News update
  • $10mn Approved for Climate Resilience in CHT: ICIMOD     |     
  • At least 143 dead in DR Congo river boat fire tragedy     |     
  • Dhaka has worst air pollution in the world Saturday morning     |     
  • Container ships to ply between Mongla and Chattogram ports     |     
  • France to Break Away from UK & US in Recognising Palestine as Nation State     |     

বাসের অতিরিক্ত ভাড়া মিটিয়ে ঈদে বাড়ি ফেরা কতটা সম্ভব?

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক খবর 2024-04-06, 6:46am

882011e7b8dbdd5f759b2efc39b116450f2d69029d30bc69-f4b663038a4cda6089da42233f12c7cb1712364402.jpg




ঈদে সবচেয়ে বেশি মানুষ ঢাকা ছাড়েন বাসে করে। যাত্রীদের অভিযোগ, আনুষ্ঠানিকভাবে ঈদের টিকিট বিক্রি করছে না বাস কোম্পানিগুলো। এবার ঈদযাত্রা লম্বা বলে আগে থেকেই বড় কোম্পানিগুলো ঈদের টিকিট বিক্রি করেছে। আর নন ব্র্যান্ডের বাস কোম্পানিগুলোর অগ্রিম টিকিট বিক্রি হয় না। যাত্রার আগে টিকিট বিক্রি করা হয়। যার দাম প্রায় দ্বিগুণের বেশি। বাধ্য হয়ে বেশি দামে টিকিট নিতে হচ্ছে যাত্রীদের। এ অবস্থায় টিকিট সংকট ও অতিরিক্ত ভাড়া মেটাতে না পেরে ছুটিতে গ্রামে না যাওয়ারও সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন সাধারণ মানুষ।

একটি ছাপাখানায় চাকরি করেন সাইদুর রহমান। আগামী মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) থেকে তার ঈদের ছুটি শুরু। গ্রামের বাড়ি রংপুরে যাবেন বলে গাবতলী বাস কাউন্টারে টিকিট খুঁজতে এসেছিলেন। কিন্তু কাউন্টার থেকে জানানো হয়, আগামী ৭ থেকে ৯ এপ্রিল পর্যন্ত টিকিট নেই। 

কয়েকটি এসি বাসের শেষ সাড়িতে টিকেট পাওয়া যাওয়ার কথা কাউন্টার থেকে বলা হলেও দাম চাওয়া হচ্ছে আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা। সাধারণ সময়ে যা বিক্রি হয় ১২শ’ থেকে ১৫শ’ টাকায়। সে হিসেবে ঈদের ছুটিতে গ্রামের বাড়ি যেতে প্রায় দ্বিগুণ ভাড়া গুনতে হবে সাইদুরকে। তবে টিকিট কাউন্টার ব্যবস্থাপকরা বলছেন, সরকার নির্ধারিত ভাড়া থেকে কমমূল্যে নন এসি টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে। তবে এসি বাসের ভাড়া নির্ধারিত না থাকায় গাড়ির সাজসজ্জা ও ব্র্যান্ড অনুযায়ী ভাড়া নিচ্ছেন তারা।

শুক্রবার (৫ এপ্রিল) রাজধানীর গাবতলী ও কল্যাণপুর বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা যায়, পরিচিত বাসের কাউন্টারগুলোতে যাত্রীদের তেমন ভিড় নেই। ঈদের প্রায় সব অগ্রিম টিকিট বিক্রি হয়ে যাওয়ায় অবসর সময় কাটাচ্ছেন বিক্রেতারা। দুই একজন যাত্রী যারা আসছিলেন তারা পছন্দের বাসের টিকিট না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছিলেন। দুয়েকটি টিকিট মিললেও অতিরিক্ত ভাড়া ও পেছনের আসন হওয়ায় আগ্রহ দেখাচ্ছেন না যাত্রীরা।

বাড়তি ভাড়ায় যাত্রী ভোগান্তি

কল্যাণপুর বাস টার্মিনালে টিকিট কাটতে এসেছেন রিয়ন আবদুল্লাহ নামে এক বেসরকারি চাকরিজীবী। ঈদে পরিবার নিয়ে গ্রামে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল তার। তিনি বলেন, আমার বাড়ি পঞ্চগড়ে। টিকিট পাওয়া যাচ্ছে, তবে ভাড়া বেশি দাবি করছে কাউন্টারগুলো। এসি বাসের যে ভাড়া, তা দিয়ে গ্রামের বাড়ি গেলে ফেরত আসার টাকা থাকবে না। নন এসির রেগুলার টিকিট নাকি শেষ। যদিও পাওয়া যায় দালালরা যে দাম চাচ্ছে তা দ্বিগুণেরও  বেশি। সেক্ষেত্রে এবার চার সদস্যের পরিবার নিয়ে গ্রামে যাওয়া নিয়ে দ্বিধায় ভুগছেন তিনি। আবদুল্লাহ বলেন, শেষ পর্যন্ত না-ও যেতে পারি।

আরেক যাত্রী রিয়াজ বলেন,  বছরে যেকোনো একটি ঈদে বাড়ি যাই। যা বেতন পাই তা দিয়ে ঘন ঘন বাড়ি যাওয়া সম্ভব না। ঈদের বোনাস বাসের ভাড়াতেই চলে যাবে। বাবা-মায়ের জন্যে কিনবো কী? তার ওপর বাসা ভাড়া আছে। ঈদ শেষে পুরো মাসটা চলতে হবে। আমরা দুই ভাই ঢাকায় একসাথে থাকি। ভাবছি, টিকিটের টাকা দিয়ে বাবা-মায়ের জন্য কিছু কিনে ছোট ভাইকে বাসায় পাঠাবো। আমি পরের ঈদে যাবো।

ডেকোরেশনের ওপর এসি বাসের ভাড়া

বিভিন্ন পরিবহনের টিকিট কাউন্টার ব্যবস্থাপকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবার ঈদ উপলক্ষে প্রতিটি বাসের গড়ে ১০টি আসনের টিকিট অনলাইনে বিক্রি করা হচ্ছে। বাকি টিকিট রাজধানীর বিভিন্ন কাউন্টারগুলোতে বণ্টন করে দেয়া হয়েছে।

অগ্রিম টিকিট বিক্রি করা পরিবহনের কাউন্টারে যাত্রীর চাপ নেই। ছবি: মাহমুদ শামসুল আরেফিন

উত্তরবঙ্গগামী এসআর ট্রাভেলসের ব্যবস্থাপক আমিনুন্নবী জানান, এসি বাসের ডেকোরেশন অনুয়ায়ী দাম ঠিক করা হয়। সাধারণ সময়ে আমাদের হুন্দাই গাড়িগুলোর ভাড়া থাকে ১৫শ’। ঈদে সেগুলোর ভাড়া ২৫শ’ রাখা হয়েছে। ঈদের টিকিট শেষ। এখন আর কোনও আসন ফাঁকা নেই।

শ্যামলী এন আর ট্রাভেলসের ঢাকা-রংপুর রুটের সমন্বয়ক আনিসুর রহমান বলেন, আমরা ২২ মার্চ থেকে অগ্রিম টিকিট বিক্রি করছি। এতদিন নন এসি টিকিট ৮০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ৪ মার্চ থেকে সরকার নির্ধারিত মূল্যে ৮৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে এসি বাসের টিকিটের দাম ২৪শ’ রাখা হয়েছে বলে জানান তিনি।

বাড়তি ভাড়ায় সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাফাই

তবে ঈদে বাসে বাড়তি ভাড়া আদায়কারীদের পক্ষে সাফাই গেয়েছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাজাহান খান। বাস ভাড়া সম্পর্কে গত ১ এপ্রিল তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ঢাকা থেকে যে গাড়িটা যাচ্ছে, সেই গাড়িটা কিন্তু ফাঁকা আসছে। সেখানে অনেক সময় তারা ভাড়া কিছুটা বাড়ায়, তাও খুব বেশি না। ডাবল নেয় না। সে ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষ যদি গাড়ি না পায় তাহলে হয় ইজিবাইক অথবা মাইক্রোবাস অথবা নানাভাবে সে কিন্তু যাবেই। দেখা যায় নানাভাবে সে কষ্ট করে যাচ্ছে।

বাড়তি ভাড়া নেয়াকে বৈধতা দিচ্ছেন কিনা- এ প্রশ্নের জবাবে শাজাহান খান বলেন, বাড়তি ভাড়া কোনটা? বাস মালিকেরা সারা বছরই ১০০ টাকা ডিসকাউন্টে ভাড়া আদায় করে। ঈদের সময় সেটি হয়তো নিয়ে নেয়। সেটাকে মনে করা হয় বাড়তি ভাড়া।

ভাড়া নৈরাজ্যেই সড়কে ঝরে প্রাণ

এদিকে ঈদুল ফিতরে গণপরিবহনে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়কে নৈরাজ্য হিসেবে দেখছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি। সমিতি বলছে, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য বন্ধে এখনই কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া না গেলে ঈদযাত্রায় নিম্ন আয়ের লোকজনের বাসের ছাদে, ট্রেনের ছাদে, পণ্যবাহী পরিবহনে, ফিটনেস বিহীন সিটি বাসে, খোলা ট্রাকে, মোটরসাইকেলে, ট্রাকের পণ্যের উপরে ঝুঁকিপূর্ণ যাতায়াত কোনোভাবেই বন্ধ করা যাবে না। যাত্রীদের স্বার্থরক্ষায় জরুরি ভিত্তিতে ঈদযাত্রায় অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া আহ্বান জানিয়েছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি। তথ্য সূত্র সময় টিভি নিউজ।