্তু হঠাৎ আজ (বুধবার) ভোর সকালে রক্তক্ষরণ অবস্থায় তার স্বামী ক্লিনিকে নিয়ে আসে। তার অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ দেখে আমরা দ্রুত রক্তের ব্যবস্থা করতে বলি। এছাড়াও রোগীর শরীর থেকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হবার কারনে কোন হাটবিট পাচ্ছিলাম না। আমাদের স্টকে রক্ত না থাকাই, রোগীর স্বজনদের রক্ত সংগ্রহ করতে বলি। কিন্তু রোগীর স্বজনেরা রক্ত সংগ্রহ করে আনার আগেই রোগীটি মারা যান।
১নং সাধুহাটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কাজী নাজির উদ্দীন বলেন, ঘটনাস্থলে গিয়ে জানতে পারি, লিটনের স্ত্রী গত ১২ দিন আগে অপারেশনের (সিজার) মাধ্যমে তিন মেয়ের পর একটি ছেলে সন্তান হয়েছে। গত রাতে ওই মহিলার রক্তক্ষরণ হতে থাকে। এরপর ডাকবাংলা নাসিং হোক এন্ড নূরহাজান ডায়াগনোষ্টিক সেন্টার (কাজল ক্লিনিক)’এ নিয়ে যায়। ওখানে নিয়ে যাবার পর চিকিৎসা রত অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
তিনি আরো বলেন, সেবা মূলক হাসপাতাল বা ক্লিনিক গুলোতে অপেশাদার ডাক্তাদের কারনে রোগী মৃত্যুর হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। ওই ক্লিনিকের বিরুদ্ধে এর আগেও অনেক অভিযোগ উঠেছিল। তবে ক্লিনিকের মালিকের সাথে লাশ বিক্রয় বা টাকা লেনদেনের বিষয়টি আমি জানিনা।