News update
  • Alamdanga’s disabled Zahurul sees the world through his hands     |     
  • Touhid dismisses Indian media reports linking Dhaka for Delhi blast     |     
  • IOM, HCI partner to combat human trafficking in Rohingya camps     |     
  • Gold price goes up again in Bangladesh     |     
  • Suicide bomber targets Islamabad court, killing 12 people, wounding 27     |     

ঢাবি ৩০তম উপাচার্য কে এই অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক ক্যাম্পাস 2024-08-26, 11:39pm

wetewtewr-ee4a1cc4e4dad3a98efd000ba3f093f51724693954.jpg




ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩০তম উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেতে যাচ্ছেন অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান। বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও দেশের রাষ্ট্রপতি মো. শাহাবুদ্দিন তাকে ভিসি হিসেবে নিয়োগে সম্মতি দিয়েছেন বলে সূত্রে জানা গেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় কোনো পদে না থেকে হঠাৎ করে তাকে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়ায় শিক্ষার্থীসহ জনসাধারণের মনে প্রশ্ন জেগেছে, কে এই অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান।

ঢাবি ক্যাম্পাসে রাজনীতিবিমুখ শিক্ষক হিসেবে পরিচিত অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ। কোনো দলের রাজনৈতিক সভা সমাবেশে তাকে দেখা যায়নি। সবসময়ই একাডেমিক বিষয়ে প্রাধান্য পাওয়ায় তিনি রাজনৈতিক কার্যক্রম থেকে দূরে রয়েছেন। সম্প্রতি তার ৩৫ পৃষ্ঠার জীবন বৃত্তান্ত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ ভাইরাল হয়। তার তত্ত্বাবধানে বর্তমানে দেশে এবং দেশের বাইরের ১৭ জন পিএইচডি গবেষক ও ৮ জন এমফিল গবেষক গবেষণায় নিয়োজিত রয়েছেন। তিনি দুই শতাধিক গবেষণামূলক প্রবন্ধ ও বইয়ের রচয়িতা।

অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার বিখ্যাত চুনতি গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার প্র-পিতামহ খান বাহাদুর নাসির উদ্দিন খান এবং অবিভক্ত ভারতের একজন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ও ডেপুটি কালেক্টর ছিলেন। পিতামহ কবীর উদ্দিন আহমেদ খান ছিলেন আসাম-বেঙ্গল সিভিল সার্ভিসের ডেপুটি কালেক্টর ও প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট। এ কারণে, অত্র এলাকায় তাদের বাড়িটি ‘ডেপুটি বাড়ি’ হিসেবে বিশেষ পরিচিত লাভ করে।

অধ্যাপক নিয়াজ খানের বাবা ড. শফিক আহমদ খান অত্যন্ত মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলেন এবং ষাটের দশকের প্রথম দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাণ রসায়ন বিভাগ প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অর্জন করেছিলেন।

পেশাগত জীবনে অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের ‘অধ্যাপক’ ছিলেন। পরবর্তী সময়ে ২০০৬ সালে যোগ দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন ও অধ্যয়ন বিভাগে। ২০১২ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত তিনি এই বিভাগের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি এই বিভাগেই অধ্যাপনা করছেন।

ঢাবির উপাচার্য হওয়ার আগে অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ (আইইউবি) এর উপ-উপাচার্য ও উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ডেভলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক (গ্রেড-১) ও সাবেক বিভাগীয় প্রধান, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি অব গভর্নেন্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের সিনিয়র একাডেমিক অ্যাডভাইজার এবং সেন্টার অব রিসোর্সেস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট রিসার্চের নির্বাহী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

অধ্যাপক ড. খান মর্যাদাপূর্ণ কমনওয়েলথ বৃত্তি নিয়ে যুক্তরাজ্যের ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন এবং পরবর্তী সময়ে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, সোয়ানসি বিশ্ববিদ্যালয় এবং এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজিতে পোস্ট ডক্টরাল গবেষণা সম্পাদন করেন।

অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ ইউনিভার্সিটি অব অক্সফোর্ড, ইউনিভার্সিটি অব ওয়েলস সোয়ানসি, এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে উচ্চ শিক্ষাগ্রহণ ও গবেষণা করে দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ, থাইল্যান্ড ও যুক্তরাজ্যে একাডেমিক ও কার্যকরী ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজমেন্টের উন্নয়নে অবদান রাখছেন।

তিনি নিয়মিত একাডেমিক ডিগ্রির পাশাপাশি অন্যান্য দক্ষতা অর্জনে নিয়োজিত ছিলেন। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পার্সোনাল ম্যানেজমেন্ট থেকে ডিপ্লোমা ইন পার্সোনাল ম্যানেজমেন্টে (প্রথম শ্রেণিতে প্রথম) এবং যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব ওয়েলস-সোয়ানসি থেকে ডিপ্লোমা ইন ভলেন্টারি অ্যান্ড কমিউনিটি অরগানাইজেশন্স (ডিস্টিংশন) ও যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব ওয়েলস-ল্যাম্পিটার থেকে প্রফেশনাল সার্টিফিকেট ইন ইন্টারপারসনাল স্কিলস ফর ভলান্টিয়ার (ডিস্টিংশন) অর্জন করেন।

শিক্ষা ও গবেষণা ক্ষেত্রে তিনি যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কুইন এলিজাবেথ হাউজে ‘দক্ষিণ এশীয় ফেলো’, তিনি এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব উইমেনের অধ্যাপক (২০১৮), যুক্তরাষ্ট্রের প্রিস্টন ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক, ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি (২০১৪), আমেরিকান ইউনিভার্সিটি অব ডায়ালগ (২০১৮) এর খণ্ডকালীন গবেষক। তিনি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ফেলো (২০১৫ থেকে বর্তমান) ও সিনিয়র অ্যাডভাইজার (২০১৬-১৮) ইস্ট ওয়েস্ট (২০০৬ থেকে বর্তমান), নর্থ সাউথ (২০০৯ থেকে বর্তমান), ইনডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি (২০০১ থেকে বিভিন্ন মেয়াদে চলমান) এডজাঙ্কট প্রফেসর।

এছাড়া তিনি, মিশরের আমেরিকান ইউনিভার্সিটি ইন কায়রোতে 'ডিস্টিংগুইসড ভিজিটিং রিসার্চার', চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের 'অধ্যাপক', থাইল্যান্ডের এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির 'এশিয়ান রিসার্চ ফেলো' এবং অস্ট্রেলিয়ার মোনাশ ইউনিভারসিটির 'ভিজিটিং স্কলার', ২০০৪-০৮ সাল পর্যন্ত কানাডার রয়েল রোডস ইউনিভার্সিটির ফ্যাকাল্টি মেম্বার, যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব ওয়েলস ১৯৯৬-৯৭ এর ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

এছাড়া তিনি বিশ্বব্যাংক, জাতিসংঘ, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক, আমেরিকান আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা, যুক্তরাজ্য সরকারের সোয়ানসি-বে রেশিয়াল ইকুইটি কাউন্সিল এবং বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন পরিকল্পনা, প্রকল্প ও কর্মসূচিতে উপদেষ্টা ও পরামর্শক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

অধ্যাপক নিয়াজ সরকারের উচ্চপর্যায়ে ও সামাজিকভাবে বিভিন্ন সংগঠনে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি পরিবেশ ও টেকসই উন্নয়ন নিয়েও গবেষণা চালিয়েছেন। বিশেষজ্ঞ প্রশিক্ষক, গবেষণা নির্দেশক ও শিক্ষা উপদেষ্টা হিসেবে প্রধান জাতীয় প্রতিষ্ঠানসমূহ যেমন : ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ, বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন একাডেমি, ফরেন সার্ভিস একাডেমি বাংলাদেশ, বাংলাদেশ বন একাডেমি, আর্মি আর্টিলারি সেন্টার অ্যান্ড স্কুল এবং বাংলাদেশ আনসার ভিডিপি একাডেমিতে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া তিনি আরণ্যক ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশের বোর্ড অব ডিরেক্টরসের চেয়ারম্যান।

প্রসঙ্গত, এর আগে ২০২৩ সালের ১৫ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৯তম উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল। পরে কোটা সংস্কার আন্দোলনে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় তিনি পদত্যাগ করলে রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদকে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেন। আরটিভি