News update
  • Guterres Urges Leaders to Act as UNGA Week Begins     |     
  • BNP to go door to door for hearts and votes     |     
  • Chittagong port tariffs increased up to 50 per cent     |     
  • Rising Heat Cost Bangladesh $1.8 Billion in 2024     |     
  • Stocks extend gains; turnover drops in Dhaka, rises in Ctg     |     

রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে শোইগুকে সরিয়ে দিচ্ছেন পুতিন

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক কুটনীতি 2024-05-13, 1:29pm

dfdhdfhd-3cbb9d08c768b36ea9685ecefe1ad1a21715585595.jpg




একযুগ পর নিজের দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠ সের্গেই শোইগুকে প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিতে যাচ্ছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

মি. শোইগুর জায়গায় দেশটির উপ-প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা আন্দ্রেই বেলোসভ নতুন প্রতিরক্ষামন্ত্রী হতে যাচ্ছেন।

৬৮ বছর বয়সী মি. শোইগু ২০১২ সাল থেকে একটানা দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে রয়েছেন।

খুব শিগগিরই তাকে এই দায়িত্ব থেকে সরিয়ে রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের প্রধান নিযুক্ত করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছে ক্রেমলিন।

অন্যদিকে, রুশ পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ থেকে প্রকাশিত কাগজপত্রে বলা হয়েছে যে, মি. বেলোসভ দেশটির নতুন প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব পাচ্ছেন।

বর্তমান প্রতিরক্ষামন্ত্রী মি. শোইগু ইউক্রেনের সঙ্গে রাশিয়ার যুদ্ধে অন্যতম প্রধান ভূমিকা পালন করছেন।

রাশিয়ার সরকারি কাগজপত্রে বলা হচ্ছে, মি. শোইগু রাশিয়ার শক্তিশালী নিরাপত্তা পরিষদের দায়িত্ব নিক, এটাই চান মি. পুতিন।

বর্তমানে নিরাপত্তা পরিষদের দায়িত্বে রয়েছেন নিকোলাই পাত্রুশেভ। এই পদ থেকে সরিয়ে তাকে নতুন কোনও দায়িত্বে দেওয়া হবে কি-না, সে ব্যাপারে এখনও নিশ্চিত করে কিছু জানা যায়নি।

বর্তমান প্রতিরক্ষামন্ত্রী মি. শোইগু রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত। মি. পুতিনকে তিনি প্রায়ই নিজের জন্মভূমি সাইবেরিয়ায় মৎস্য শিকারে নিয়ে যেতেন।

তাদের ঘনিষ্ঠতা এই পর্যায়ে ছিল যে, পূর্ব কোনও সামরিক অভিজ্ঞতা না থাকা সত্ত্বেও মি. শোইগুকে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি দায়িত্বে দিয়েছিলেন মি. পুতিন।

পেশাগত জীবনে মি. শোইগু ছিলেন একজন প্রকৌশলী।

গত শতাব্দীর নব্বইয়ের দশকে জরুরি ও দুর্যোগ ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালনকালে তিনি বেশ খ্যাতি অর্জন করেছিলেন।

বিবিসি ইউরোপের বিশ্লেষক ড্যানি আইবারহার্ড বলেছেন, ইউক্রেন আক্রমণের পর থেকেই রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী মি. শোইগু প্রায়শই এমন স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন যা তার ক্ষমতার বাইরে।

রাশিয়ার যুদ্ধ পরিচালনার বিষয়কে কেন্দ্র করে ২০২৩ সালে তিনি ভাড়াটে সামরিক বাহিনী ওয়াগনারের প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিনের সঙ্গে প্রকাশ্য বিবাদে জড়িয়ে পড়েন।

মি. প্রিগোজিন পরবর্তীতে মস্কোর বিরুদ্ধে একটি স্বল্পস্থায়ী বিদ্রোহের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।

তখন ভাইরাল হওয়া অডিওবার্তা গুলোতে রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী মি. শোইগুকে “ময়লার থলে” এবং “বয়স্ক ভাড়” বলে অভিহিত করেছিলেন মি. প্রিগোজিন।

২০২৩ সালের অগাস্টে সেন্ট পিটার্সবার্গ থেকে মস্কো যাওয়ার সময় ভাড়াটে বাহিনী ওয়াগনারের প্রধান মি. প্রিগোজিন একটি বিমান দুর্ঘটনায় মারা যান।

তার মৃত্যুর জন্য অনেকে ক্রেমলিনকে দায়ী করলেও রুশ সরকার সেটি অস্বীকার করেছে।

নতুন প্রতিরক্ষামন্ত্রী কে এই বেলোসভ?

রাশিয়ার বর্তমান প্রতিরক্ষামন্ত্রী মি. শোইগুর স্থলাভিসিক্ত হতে যাওয়া মি. বেলোসভ একজন অর্থনীতিবিদ, যার সামান্য সামরিক অভিজ্ঞতাও রয়েছে।

কাজেই এমন একজন ব্যক্তিকে রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী করার কথা শুনে হয়তো অনেকে অবাক হতে পারেন।

তবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, রুশ প্রসিডেন্টের মি. পুতিনের এই পদক্ষেপটি ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, রাশিয়ার অর্থনীতিকে তিনি তার যুদ্ধ প্রচেষ্টার সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত করতে চাচ্ছেন।

ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন যে, “উদ্ভাবনের” দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই একজন বেসামরিক ব্যক্তিকে রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্বে দেওয়া হচ্ছে।

তিনি বলেছিলেন যে, জিডিপির একটি বড় অঙ্ক সামরিকখাতে ব্যয়ে শুরু করার পর রাশিয়া অনেকটা ১৯৮০ সালের মাঝামাঝি সময়ের সোভিয়েত ইউনিয়নের মতো হয়ে উঠেছিল।

কাজেই সামরিক ব্যয়কে রাশিয়ার সামগ্রিক অর্থনীতির সঙ্গে আরও ভালভাবে সংহত করার বিষয়টি নিশ্চিত করার দরকার বলে মনে করেন তিনি।

“আর যে ব্যক্তি উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে বেশি খোলামনের, তিনিই যুদ্ধক্ষেত্রে বিজয়ী হবেন,” বলেন মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ।

বিবিসি রাশিয়ার সম্পাদক স্টিভ রোজেনবার্গ বলেন, মি. শোইগুর জায়গায় নতুন কেউ আসার বিষয়টি তেমন আশ্চর্য হওয়ার মতো কোনও কিছু নয়।

কারণ সাম্প্রতিক সময়ে মি. শোইগুর অবস্থান বেশ দুর্বল হয়ে পড়েছে। এমনকী, এটাও শোনা যাচ্ছিলো যে, তাকে পদচ্যুত করানো হতে পারে।

বস্তুতঃ রাশিয়ার ইউক্রেন অভিযানে সামরিক বিপর্যয় এবং শক্তি ও সম্পদের বড় ধরনের ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে, যার জন্য মি. শোইগুকে অনেকটাই দায়ী করে থাকেন।

এক্ষেত্রে রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসাবে একজন অর্থনীতিবিদ থাকাটা ক্রেমলিনের পরিবর্তিত অগ্রাধিকার নীতিরই প্রতিফলিত বলে মনে করছেন মি. রোজেনবার্গ।

কেননা, রাশিয়ার অর্থনীতি এখন যুদ্ধকালীন সময় পার করছে। তাই যুদ্ধের অর্থায়নের জন্য প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের যথেষ্ট অর্থ থাকা অত্যাবশ্যক।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রুশ সরকারের একজন সরকারি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে স্বাধীন রুশ ওয়েবসাইট দ্য বেল বলেছে, মি. বেলোসভকে “রাষ্ট্রের একজন কঠোর রক্ষক হিসাবে দেখা হয়, যিনি বিশ্বাস করেন যে, রাশিয়া শত্রু দিয়ে ঘেরা”।

মি. পুতিনের মতো তারও রুশ অর্থোডক্স চার্চের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা রয়েছে।

এমনকী প্রেসিডেন্ট পুতিনের মতো তিনি মার্শাল আর্টের ব্যাপারে বেশ উৎসাহী।

যৌবনে মি. বেলোসভ কারাতেসহ বিভিন্ন খেলার অনুশীলন করতেন বলে জানা যায়।

উপ-প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সহযোগী হিসাবে বেশ কয়েক বছর কাজ করেছিলেন।

তারও আগে অর্থনৈতিক উন্নয়ন মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন মি. বেলোসভ।

২০১৪ সালে রাশিয়া যখন ক্রাইমিয়া অধিগ্রহণ করে, তখন সেটিকে সমর্থন করার জন্য মি. পুতিন একটি অর্থনৈতিক প্রতিনিধি দল গঠন করেছিলেন।

মি. বেলোসভ ওই দলের একমাত্র সদস্য ছিলেন বলে জানা যায়।

প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ২০০০ সালের মে মাস থেকে টানা প্রায় দুই যুগ রাশিয়ার নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

প্রায় ৮৭% ভোট পেয়ে সম্প্রতি পঞ্চমবারের মতো রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন ভ্লাদিমির পুতিন। যদিও ওই নির্বাচনে তাকে বিশ্বাসযোগ্য তেমন কোনও প্রতিপক্ষের মুখোমুখি হতে হয়নি। বিবিসি