News update
  • France to Break Away from UK & US in Recognising Palestine as Nation State     |     
  • Storm Alert Issued for Dhaka and Eight Other Regions     |     
  • 58 killed in deadliest US strike on Yemen     |     
  • BNP Opposes Reforms to Constitution’s Core Principles      |     
  • Time to Repair Bangladesh–Pakistan Ties     |     

ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে বাংলাদেশ ব্যাংক 

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক অর্থনীতি 2024-03-13, 11:26am

gteteryer-f6eb4214c0efe8d6bb5f570486e58e271710307617.jpg




ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপের পদক্ষেপ নেওয়া হবে এই শ্রেণির খেলাপিদের জন্য। সেইসঙ্গে তাদের ট্রেড লাইসেন্স পাওয়ার ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা আরোপের পদক্ষেপ নিবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এমনকি ঋণ খেলাপিদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের বিরুদ্ধেও নেওয়া হবে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা।

মঙ্গলবার (১২ মার্চ) বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করে বিভিন্ন তফসিলি ব্যাংকে পাঠানো হয়েছে। সেখানে ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপিদের সংজ্ঞায়িত করার পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বেশ কয়েকটি নির্দেশনা যুক্ত করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

ইচ্ছাকৃত খেলাপি কে?

সার্কুলারে বলা হয়, কোনো ঋণ গ্রহীতা ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি নিজের, তার পরিবারের সদস্যের, স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানির অনুকূলে কোনও ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে গৃহীত ঋণ, অগ্রিম, বিনিয়োগ বা আরোপিত সুদ বা মুনাফা তার সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও পরিশোধ করে না করলে তিনি ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপি হিসেবে বিবেচিত হবেন।

এছাড়া জালিয়াতি, প্রতারণা বা মিথ্যা তথ্য প্রদানের মাধ্যমে বা যে উদ্দেশ্যে নেওয়া হয়েছে সে সে উদ্দেশ্য ব্যতীত অন্য কোনো খাতে ব্যবহার করলে অথবা অন্য কোন ব্যাংকের জামানতকৃত সম্পদ অনুমতি ছাড়া নতুন ঋণে জামানত হিসেবে দেখালেও তা ইচ্ছাকৃত খেলাপি হিসেবে বিবেচিত হবে।

যেভাবে চিহ্নিত করা হবে ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণ

সার্কুলারের নির্দেশনা অনুযায়ী, ইচ্ছাকৃত খেলাপিদের চিহ্নিত করতে আগামী ৯ এপ্রিলের মধ্যে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীর দুই ধাপ নিচের কর্মকর্তার অধীনে প্রধান কার্যালয়ে ‘ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণ গ্রহীতা শনাক্তকরণ ইউনিট’ নামে একটি পৃথক ইউনিট গঠন করতে হবে। তারা ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী, কারা ইচ্ছাকৃত খেলাপি তা শনাক্ত করবেন।

তবে জাতীয় শিল্পনীতিতে বর্ণিত সংজ্ঞানুযায়ী ‘বৃহৎ শিল্প’ খাতের ৭৫ কোটি ও তদূর্ধ্ব, ‘মাঝারি শিল্প’ খাতের ৩০ কোটি ও তদূর্ধ্ব এবং অন্যান্য খাতের ১০ কোটি ও তদূর্ধ্ব স্থিতিসম্পন্ন ঋণের ক্ষেত্রে ব্যাংকের নির্বাহী কমিটির বা পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন গ্রহণ আবশ্যক হবে।

ইচ্ছাকৃত খেলাপির বিরুদ্ধে নেওয়া হবে যেসব ব্যবস্থা

ইচ্ছাকৃত খেলাপির বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা, ট্রেড লাইসেন্স ইস্যুতে নিষেধাজ্ঞা এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন ও রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মসের (আরকেএসসি) নিকট কোম্পানি নিবন্ধনে নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থার কাছে তালিকা দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক। একই সঙ্গে ইচ্ছাকৃত খেলাপির গাড়ি, জমি, বাড়ি, ফ্ল্যাট ইত্যাদির নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের কাছেও তালিকা পাঠানো হবে। যাতে সংশ্লিষ্ট সংস্থা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে। পাশাপাশি কোনো ইচ্ছাকৃত খেলাপি রাষ্ট্রীয় পুরস্কার বা সম্মাননা পাওয়ারও যোগ্য হবেন না।

ইচ্ছাকৃত খেলাপি হলে পরিচালক পদ বাতিল

নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ইচ্ছাকৃত খেলাপির তালিকায় কারও নাম এলে ঋণ পরিশোধ করে তালিকা থেকে অব্যাহতির ৫ বছরের মধ্যে কোনো ব্যাংকের পরিচালক হতে পারবেন না। আর যদি কোনো পরিচালক ইচ্ছাকৃত খেলাপি হয়ে পড়েন তবে তার পরিচালক পদ বাতিল হবে।

ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণ গ্রহীতাসংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রতি ত্রৈমাসিকে ব্যাংকের অডিট কমিটির সভায় উপস্থাপন করতে হবে। অডিট কমিটি উক্ত উপস্থাপিত প্রতিবেদন ও সংশ্লিষ্ট বিষয়াবলি পর্যালোচনা শেষে গুরুত্ব বিবেচনায় এ বিষয়ে তাদের মতামত বা সিদ্ধান্ত পরবর্তী পর্ষদ সভাকে জানাবে। ব্যাংক কর্তৃক পরিচালিত নিয়মিত বা বিশেষ অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা প্রতিবেদনে ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপির বিষয়ে পর্যালোচনাসহ একটি আলাদা অনুচ্ছেদ অন্তর্ভুক্ত করতে হবে এবং তা নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে টিকা আকারে প্রকাশ করতে হবে।

ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণের সুদ মওকুফ করা যাবে না, করা যাবে না পুনঃতফসিলও

বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, ইচ্ছাকৃত খেলাপির ঋণ হিসাবের বিপরীতে আরোপিত বা অনারোপিত কোনও সুদ মওকুফ করা যাবে না এবং এই ঋণ পুনঃতফসিলও করা যাবে না। ইচ্ছাকৃত খেলাপির ঋণ হিসাবটি অন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক টেকওভার করা যাবে না। ওই ঋণ সম্পূর্ণ আদায় বা পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট ঋণ গ্রহীতা ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণ গ্রহীতা হিসেবেই বিবেচিত হবেন।

ইচ্ছাকৃত খেলাপির ঋণ সম্পর্কিত তথ্য নিয়মিত বাংলাদেশ ব্যাংককে জানাতে হবে

ব্যাংক কর্তৃক ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণ গ্রহীতা চিহ্নিত ও চূড়ান্ত করার পর এ সংক্রান্ত তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরোতে (সিআইবি) রিপোর্ট করতে হবে। ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণ গ্রহীতাকে সিআইবিতে উইফুল ডিফল্টার হিসেবে প্রদর্শন করতে হবে। ব্যাংক কর্তৃক ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণ গ্রহীতার তথ্য ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে বিবরণী আকারে প্রতি তিন মাস শেষে পরবর্তী মাসের ১০ (দশ) তারিখের মধ্যে ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ (ডিভিশন-১) এর নিকট দাখিল করতে হবে এবং এ সম্পর্কিত যাবতীয় দলিলাদিসহ হালনাগাদ বিবরণী বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন দলের চাহিদা মোতাবেক উপস্থাপন করতে হবে।

ইচ্ছাকৃত খেলাপি চিহ্নিত ও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হলে ব্যাংকের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা

কোনো ব্যাংক ইচ্ছাকৃত খেলাপি সম্পর্কিত জারিকৃত নির্দেশনা মানছে না মর্মে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিকট বিবেচিত হলে ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে উক্ত নির্দেশনা লঙ্ঘনের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে কমপক্ষে ৫০ লাখ টাকা এবং সর্বোচ্চ ১ কোটি টাকা জরিমানা করবে। তথ্য সূত্র আরটিভি নিউজ।