আফগানিস্তানের বিপক্ষে ২য় টি–টোয়েন্টি ম্যাচে দুর্দান্ত জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ২ উইকেটের রুদ্ধশ্বাস জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই টি-টোয়েন্টি সিরিজ নিশ্চিত করেছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।
শুক্রবার (৩ অক্টোবর) শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টসে জিতে আফগানিস্তানকে আগে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান টাইগার অধিনায়ক জাকের আলী। আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে রশিদ-নবিদের ইনিংস থামে ১৪৭ রানে। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ৪ উইকেট হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ।
তবে ১৪৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে একসময় কঠিন চাপের মুখে পড়েছিল তারা। টপ অর্ডারের বিপর্যয়ে ২৪ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বসে বাংলাদেশ। কিন্তু মাঝের ওভারে জাকের আলী, শামীম হোসেন এবং শেষ দিকে নুরুল হাসানের দারুণ ব্যাটিংয়ে আফগানিস্তানের স্বপ্ন ভেঙে যায়। তবে ১৯.১ ওভারে ৮ উইকেটে ১৫০ রান তুলে বাংলাদেশ। এতে ৫ বল হাতে রেখেই জিতল বাংলাদেশ।
সিরিজজয়ের ম্যাচে শেষের নায়ক শরীফুল। দশ নম্বরে নেমে ৬ বলে ১১ রান করেছেন এই বাঁহাতি। এর আগে ম্যাচের শুরুতেও বাংলাদেশকে পথ দেখিয়েছেন এই শরীফুলই। উইকেট পাননি, কিন্তু প্রথম তিন ওভারে মাত্র ৯ রান দিয়ে আফগানিস্তানের ব্যাটসম্যানদের বড় শট খেলা থেকে আটকে রেখেছিলেন। পরে ডেথ ওভারের বোলিংয়ে ফিরে তিনিই ফিরিয়েছিলেন রহমানউল্লাহ গুরবাজকে, ৩০ রান করে যিনি আজ আফগানিস্তানের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক।
রান তাড়ায় শুরুতেই ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের করা ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে মিডঅফে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তানজিদ হাসান তামিম (৭ বলে ২)। ওমরজাই নিজের পরের ওভারে এসে পারভেজ হোসেন ইমনকে (৫ বলে ২) করেন এলবিডব্লিউ। সাইফ হাসান বেশ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে খেলছিলেন। কিন্তু অতি আত্মবিশ্বাসী হতে গিয়ে ভুল করে বসেন।
মুজিব উর রহমানের ঘূর্ণিতে হাঁকাতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন আকাশে। ১৪ বলে ১ চার আর ২ ছক্কায় ১৮ করে আউট হন সাইফ। ২৪ রানে ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। রশিদ খানের এক ওভারে শামীম পাটোয়ারী একটি করে চার-ছক্কা হাঁকালে পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে ৩ উইকেটে মোটে ৩৭ রান তুলতে পারে টাইগাররা। চতুর্থ উইকেটে জাকের আলী আর শামীম মিলে ৩৭ বলে ৫৬ রানের জুটিতে বিপদ অনেকটা কাটিয়ে উঠেন। জাকেরকে এলবিডব্লিউ করে এই জুটি ভাঙেন রশিদ খান। জাকের ২৫ বলে ৩২ রানের ইনিংসে হাঁকান দুটি করে চার-ছক্কা।
শামীম দারুণ খেলছিলেন। রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে বল আকাশে তুলে দেন তিনি। ২২ বলে ৩ চার আর ২ ছক্কায় শামীমের ব্যাট থেকে আসে ৩৩ রান। এরপর নাসুম আহমেদ ১১ বলে ১০, সাইফউদ্দিন ২ বলে ৪ আর রিশাদ হোসেন ২ বলে ২ করে আউট হয়ে গেলে বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। ১২৭ রানে হারায় ৭ উইকেট। তবে নুরুল হাসান সোহান একপ্রান্ত ধরে রেখে দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান। দারুণ সঙ্গ দেন শরিফুল ইসলাম। সোহান ২১ বলে ১ চার আর ৩ ছক্কায় ৩১ রানে অপরাজিত থাকেন। ৬ বলে অপরাজিত ১১ করেন শরিফুল। তিনিই বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ম্যাচ শেষ করেন।
আফগানিস্তানের ওমরজাই ২৩ রানে শিকার করেন ৪টি উইকেট।
এর আগে, টস জিতে আগে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় টাইগাররা। নির্ধারিত ২০ ওভারে আফগানরা ৫ উইকেট হারিয়ে তোলে ১৪৭ রান। আফগানিস্তানের ইনিংসে ওপেনার সেদিকুল্লাহ আতাল ১৯ বলে ২৩ রান করে ফিরেন রিশাদ হোসেনের শিকার হয়ে। অপর ওপেনার ইব্রাহিম জাদরান খেলেন ধীরগতির ইনিংস ৩৭ বলে ৩৮ রান করে আউট হন নাসুম আহমেদের বলে। ওয়াফিউল্লাহ তারাখিল (৪ বলে ১) এবং দ্বারউইশ রাসুলি (৯ বলে ১৪) বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি।
রহমানুল্লাহ গুরবাজ কিছুটা লড়াই করেন ২২ বলে ৩০ রানের ইনিংসে, তবে শরিফুল ইসলামের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন। শেষ দিকে আজমতউল্লাহ ওমরজাই (১৭ বলে ১৯*) ও অভিজ্ঞ মোহাম্মদ নবি (১২ বলে ২০*) আফগানিস্তানকে লড়াই করার মতো সংগ্রহ এনে দেন।
বাংলাদেশের হয়ে নাসুম আহমেদ ও রিশাদ হোসেন নেন ২টি করে উইকেট। এছাড়া শরিফুল ইসলাম শিকার করেন ১ উইকেট। আরটিভি