News update
  • Guterres Urges Leaders to Act as UNGA Week Begins     |     
  • BNP to go door to door for hearts and votes     |     
  • Chittagong port tariffs increased up to 50 per cent     |     
  • Rising Heat Cost Bangladesh $1.8 Billion in 2024     |     
  • Stocks extend gains; turnover drops in Dhaka, rises in Ctg     |     

ব্রিটিশ রাজা ও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করবেন ড. ইউনূস

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক খবর 2025-06-04, 7:24am

img_20250604_072113-4a33c351db3480b7dacd9a72ef1039cc1749000275.jpg




কিং চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড-২০২৫ গ্রহণ করতে যুক্তরাজ্যে যাচ্ছেন অন্তবর্তকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সেখানে রাজা তৃতীয় চার্লস ও প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন বলে  সরকারের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, আগামী ৯ জুন লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়ার কথা রয়েছে প্রধান উপদেষ্টার। ওই দিন ব্রিটেনের রাজপরিবারের পক্ষ থেকে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ড. ইউনূসকে কিং চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড-২০২৫ দেওয়া হবে। এর মধ্যে আগামী সপ্তাহে (মঙ্গলবার অথবা বুধবার) লন্ডনে বাকিংহাম প্রাসাদে রাজা চার্লসের সঙ্গে তার এই সাক্ষাৎ হতে পারে। এ সময় সংস্কার, রোহিঙ্গা সমস্যা ও অর্থপাচার সহ নানা ইস্যুতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি সমর্থন আদায়ে চেষ্টা করবেন প্রধান উপদেষ্টা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে দায়িত্বশীল সরকারি কর্মকর্তারা বলেন, অ্যাওয়ার্ড নিতে প্রধান উপদেষ্টা লন্ডন যাচ্ছেন, এটা প্রায় চূড়ান্ত। প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী আগামী ১০ জুন রাতে সরকারপ্রধান লন্ডন পৌঁছাবেন এবং দেশে ফিরবেন ১৩ জুন। সফরের তৃতীয় দিনে (অ্যাওয়ার্ড গ্রহণের দিন) যুক্তরাজ্যের রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ হবে তার। আর যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের বিষয়টি এখনও প্রক্রিয়াধীন অর্থাৎ এখনও চুড়ান্ত হয়নি। তবে কর্মকর্তারা এ ব্যাপারে আশাবাদী। 

লন্ডনে অবস্থানকারী কূটনীতিক সূত্রে জানা যায়, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার আগামী বুধবার অথবা বৃহস্পতিবার বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে। এ ছাড়া, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামিসহ দেশটির কয়েকজন মন্ত্রীর প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতের কথা রয়েছে। তবে এই কর্মসূচিগুলো এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তবে সরকারপ্রধানের সঙ্গে আলোচনা হলে দুই দেশই নানা বিষয়ে গুরুত্ব দেবে বলে জানান তারা। 

কূটনীতিক সূত্রে আরও জানা যায়, বর্তমান প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে সংস্কার গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই যুক্তরাজ্যের সমর্থন অব্যাহত রয়েছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে নির্বাচন ইস্যুতে সরকারকে চাপ দিচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলো। যদিও অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে সংস্কারকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। সফরে এই বিষয়গুলো অবহিত করতে পারেন প্রধান উপদেষ্টা। যদিও সবাই সংস্কারকে গুরুত্ব দিচ্ছে। আর যুক্তরাজ্যও চায় সংস্কারপ্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই বাংলাদেশে নির্বাচন হোক। সংস্কারপ্রক্রিয়ায় তাদের সমর্থনও রয়েছে। 

এ ছাড়া, যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের সঙ্গে সুশাসন ও মানবাধিকার ইস্যুতে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে আগ্রহী। গত ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাজ্যের মানবাধিকার বিষয়ক রাষ্ট্রদূত এলেনর স্যান্ডার্স ঢাকা সফর করেছেন। তিনি ন্যায়বিচার, জবাবদিহি, ধর্ম বা বিশ্বাসের স্বাধীনতা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, লিঙ্গ-সমতা এবং শ্রম অধিকার নিয়ে বাংলাদেশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছিলেন। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা আসবে তাদের পক্ষ থেকে। তবে এ বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থান পরিষ্কার করতে প্রস্তুতি রয়েছে।

অন্যদিকে, যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ অংশীদার। দুই দেশের মধ্যে পোশাক শিল্প, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, শিক্ষা, বিমান পরিবহন, অবকাঠামো, প্রযুক্তি ও পরিষেবা খাতে বিনিয়োগ ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক ক্রমাগত বাড়ছে। যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের রপ্তানির প্রধান পণ্য পোশাক ও বস্ত্র। এ ছাড়া চিংড়ি, বাইসাইকেল ও হস্তশিল্প রপ্তানি হয়। যুক্তরাজ্য বাংলাদেশে শিল্প, অবকাঠামো, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও প্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগ করছে। বিপরীতে যুক্তরাজ্য থেকে বাংলাদেশ লোহা ও স্ক্র্যাপ, যন্ত্রপাতি, জেনারেটর, এয়ারক্র্যাফটসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আমদানি করে। ফলে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও কিভাবে বৃদ্ধি করা যায়, তা ঢাকার আগ্রহ থাকবে।

এদিকে, বাংলাদেশ যুক্তরাজ্যের সঙ্গে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার বিষয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। গত মার্চে বাংলাদেশ সরকার যুক্তরাজ্যের আর্থিক ও ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর লন্ডনে অল-পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎও করেছেন, যাতে বাংলাদেশি ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া যায়। সে সময়ে থেকে ব্রিটিশ সরকারকে বাংলাদেশি অর্থ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপে রাজি করানোর চেষ্টা চলছে। ফলে এ বিষয়টিও উভয় পক্ষের আলোচনায় গুরুত্ব পাবে।

এ ছাড়া, কক্সবাজারে অবস্থান করা কয়েক লাখ রোহিঙ্গা নিয়ে যে সংকট রয়েছে, তা সমাধানে বাংলাদেশের পাশে রয়েছে যুক্তরাজ্য। তারা রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও সম্মানজনক প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে কাজ করছে এবং জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার মাধ্যমে মানবিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে।

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে যুক্তরাজ্যের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন। একইসঙ্গে মায়ানমার সফর করেন। তখন তিনি রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা ও মানবাধিকার নিশ্চিত করার বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এর ধারাবাহিকতায় মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যুক্তরাজ্য জাতিসংঘের মাধ্যমে ।