News update
  • Musk Launches 'America Party' in Fresh Split with Trump     |     
  • Israel to send negotiators to Gaza talks     |     
  • Bangladesh bounce back to level series as Tanvir bags five     |     
  • UN Chief Condemns Russian Attacks, Warns of Nuclear Risks     |     
  • Dhaka Urges Clear Outcome from Upcoming Rohingya Talks     |     

মাত্র ১২ বছরে কোটিপতি ঝিনাইদহের ফলচাষি আক্তারুজ্জামান

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি খবর 2022-11-19, 1:07am

jhenaidah-successful-fruits-cultivation-photo-2-e0d22f80dfab8d474b6d59fa8e10b9c21668798439.jpg




কাজের প্রতি সততা, নিষ্ঠা, পরিশ্রম ও আন্তরিকতা  বদলে দিয়েছে ফলচাষি জয়নালের জীবণ । চলতি বছর ২০ বিঘা জমি থেকে ২৫ লাখ টাকার লেবু বিক্রি করেছেন তিনি। এছাড়া ৩০ বিঘা জমির ১ কোটি ২০ লাখ টাকার ড্রাগন বিক্রি করবেন বলে আশা করছেন। বাগান রক্ষনাবেক্ষণ খরচ বাদ দিয়ে বছরে ৭০ থেকে ৮০ লাখ টাকা লাভ হবে বলে জানান ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার বাথানগাছি গ্রামের জয়নাল আবেদীনের ছোট ছেলে আক্তারুজ্জামান ।

জানা যায়, বর্তমানে তার ৫০ বিঘা জমিতে উন্নত জাতের ড্রাগন,  মাল্টা, ছাতকি কমলা চাষ রয়েছে। গতবার প্রায় কোটি টাকার ফল বিক্রি করেছেন।

কথা হয় সফল ফলচাষি আক্তারুজ্জামানের সাথে। লেখাপড়া ছেড়ে বাড়িতে চলে আসার পর পারিবারিক ও সামাজিক জীবন ছন্দ পতন ঘটে । যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সফল উদ্যোক্তার গল্প শুনে অনুপ্রাণিত হ ন তিনি। এরপর যুব উন্নয়ন থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহন করেন। ২০১০ সালের কথা, যুব উন্নয়ন থেকে ৩০ হাজার টাকা ঋণ নিন। এরপর গড়ে তোলেন আক্তারুজ্জামান এগ্রো ফার্ম ।

প্রথম দিকে ১৫ বিঘা জমিতে পেপে ও কলা দিয়ে শুরু করি। এর সাথে ১২ বিঘা জমিতে কুলচাষ করেন। ২০১৬ সালে যুব উন্নয়ন কর্মকর্তার সহযোগীতায় পেয়ারার বীজ সংগ্রহ করে চারা তৈরি করি। সেই চারা ৫০ বিঘা জমিতে রোপন করা হয়। এসব জমি অর্ধেকের বেশি বর্গা নেওয়া। একই বছর পেয়ার সাথে ২০ বিঘা জমিতে সমন্বিত পদ্ধিতে মাল্টা এবং ১০ বিঘা জমিতে ছাতকি কমলার চারা রোপন করা হয়। পরের বছর বাকি ২০ বিঘা জমিতে পেয়ারার সাথে ড্রাগনের চারা রোপন করি। চলতি বছর ওই জমি থেকে ২৫ লাখ টাকার লেবু বিক্রি করেন। এছাড়া ১ কোটি ২০ লাখ টাকার ড্রাগন বিক্রি করবেন বলে আশা করেন। বাগান রক্ষনাবেক্ষণ খরচ বাদ দিয়ে বছরে ৭০ থেকে ৮০ লাখ লাভ হচ্ছে বলে যোগ করেন এই সফল ফলচাষি। তার বাড়ানে বর্তমানে নিয়মিত প্রায় ২৫ জন শ্রমিক দৈনিক টাকার বিনিময়ে কাজ করছে।

তিনি আরো জানান, ড্রাগন একটি বহুবর্ষজিবী টেকসই ফল। খুটি পদ্ধতিতে একটি খুটিতে চারটি চারা রোপণ করতে হয়। রোপনের পর ফল আসতে সময় লাগে মোটামুটি ১৮ মাস। ফল আসা পর্যন্ত খুটি প্রতি খরচ পড়ে গড়ে এক হাজার টাকা। একটি খুটিতে এক বছরে গড়ে পঁচিশ থেকে তিরিশ কেজি ফল উৎপাদিত হয়। ড্রাগন ফলের মৌসুম শুরু হয় এপ্রিল মাস হতে আর একটানা নভেম্বর মাস পর্যন্ত। এসময়ে কয়েক দফায় ফল আসে। ফুল আসার ৩০ থেকে ৩৫ দিনের মাথায় ড্রাগন তোলা যায়। ড্রাগন গাছে মূলত জৈব সার এবং সাথে সুষম মাত্রায় রাসায়নিক সার এবং পিপড়া দমনে কীটনাশক ব্যবহার করতে হয়।

পারিবারিক সম্পর্কে জানান, ছয় ভাই ও তিন বোনের মধ্যে সবার ছোট আক্তারুজ্জামান। সবাই উচ্চ শিক্ষিত। শুধু লেখা পড়া করা হয়নি আক্তারুজ্জামানের। ১৯৯৩ সালে এসএসসি পরীক্ষা দিলেও সংসার বিরাগী হওয়ায় কোন রকমে তৃতীয় বিভাগে পাশ করেন। এরপর ভায়েরা জোর করে ঢাকাতে নিয়ে একটি স্কুলের নবম শ্রেণিতে ভর্তি করে দেন। সেখানেও ভালো না লাগায় পালিয়ে ভারতে চলে যান । এরপর অবৈধভাবে ফেরার পথে বিজিবি’র হাতে আটক হয়ে বাড়ি ফেরত আসেন।

মহেশপুর উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ হাসান আলী জানান, আক্তারুজ্জামানের ফল চাষ পদ্ধতি প্রসংসার দাবি রাখে। বিশেষ করে ফল চাষের রোগ বালাই দমনে তাকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কৃষি অফিসের একজন উপ-সহকারী কর্মকর্তা প্রতিদিনই তার বাগান পরিদর্শন করে।

তিনি আরো বলেন, বিদেশি ফল ড্রাগন ও মাল্টা লাভজনক হওয়ায় অনেকে এখন তার কাছ থেকে চারা নিয়ে রোপন করছে।