প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন সফরে আলোচনা হতে পারে বাংলাদেশ রেলওয়ের কয়েকটি মেগা প্রকল্প নিয়ে। কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আলোচনায় থাকতে পারে ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে পটুয়াখালী পর্যন্ত নতুন রেললাইন নির্মাণ প্রকল্প।
স্বপ্নের সেতু পদ্মা দিয়ে রেল যোগাযোগ শুরুর পর এবার দক্ষিণাঞ্চলের জন্য এক বিশাল কর্মযজ্ঞ হাতে নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে সাগরকন্যা কুয়াকাটা পর্যন্ত ট্রেনে চড়ে পাড়ি দেয়ার স্বপ্ন এবার। কয়েক বছর আগেই শেষ হয়েছে প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই। নির্মাণ করা হবে ২৪৪ কিলোমিটার অত্যাধুনিক ব্রডগেজ রেল লাইন, ১৭ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট আর ৪৬টি বড় রেল সেতু। এই মেগা প্রকল্পের সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা।
বিভিন্ন দেশ এই প্রকল্পে বিনিয়োগের আগ্রহ দেখালেও শেষ পর্যন্ত চূড়ান্ত হয়নি আর্থিক সংকুলান। তবে কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই মেগা প্রকল্প এবার স্থান পেতে পারে প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরের আলোচ্য সূচিতে।
রেল সচিব ড. হুমায়ুন কবীর সময় সংবাদকে বলেন, ফান্ড হান্টিংয়ের জন্য কিছু বড় বড় প্রকল্পের প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি। ভাঙ্গার প্রকল্পটি এর মধ্যে অন্যতম। অনেক বিনিয়োগকারী আমাদের কাছ থেকে তথ্য নিচ্ছেন, আগ্রহ দেখাচ্ছেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত চূড়ান্ত কোনো প্রস্তাবনা আমরা পাইনি। তবে এবার প্রকল্পটির অর্থ চীন থেকে সংগ্রহের প্রস্তাব দিয়েছি।
সাবেক রাষ্ট্রদূত মুন্সি ফয়েজ আহমেদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর এবারের চীন সফরে বড় প্রকল্প যেটা নিয়ে আলোচনা হতে পারে, সেটা হচ্ছে, বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে রেলের বিস্তার। ভাঙ্গা থেকে বরিশাল-ভোলা হয়ে কুয়াকাটা পর্যন্ত রেললাইন নিয়ে চিন্তা।’
শুধু এই প্রকল্পই নয়, আরও চারটি মেগা রেল প্রকল্প সহায়তা নিয়ে আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা আছে এই সফরেই। পাঁচটি প্রকল্প হলো-
ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে পটুয়াখালী পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণ
জয়দেবপুর থেকে জামালপুর পর্যন্ত মিশ্র গেজ রেললাইন নির্মাণ
রাজবাড়ীতে রেলওয়ে ওয়ার্কশপ নির্মাণ
পাবনার ঢালারচর থেকে ফরিদপুরের পাচুরিয়া পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণ
ভৈরব বাজার থেকে ময়মনসিংহ পর্যন্ত মিটারগেজ লাইনকে মিশ্র গেজে রূপান্তর
এদিকে লাভজনক প্রকল্পে বিনিয়োগের পরামর্শ দিয়ে যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সঠিক সম্ভাব্যতা নিরূপন করতে না পারলে লোকসান বাড়বে রেলের।
এ বিষয়ে যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. হাদীউজ্জামান বলেন, সম্ভাব্যতা যাচাই সঠিকভাবে হতে হবে। কারণ ঋণ কিন্তু আমাদের সুদে-আসলে ফেরত দিতে হবে। সেক্ষেত্রে প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা যে অর্থনৈতিক এবং আর্থসামাজিক উন্নয়নের কথা বলি, বাণিজ্যিক যে রিটার্নের কথা বলি, এটা দ্রুত পাওয়া না গেলে এই বিনিয়োগের ফলে আমাদের একটা চাপে পড়ার শঙ্কা থেকে যায়।
প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরে সড়ক অবকাঠামো, স্বাস্থ্যখাতসহ ২০টি সমঝোতা স্মারক সই হবে বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সময় সংবাদ