News update
  • Action over ban on AL activities after getting official gazette: CEC     |     
  • Rickshaws and life in Dhaka City     |     
  • Crucial Sylhet road, bridge collapse for Kushiyara erosion     |     
  • Cannes, global Colosseum of film, readies for 78th edition      |     
  • ‘July Unity’ for next course of action based on consultations     |     

ছাত্র-শিক্ষককে পাঞ্জাবি টুপি পরে ক্লাসে না আসার নির্দেশ

ক্যাম্পাস 2023-02-05, 11:05pm

mohipur-cooperative-high-school-d60175cd7abb38c3b5f1925d67cf3c4c1675616700.jpg

Mohipur Cooperative High School



পটুয়াখালী: পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার মহিপুর কো-অপারেটিভ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক ছাত্রদের পাঞ্জাবি, টুপি পরে ক্লাসে না আসার নির্দেশ দিয়েছেন  উক্ত বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির। এমনকি এই নির্দেশ পালন না করলে  শিক্ষকদের বেতন বন্ধ করার হুমকিও দেন তিনি। এমন অভিযোগ করে প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে  প্রতিষ্ঠানটির সাধারন শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অবিভাবক ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা। 

জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার ( ফেব্রুয়ারী) স্কুলের ক্লাস চলাকালীন সময়ে স্কুল পরিদর্শনে এসে সপ্তম শ্রেনীর শ্রেণী কক্ষে যান সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির প্রধান শিক্ষক আব্দুস সালাম তখন ওই ক্লাসে পাঠদান করান মজিবুর রহমান নামের একজন সহকারী শিক্ষক। পাঠদান কালে তার পড়নে ছিল সাদা পাঞ্জাবি টুপি। মজিবুর রহমান নামের ওই শিক্ষক তখন ছাত্র-ছাত্রীদের ইংরেজি বইয়ের ক্লাস নিচ্ছিলেন। পাঞ্জাবি পড়ে ইংরেজি পড়ানোর কারনে ওই পোশাক পরিবর্তনের নির্দেশ দেন এবং সাথে সাথে প্রধান শিক্ষককে নিয়ম না মানলে বেতন বন্ধেরও নির্দেশ দেন সভাপতি।

তারপরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই খবর ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার ঝড় ওঠে এলাকা জুড়ে। তবে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বলছে এই ধরনের নির্দেশ দেয়ার ক্ষমতা তার একার নেই এবং সুনির্দিষ্ট কারন ছাড়া বেতন বন্ধেরও সুযোগ নেই।

এলাকাবাসীর দাবি, সভাপতির এরকম নির্দেশনা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার মতো। এর সুষ্ঠ বিচার করা উচিৎ।

দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী জায়েদ মুসুল্লী পাভেল বলেন, আমরা ক্লাস করছি, হঠাৎ স্কুলের সভাপতি ক্লাস রুমে আসে। তখন আমি পাঞ্জাবি টুপি পড়ে ক্লাস করছিলাম, আমাকে দেখে বলে নামাজ ছাড়া টুপি পড়া যাবে না। তখন অন্য শিক্ষক আমার জন্য রিকোয়েস্ট করলে সে বলে কোনো রিকোয়েস্টে কাজ হবে না। এখানে টুপি পড়ে ক্লাস করা চলবে না। 

সহকারী শিক্ষক মুজিবুর রহমান বলেন, আমি প্রায় অর্ধশত ছাত্র-ছাত্রীদের ইংরেজি বইয়ের পাঠদান করছিলাম। হঠাৎ তাঁরা ক্লাস রুমে প্রবেশ করে এবং ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করে এই রকম ধর্মীয় পোশাকে কি ইংরেজি পড়ানো যায়? পরে আমাকে বলে, এই পোষাকে স্কুলে ক্লাস করানো যাবে না। তখন আমি জিজ্ঞেস করি তাহলে কি পোষাক পড়বো, তখন সে বলে প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে জেনে নিয়েন। আর প্রধান শিক্ষককে বলেন, যদি এই পোষাকে পরবর্তীতে ক্লাসে আসে তাহলে তার বেতন বন্ধ করে দিবেন।

মহিপুর কো-অপারেটিভ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সালাম বলেন, আমি সভাপতির সাথে গিয়ে ক্লাসের বাহিরে দাঁড়িয়ে ছিলাম। কিন্তু পরে আমাকে ওই শিক্ষক বলেন যে সভাপতি ধর্মীয় পোষাক পড়ে স্কুলে না আসার জন্য তাকে বলেছেন। তবে আমাদের স্কুলে শিক্ষকদের জন্য কোনো পোশাক নির্ধারণ করা নেই, সবাই শালিন পোশাকে ক্লাস করাতে পারে।

ব্যাপারে স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির  বলেন, আমি ক্লাসে টুপি না পড়ার কথা বলিনি। তবে তাঁদেরকে সুন্দর পোশাক পড়ে আসতে বলেছি। তার পোশাকের ব্যাপারে আমি ক্লাসে সকল ছাত্র-ছাত্রীদের সামনে যে বলেছি এটা আমার ভুল হয়েছে। ক্ষমা চাচ্ছি, আমি পোশাক পরিবর্তনের কথা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের জন্য নয়, স্কুলের সকল ছাত্র-ছাত্রী শিক্ষকদের পরিপাটি থাকার জন্য বলেছি।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোখলেছুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমি সাংবাদিকদের মাধ্যমে শুনেছি। তবে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের সাথে কথা বলে তারপরে বলতে পারবো। তবে যৌক্তিক সুনির্দিষ্ট কারন ছাড়া কোনে শিক্ষকের বেতন বন্ধ করার সুযোগ কারো নেই। আর পোষাকের ব্যাপারে এমন মন্তব্য সমুচিত নয়। 

কলাপাড়া ইউএনও শংকর চন্দ্র বৈদ্য বলেন, আপনার মাধ্যমেই বিষয়টি জেনেছি। তবে আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি। - গোফরান পলাশ