News update
  • Bumper harvest of Jujube in Ramu Upazila     |     
  • Govt urged to offer scholarships to Palestinian students     |     
  • Caretaker Govt Review Hearing on Supreme Court Cause List     |     
  • Bangladesh Single Window to Launch by March: Lutfey Siddiqi     |     
  • UNRWA chief: Ceasefire is the start, not the solution     |     

বিএনপির ৪৮ ঘণ্টার হরতাল, জনমনে শঙ্কা

গ্রীণওয়াচ ডেক্স খবর 2023-11-19, 8:26am

resize-350x230x0x0-image-248486-1700347456-6fd9d213939921b27c26d1538cbe142b1700360766.jpg




সরকার পতনের একদফা দাবি এবং আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে আজ থেকে টানা ৪৮ ঘণ্টার হরতাল ডেকেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। রোববার (১৯ নভেস্বর) সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) সকাল ৬টা পর্যন্ত ঢাকাসহ দেশব্যাপী ৪৮ ঘণ্টার হরতালের ডাক দেয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) বিকেলে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা করেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। বিএনপির পাশাপাশি জামায়াতও একইসময় দেশব্যাপী ৪৮ ঘণ্টার হরতালের ডাক দিয়েছে।

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গণে দেখা দিয়েছে অস্থিরতা।

হরতাল, অবরোধ, পরিবহণে অগ্নিসংযোগসহ হত্যা, খুনের ঘটনাও ঘটছে। ফলে নষ্ট হচ্ছে দেশের সম্পদ। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। তাইতো সাধারণ মানুষের মধ্যে দেখা দিয়েছে উদ্বেগ-উৎকন্ঠা।

এদিকে হরতালের আগে শনিবার রাতে রাজধানীতে ৪ বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ফলে জনমনে দেখা দিয়েছে শঙ্কা।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক, সমাজ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল হক বলেন, ক্ষমতাসীনরা ও বিরোধীদল উভয়েই নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল করতে জনগণকে ব্যবহার করছে।

তিনি বলেন, হরতাল অবরোধ দিয়ে যারা বিরোধী অবস্থানে থাকেন তারা আসলে এক ধরণের জনদুর্ভোগ তৈরি করার চেষ্টা করেন, সেই জনদুর্ভোগ তৈরি করার মধ্য দিয়ে শাসকগোষ্ঠিকে দেখাতে চান, তারা চাইলে সব কিছু অচল করে দিতে পারেন। জনসসমর্থন তাদের সাথে রয়েছে। এই ধরণের একটা অবস্থা তারা আন্দোলন করে দৃশ্যমান করতে চান।

সমাজ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো তাদের সিদ্ধান্ত সব সময়ই আসলে চাপিয়ে দেয়, সেটাকেই আবার তারা জনসমর্থন বলে চালিয়ে দেয়। হরতাল, অবরোধকে বিএনপিসহ বিরোধীদলগুলো তাদের দাবি আদায়ে রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে ব্যবহার করছে। কিন্তু এই ধরণের হরতাল অবরোধে অতীতের যে চিত্র ২০১৪ সালে নির্বাচনের আগের যে প্রেক্ষাপট, আগুনসন্ত্রাস, অগ্নিকাণ্ড, গণস্থাপণা ও গণপরিবহণে আগুনসন্ত্রাসের যে পরিবেশ তৈরি হয়েছিল, তার প্রেক্ষাপটে কিন্তু এখন জনমনে একটা ভীতি রয়েছে।

ড. তৌহিদুল হক বলেন, এখন পরীক্ষার মৌসুম চলছে। এই যে জনদুর্ভোগ, জনভীতি তৈরি হচ্ছে। এই ভীতির কারণে মানুষ বের হচ্ছে না। আন্দোলনকারীরা মনে করছে, তাদের সমর্থন করে জনগণ বের হচ্ছে না। জনগণেরতো আসলে জীবনের প্রতি মায়া আছে। তারাতো খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া বের হবে না।

ঢাবি শিক্ষক বলেন, যারা শাসকগোষ্ঠি, বর্তমানে যারা আছেন, অতীতে যারা ছিলেন, প্রতিটি শাসকগোষ্ঠির চরিত্র একই রকম। তারা মনে করে, তারা যেভাবে চাইবে, যেভাবে তারা পরিকল্পনা করছে, সেভাবেই সবাইকে মেনে নিয়ে আসতে হবে। সেটা নির্বাচন বলুন আর যে কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি বলুন। জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে সেটি জনসমর্থন হিসেবে চালিয়ে দেয়ার সংস্কৃতি এটি আমাদের পুরোনো।

তৌহিদুল হক বলেন, জনসম্পদের বিনষ্ট না হয়, আগুন সন্ত্রাসের সৃষ্টি না হয়, জনভীতি যাতে সৃষ্টি না হয়, সেই বিষয়গুলোর দিকে লক্ষ্য রেখে আগুনসন্ত্রাস, হরতাল, অবরোধের পরিবর্তে সংলাপ বা সমঝোতা কেন্দ্রিক যে উপায়গুলো রয়েছে, সেদিকে রাজনৈতিক দলগুলো যদি উৎসাহ পায় তবেই তা দেশের জন্য মঙ্গলজনক ও কল্যাণকর হবে।

এদিকে হরতালের আগের রাতে অনেকটা গণপরিবহণ শূন্য হয়ে পড়ে রাজধানী ঢাকা। নগরীর আজিমপুর, নিউমার্কেট, সাইন্সল্যাব, ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, শ্যামলী, কল্যাণপুর, গাবতলী, মিরপুর, গুলিস্তান, পল্টন, শাহবাগ, বাংলামটর, কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট, মহাখালী, বনানী, মালিবাগ, মগবাজার, রামপুরা এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়। গণপরিবহণের অভাবে ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়েন নগরবাসী।

রাজধানীর বাংলামোটরে প্রায় এক ঘণ্টা ধরে বাসের অপেক্ষায় ছিলেন রেজাউল করিম। আরটিভি নিউজকে তিনি বলেন, যাবেন মিরপুরে। অফিসের কাজে ইস্কাটন এসেছিলেন। রেজাউল মিরপুরের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। সবসময় তিনি নিজের মোটরসাইকেলেই চলাফেরা করেন। কিন্তু আজ মোটরসাইকেল নিয়ে বের হননি। কারণ রোববারের হরতালে আতঙ্কে আছেন। যদি কোনো অঘটন ঘটে। তাই মোটরসাইকেল ছাড়াই বের হয়েছেন।

মৌচাক মার্কেটের সামনে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন ইকবাল হোসেন। আরটিভি নিউজকে তিনি জানান, জরুরি কাজে কারওয়ান বাজার যাওয়ার জন্য বের হয়েছেন। ত্রিশ মিনিটের বেশি সময় বাসের অপেক্ষায় থেকে না পেয়ে শেষ পর্যন্ত রিকশায় উঠেছেন।

ইকবাল আরও বলেন, দশ টাকার বাস ভাড়া, এখন ষাট টাকা খরচ করে রিক্সায় যাচ্ছি। আসলে দেশের কথা কেউ ভাবে না। সবাই ক্ষমতা চায়, কেউ নামতে চায় না, থাকতে চায়। কেউ আবার যেতে চায়। জনগণ কিছু না।

দেশব্যাপী টানা ৪৮ ঘণ্টার হরতালের সময় বাস চলাচল স্বাভাবিক রাখতে মালিকদের অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি। হরতাল চলাকালে যদি কোনো বাস ক্ষতিগ্রস্ত হয় তবে সেটির ক্ষতিপূরণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেবেন বলে আশ্বাস দেন তারা।

শনিবার সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তিতে পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, হরতাল-অবরোধ উপেক্ষা করে রোববার ঢাকাসহ সারাদেশে পণ্য ও যাত্রী পরিবহন চলাচল অব্যাহত থাকবে।

প্রসঙ্গত, বুধবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭টায় জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন। আগামী ৭ জানুয়ারি ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান সিইসি। আরটিভি নিউজ।