News update
  • Christmas in Bangladesh Thursday     |     
  • Bangladesh Bars Internet Shutdowns, Restores BTRC Autonomy     |     
  • Tarique Rahman Leaves London for Bangladesh After 17 Years     |     
  • Govt welcomes Tarique Rahman’s return, assures full coop     |     
  • BNP strikes polls deal with 7 more partners, reserves 8 seats     |     

নিত্যপণ্যের দামে এবার ‘রেমাল’-এর অজুহাত!

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক খাদ্য 2024-05-31, 12:36pm

b5ee51a5afba056f4541cd2f8219397afd49de01cc5445fd-a758657e7a6dd722086a2c4d6918de0f1717137446.jpg




তীব্র তাপপ্রবাহের পর নিত্যপণ্যের বাজারে এবার ঘূর্ণিঝড় রেমালের অজুহাত। দাম বেড়ে গেছে সবজিসহ প্রায় সব নিত্যপণ্যের। তবে সামান্য কমেছে মুরগির দাম। ক্রেতাদের দাবি, কোনো একটা অজুহাত পেলেই দাম বেড়ে যায় নিত্যপণ্যের, আর কমলে কমে খুবই সামান্য।

শুক্রবার (৩১ মে) কেরানীগঞ্জের আগানগর, জিনজিরা এবং রাজধানীর নয়াবাজার ও কারওয়ান বাজারসহ বেশ কয়েকটি কাঁচাবাজার ঘুরে এমনটি দেখা যায়।

বিক্রেতারা জানান, সপ্তাহ ব্যবধানে কেজিপ্রতি ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়ে গেছে সবজির দাম। মূলত ঘূর্ণিঝড় ও বৃষ্টির কারণে ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হওয়ায় বাজারে কিছুটা সরবরাহ ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এতে বেড়ে গেছে দাম।

বাজারে প্রতি কেজি বেগুন ৬০-৮০ টাকা, শসা ৪০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, পেঁপে ৫০-৬০ টাকা, টমেটো ৪০-৫০ টাকা, পটোল ৬০ টাকা, গাজর ৫০ টাকা, ঢ্যাঁড়শ ৪০ টাকা ও কহি ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ধুন্দল ৪০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, লতি ৬০-৮০ টাকা, আলু ৫৫-৬০ টাকা, ঝিঙা ৬০ টাকা ও কাঁকরোল ৫০-৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া, প্রতি পিস লাউ ৬০ টাকা ও চালকুমড়া বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকায়। প্রতি আঁটি লালশাক ১৫ টাকা, পাটশাক ১৫ টাকা, পুঁইশাক ২৫ টাকা, কলমিশাক ১৫ টাকা ও পালংশাক বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকায়।

তবে দাম কমেছে কাঁচা মরিচের। খুচরায় বিক্রি হচ্ছে ১৬০-১৮০ টাকা; কোনো কোনো বাজারে অবশ্য এখনও ২০০ টাকা। আর পাইকারি পর্যায়ে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৪০-১৫০ টাকা।

খুচরা বিক্রেতারা জানান, সপ্তাহ ব্যবধানে কেজিতে কাঁচা মরিচের দাম কমেছে ২০-৪০ টাকা পর্যন্ত। মূলত ভারত থেকে আমদানি শুরু হওয়ায় লোকসানের ভয়ে দাম কমিয়ে দিয়েছেন আড়তদাররা।

রাজধানীর কারওয়ান বাজারের সবজি বিক্রেতা আনিস বলেন,আমদানির ভয়ে দাম কমাচ্ছেন আড়তদার ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা, যার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে খুচরা বাজারেও। আমদানি অব্যাহত থাকলে দাম আরও কমে আসবে।

স্বস্তির খবর নেই ডিম ও গরুর মাংসের বাজারে। তবে দাম কমেছে সব ধরনের মুরগির। বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৮০-৮০০ টাকায়। এছাড়া, প্রতি কেজি খাসির মাংস এক হাজার ৫০ টাকা থেকে এক হাজার ২০০ টাকা ও ছাগলের মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার টাকায়।

বাজারে মুরগির প্রতি ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা, আর সাদা ডিম ১৪৫ টাকায়। আর প্রতি ডজন হাঁসের ডিম ২০০ টাকা ও দেশি মুরগির ডিম ২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে, কেজিতে ১০ টাকা পর্যন্ত কমে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ২০০ টাকা ও কেজিতে ১০-২০ টাকা পর্যন্ত কমে সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩৪০-৩৬০ টাকায়। প্রতি কেজি দেশি মুরগি ৭০০-৭৫০ টাকা, সাদা লেয়ার ২৯০ টাকা ও লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ৩৪০-৩৫০ টাকায়। এছাড়া জাতভেদে প্রতি পিস হাঁস বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৭০০ টাকায়।

বিক্রেতারা জানান, বৃষ্টি শুরু হওয়ায় স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে মুরগির বাজারে। তীব্র গরমের কারণে প্রচুর মুরগি মারা গেলেও এর হার এখন কমে এসেছে। এতে সরবরাহ বাড়ায় দাম কমতে শুরু করেছে।

তবে ক্রেতাদের দাবি, কোনো একটা কারণ বা অজুহাত পেলেই ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে দেয় নিত্যপণ্যের। যদিও দাম কমার সময় কমে খুবই সামান্য। 

সোহান নামে এক ক্রেতা বলেন,কোনো একটি পণ্যের দাম ১০ টাকা বাড়লে, কমার সময় কমে মাত্র ১-২ টাকা। আবার যখন বাড়ে, তখন বাড়ে ৫-১০ টাকা। তাহলে ২ টাকা কমিয়ে লাভ কী!

তন্ময় নামে আরেক ক্রেতা বলেন, নিত্যপণ্যের বাজার এখন ব্যবসায়ীদের খেয়াল-খুশিমতো চলে। চাহিদা-যোগানের কোনো ভিত্তি নেই। কোনো একটা ছুতো পেলেই পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেন ব্যবসায়ীরা।

এদিকে, ইলিশ বাদে স্বস্তির খবর নেই মাছের বাজারে। নতুন করে না বাড়লেও দাম কমেনি। বিক্রেতাদের অজুহাত, ঘূর্ণিঝড় রেমালে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে মৎস্য খাতে। এর প্রভাবে মাছের দাম একটুও কমেনি।

কেরানীগঞ্জের জিনজিরা বাজারের মাছ বিক্রেতা জয়ন্ত বলেন,মাছের দাম একটু চড়াই। এ সপ্তাহে নতুন করে খুব একটা দাম বাড়েনি। কোনো কোনো মাছের দাম হয়তো ৫-১০ টাকা বেড়েছে। তবে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে মাছের ঘেরগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সামনে দাম বাড়তে পারে।

বাজারে প্রতি কেজি তেলাপিয়া ২০০-২২০ টাকা, চাষের পাঙাশ ১৮০-২২০ টাকা, চাষের শিং ৫৫০ টাকা, চাষের মাগুর ৬০০ টাকা ও চাষের কৈ বিক্রি হচ্ছে ২৮০-৩০০ টাকায়। এছাড়া আকারভেদে প্রতি কেজি রুই ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকা, কাতলা ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, কোরাল ৭০০ টাকা, টেংরা ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, বোয়াল ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা ও আইড় ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

তবে কেজিতে ১০০ টাকা পর্যন্ত কমেছে ইলিশের দাম। এ মুহূর্তে প্রতি কেজি ইলিশের দাম পড়ছে ১ হাজার ৭০০ টাকা। যদিও ৮০০-৯০০ গ্রাম ইলিশ ১৫০০ টাকা ও ৬০০-৭০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১২০০-১৩০০ টাকায়।

উত্তাপ ছড়াচ্ছে মসলার বাজারও। কোরবানিকে কেন্দ্র করে বাজারে দাম বাড়ছে আদা, রসুন ও পেঁয়াজের। বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭৫-৮০ টাকায়। এছাড়া কেজিতে ২০-৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে প্রতি কেজি দেশি রসুন ২৩০-২৪০ টাকায় ও আমদানি করা রসুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৬০ টাকায়। আর আদা কেজিতে ২০-৪০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে আদা বিক্রি হচ্ছে ২৬০ টাকায়।

নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত বাজার মনিটরিংয়ের দাবি ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়েরই। ক্রেতারা বলছেন, নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা হয় না। এতে বিক্রেতারা ইচ্ছেমতো দাম বাড়ানোর সুযোগ পায়।

আর বিক্রেতারা বলেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ইচ্ছেমতো দাম বাড়াচ্ছে। বাজারে নিয়মিত অভিযান চালালে অসাধুদের দৌরাত্ম্য কমবে। সময় সংবাদ।