News update
  • 5mmcfd gas to be added to national grid from Kailashtila gas field     |     
  • ArmArmed Forces Day: Tarique's message draws on historic closeness     |     
  • UNGA urges renewed int’l efforts for a resolution of Rohingya crisis      |     
  • First National AI Readiness Assessment Report Published     |     
  • China calls for implementation roadmap for new finance goal     |     

ইউক্রেন রাজি, এবার ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নিয়ে রাশিয়ার কাছে যাবে যুক্তরাষ্ট্র

বিবিসি বাংলা কুটনীতি 2025-03-12, 4:17pm

retrwr-f1335ef1bb9940c9fba72ab6e4fe24781741774647.jpg




সৌদি আরবের জেদ্দায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এক দিনের বৈঠকের পর ইউক্রেন জানিয়েছে, তারা অবিলম্বে ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতি শুরুর প্রস্তাবে রাজি আছে। "বল এবার রাশিয়ার কোর্টে" এ কথা উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানিয়েছেন, তারা মাস্কোর কাছে প্রস্তাব পাঠাবেন।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, 'ইতিবাচক' এই প্রস্তাবে রাশিয়াকে রাজি করানোর দায়িত্ব এবার যুক্তরাষ্ট্রের।

গত ২৮ ফেব্রুয়ারি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তার কার্যালয় ওভাল অফিসে জেলেনস্কির বাদানুবাদের পর মঙ্গলবার প্রথমবারের মতো দুই দেশের কর্মকর্তারা আনুষ্ঠানিক বৈঠক করলেন।

এক যৌথ বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, তারা অবিলম্বে ইউক্রেনের সঙ্গে গোয়েন্দা তথ্য বিনিময় এবং সামরিক সহযোগিতা দেওয়া আবার শুরু করবে। হোয়াইট হাউজের বাদানুবাদের পর এগুলো বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল।

"দুই পক্ষই আলোচনার জন্য তাদের প্রতিনিধি দলের নাম ঘোষণা করতে সম্মত হয়েছে। ইউক্রেনের দীর্ঘমেয়াদি নিরাপত্তা নিশ্চিত করে শান্তি স্থাপনের লক্ষ্যে শিগগিরই আলোচনা শুরুর বিষয়েও উভয় পক্ষ একমত হয়েছে," বলা হয় বিবৃতিতে।

জেদ্দায় এক সংবাদ সম্মেলনে রুবিও বলেন, রাশিয়া এই প্রস্তাবে রাজি হবে বলে তিনি আশা করছেন।

তিনি বলেন, "ইউক্রেন গুলি বন্ধ করে আলোচনা শুরু করতে রাজি আছে", আর রাশিয়া যদি এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে তাহলে "দুর্ভাগ্যবশত আমরা বুঝতেই পারবো এখানে শান্তির পথে বাধা কোথায়"।

"আমরা আজ যুদ্ধবিরতি ও দ্রুত আলোচনার শুরুর যে প্রস্তাব দিয়েছি তাতে সম্মত হয়েছে ইউক্রেন। আমরা এখন এই প্রস্তাব নিয়ে রাশিয়ানদের কাছে যাবো এবং আশা করছি তারা শান্তির জন্য হ্যাঁ বলবে। বল এখন তাদের কোর্টে," যুক্ত করেন তিনি।

জেদ্দায় আলোচনা শুরুর আগে ইউক্রেনের পক্ষ থেকে আকাশ ও সাগরে আংশিক যুদ্ধবিরতির যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, ৩০ দিনের মার্কিন যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব তার চেয়েও বিস্তৃত বলেও জানানো হয়েছে।

জেদ্দায় 'গঠনমূলক' আলোচনার জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিন্ডেন। এক ভিডিওবার্তায় তিনি বলেন, রাশিয়াকে দেখাতে হবে তারা "যুদ্ধের ইতি টানতে চায় নাকি তা চালিয়ে যেতে চায়। এটা পুরোপুরি সত্য প্রকাশের সময়"।

রাশিয়া এখনও এ বিষয়ে তাদের প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে মঙ্গলবার জেদ্দার আলোচনা শুরুর আগে তারা বলেছিল, বৈঠকের ফলাফলের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা দেওয়া পর তারা একটি বিবৃতি দেবে।

কিন্তু প্রভাবশালী রাশিয়ান আইনপ্রণেতা কস্টানন্টিন কসাচেভ বলেছেন, যে কোনো সম্ভাব্য চুক্তি হবে "আমাদের শর্ত অনুযায়ী, আমেরিকার না"।

কসাচেভ রাশিয়ার পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ ফেডারেশন কাউন্সিলের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান। তিনি আরও বরেছেন, "সত্যিকারের চুক্তি লেখা এখনও বাকি আছে"। রাশিয়ার সেনারা ইউক্রেনে আরও অগ্রসর হচ্ছে বলেও ইঙ্গিত করেন তিনি।

রাশিয়া ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রায় আক্রমণ শুরু করেছিল। গত তিন বছরে রুশ বাহিনী ইউক্রেনের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ ভূখণ্ড নিজেদের দখলে নিয়েছে।

এদিকে হোয়াইট হাউজে সাংবাদিকদের সামনে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে কথা বলবেন। তিনি আশা করছেন পুতিন শান্তি প্রস্তাবে রাজি হবেন।

সংঘাত নিরসনে দুই পক্ষেরই সম্মতি দরকার উল্লেখ করে তিনি আরও আশা প্রকাশ করেছেন, হয়তো কয়েকদিনের মধ্যেই চুক্তি করা সম্ভব হবে।

"আগামীকাল রাশিয়ার সঙ্গে আমাদের বড় একটা বৈঠক আছে এবং অবশ্যই সেখানে চমৎকার আলোচনা হবে," বলেন তিনি।

জেলেনস্কিকে আবারও ওয়াশিংটনে আমন্ত্রণ জানানোর বিষয়ে প্রস্তুত আছেন বলেন জানান ট্রাম্প।

রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা তাসকে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেছেন, কয়েকদিনের মধ্যে মার্কিন প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনার সম্ভাবনা রাশিয়া উড়িয়ে দিচ্ছে না।

এদিকে জেদ্দায় এক সাংবাদিক মার্কো রুবিওর কাছে জানতে চান, ট্রাম্প ও জেলেনস্কি সম্পর্ক 'স্বাভাবিক' হয়েছে কিনা। রুবিওর জবাব ছিল, 'শান্তি প্রক্রিয়া' স্বাভাবিক হয়েছে।

"এটা কোনো টেলিভিশন শোয়ের নতুন পর্ব নয়। যুদ্ধের কারণে আজ মানুষ মারা যাচ্ছে, গতকালও গেছে এবং যুদ্ধবিরতি না হলে দুঃখজনকভাবে আগামীকালও মারা যাবে," বলেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের মধ্যে যখন আলোচনা চলছিল, তার আগে মস্কোয় ড্রোন হামলায় অন্তত তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। রাশিয়া বলছে, এর মানে হলো ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের কূটনীতিকে প্রত্যাখ্যান করছে।

যুক্তরাষ্ট্র-ইউক্রেন যৌথ বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, 'যত দ্রুত সম্ভব' খনি সংক্রান্ত চুক্তি চূড়ান্ত করার বিষয়েও সম্মত হয়েছেন ট্রাম্প ও জেলেনস্কি।

দীর্ঘমেয়াদে নিরাপত্তা নিশ্চিতের বিনিময়ে ইউক্রেন তাদের বিরল খনিজ সম্পদের ভান্ডারে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রবেশাধিকার দিতে রাজি হয়েছিল, কিন্তু হোয়াইট হাউজে বাকবিতণ্ডার পর সেই আলোচনা ভেস্তে গিয়েছিল।

রুবিও জানান, মঙ্গলবারের বৈঠকে এই চুক্তি নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি, তবে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের অর্থ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে কথা হয়েছে।

জেদ্দায় মার্কিন প্রতিনিধি দলে হোয়াইট হাউজের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ ও মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফও ছিলেন।


আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই উইটকফের রাশিয়া সফরের কথা রয়েছে বলে একটি সূত্র বিবিসিকে নিশ্চিত করেছে, তবে এই পরিকল্পনা পাল্টেও যেতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেন যৌথ বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, শান্তি আলোচনায় ইউরোপের নেতাদের যুক্ত করার বিষয়ে কিয়েভ আবারও জোর দিয়েছে।

ইইউ কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেয়েন মঙ্গলবারের বৈঠককে 'ইতিবাচক অগগ্রতি' বলে উল্লেখ করেছেন।

এদিকে ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে লড়াই চলছেই।

রাশিয়ার সংবাদ মাধ্যম জানাচ্ছে, মস্কোয় রাতভর ড্রোন হামলায় অন্তত তিন জমের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া শিশুসহ অন্তত ১৮ জন আহত হয়েছেন।

ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর পর মস্কোয় সবচেয়ে বড় আক্রমণ বলা হচ্ছে এটিকে।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ৩৩৭টি ড্রোন হামলা প্রতিহত করা হয়েছে যার মধ্যে ৯১টি ড্রোন মস্কো এলাকায় গুলি করে ধ্বংস করা হয়েছে।

ইউক্রেনের কর্মকর্তারাও কিয়েভসহ আরও কিছু এলাকায় রাশিয়ার ড্রোন হামলার খবর জানিয়েছেন।

দেশটির বিমান বাহিনী বলছে, রাশিয়ার পাঠানো ১২৬টি ড্রোনের মধ্যে ৭৯টিকে গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে।

তবে এসব হামলায় ক্ষয়ক্ষতির কোনো হিসাব জানায়নি ইউক্রেন।