বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) কর্মরত নিউরোলোজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. শহীদুল্লাহ সবুজের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ তুলে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে শাহবাগ থানায় মামলা করেছেন আরেক সহকর্মী মনোরোগ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় মামলার এজাহারে ভুক্তভোগী নারী চিকিৎসক উল্লেখ করেছেন, ডা. শহীদুল্লাহ সবুজ বিভিন্ন সময় ভুক্তভোগী নারী চিকিৎসককে নিজের রুমে ডাকতেন এবং ‘অশ্লীল ও আপত্তিকর’ প্রস্তাব দিতেন। এদিন রুমে ডেকে ভুক্তভোগীকে জড়িয়ে ধরে ছবি তুলে রাখেন তিনি। তখন সেখানের আর কেউ ছিল না। পরে ওই ছবি ব্যবহার করে শহীদুল্লাহ ভুক্তভোগীকে নিয়মিত হুমকি দিতেন। ২৫ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বি-ব্লকের অ্যালামনাই রুমে ডা. শহীদুল্লাহর সঙ্গে ভুক্তভোগীর দেখা হলে একা পেয়ে জোরপূর্বক তাকে জড়িয়ে ধরে স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেন। পরে ভুক্তভোগী বাঁচার চেষ্টা করলে তাকে মারধর করেন।
ভুক্তভোগী ওই নারী চিকিৎসক গণমাধ্যমকে জানান, আমি তিন বছর যাবত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক মনোরোগ বিভাগ হিসেবে কর্মরত আছি। ডা. শহীদুল্লাহ বিভিন্ন সময় রুমে ডেকে আপত্তিকর প্রস্তাব দিত। আমার সিনিয়র তাই চাকরির নিরাপত্তার স্বার্থে আমি শুরুতে কিছুই জানায়নি। তারপরও সে আমাকে বিভিন্ন কাজের অজুহাতে সে যখন রুমে একা থাকত আমাকে তার রুমে আসার জন্য ডাকত আর প্রায় দিনই আমি এড়িয়ে যেতাম।
তিনি বলেন, আমার সঙ্গে তোলা ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও পরিবারের কাছে ছড়িয়ে দিবে বলেও হুমকি দিতেন তিনি। আমি সামাজিক মানসম্মানের ভয়ে তাৎক্ষণিক চুপ থাকি। গত ২৫ জানুয়ারির ঘটনার পর বিষয়টি আমি পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে থানায় মামলা করি। এরই মধ্যে আমার নামে আমার পরিবারের কাছেও ডা. শহীদুল্লাহ নানান অপ-প্রচার করে। আমি আইনের আশ্রয় নিয়েছি। আমার সঙ্গে যা হয়েছে আমি মানসিকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত। আমি সুষ্ঠু বিচার চাই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ডা. হাবিবুর রহমান দুলাল বলেন, এ ধরনের ঘটনা অপ্রত্যাশিত এবং অনভিপ্রেত। ওই নারী চিকিৎসক বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর। শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) তিনি উপাচার্যের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করবেন। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি নারী নির্যাতন সেল আছে, সেখানেও অভিযোগ করবেন। অভিযোগ পাওয়ার পর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. বজলুর রহমান বলেন, প্রাথমিকভাবে আমরা আসামি ডা. শহীদুল্লাহ সবুজের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের সত্যতা পেয়েছি। বিষয়টির তদন্ত চলছে।
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোস্তাজিরুর রহমান বলেন, বিএসএমএমইউ’র নিউরোলোজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. শহীদুল্লাহ সবুজের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ তুলে মামলা করেছেন আরেক সহকর্মী চিকিৎসক। আমরা তদন্ত শুরু করেছি। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়ে আসামিকে আইনের আওতায় আনব।