News update
  • CEC to launch voter list updating work-2025 Monday in Savar     |     
  • Gazans trek across rubble for homes as ceasefire takes hold     |     
  • Israel says Gaza ceasefire delayed      |     
  • TikTok shuts down US access     |     
  • Gaza ceasefire: Gazans hope to return to their ruined homes     |     

নির্বাচনের জন্য বিজেপি যেভাবে প্রার্থী বাছাই করছে

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক গনতন্ত্র 2024-03-02, 8:17am

95522970-d7bb-11ee-a5aa-81c8d319a0f7-d90ef1d3f07f83cf675679498d7febaf1709345830.jpg




ভারতের লোকসভা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের প্রথম তালিকা চূড়ান্ত করতে বৃহস্পতিবার মাঝরাত থেকে শুক্রবার ভোর পর্যন্ত বৈঠক করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীসহ দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটির প্রার্থী বাছাইয়ের যে প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে সেটি শুরু হয়েছিল চার বছর আগেই।

বিজেপির সভাপতি জেপি নাড্ডা, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের নেতৃত্বে বৃহস্পতিবার রাত প্রায় ১১টায় কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটির বৈঠক শুরু হয়। সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, ভোর প্রায় তিনটে পর্যন্ত এ বৈঠক চলে। দলীয় সূত্র উদ্ধৃত করে এএনআই জানাচ্ছে ১৭টি রাজ্যের ১৫৫টি আসনের প্রার্থীর নাম চূড়ান্ত করা হয়েছে এই বৈঠকে।

নির্বাচন ঘোষণা হওয়ার আগেই, আগামী দু-একদিনের মধ্যেই প্রথম প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে দিতে পারে দলটি।

বিজেপিতে দলীয় সংগঠনের প্রধান দায়িত্বে থাকা সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) বিএল সন্তোষ ছাড়াও উত্তরপ্রদেশ, গুজরাট,আসামসহ বেশ কয়েকটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরাও হাজির ছিলেন বৃহস্পতিবার রাতের এই বৈঠকে।

বিশ্লেষকরা বলছেন উত্তর ভারতে নতুন করে আসন বাড়ানোর বিশেষ জায়গা নেই দলটির, কারণ ইতোমধ্যেই তাদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

বিজেপির এক নেতা নাম উল্লেখ না করার শর্তে বলছিলেন, পশ্চিম ভারতেরও পরিস্থিতি অনেকটা এক। অন্যদিকে দক্ষিণ ভারতে আমাদের কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে কোথাও কংগ্রেস, কোথাও ডিএমকে, আবার কোনও রাজ্যে বামপন্থীদের দিক থেকে।

“তাই দল এবার চাইবে পূর্ব ভারত থেকেই যতটা সম্ভব আসন সংখ্যা বাড়াতে। সেই কথাটা মাথায় রেখেই শীর্ষ নেতৃত্ব প্রার্থী বাছাই করছেন,” বলছিলেন ওই নেতা।

কীভাবে হয় প্রার্থী বাছাই?

নাম প্রকাশ করতে না চাওয়া আরেক নেতার কথায়, “প্রার্থী বাছাইয়ের একাধিক ধাপ রয়েছে। প্রথমে একেবারে তৃণমূল স্তর থেকে নাম আসা শুরু হয়। তার মধ্যে যেমন দলীয় কর্মীদের পাঠানো নাম থাকে, তেমনই এলাকার মান্যগণ্যদের থেকেও সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম নেওয়া হয়। এরপরে রয়েছে প্রযুক্তি।

“নামো অ্যাপের মাধ্যমে জানতে চাওয়া হয় কাকে নেতা হিসাবে মানুষ দেখতে চাইছেন। এরপরের ধাপে, যেসব ব্যক্তিদের নাম উঠে এসেছে, এলাকায় তাদের ভাবমূর্তি কেমন এসব বিচার করা হয়। এই পর্বটা সারা হয় রাজ্য নেতৃত্বের স্তরে। তৃণমূল স্তর থেকে যেসব নাম উঠে এসেছে, তার পাশাপাশি রাজ্য নেতৃত্বের নিজস্ব পছন্দের তালিকাও থাকে। তাই প্রতিটি আসনের জন্য দুই – তিনটি নাম কেন্দ্রীয় দপ্তরে পাঠানো হয়,” জানাচ্ছিলেন ওই বিজেপি নেতা।

সাংগঠনিক স্তর থেকে সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা ছাড়াও আরও একটি পৃথক তালিকা তৈরি হয়।

“এই বিশেষ তালিকাটি তৈরি করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ নিজে। এটা তার একটা সমান্তরাল ব্যবস্থাপনা। এর জন্য তার নিজস্ব টিম আছে। পেশাদার সমীক্ষক সংস্থা যেমন ব্যবহার করা হয়, সঙ্গে তিনি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের কাছ থেকেও রিপোর্ট নেন। চূড়ান্ত প্রার্থী বাছাইয়ে এই তালিকাটিই অতি গুরুত্বপূর্ণ,” জানাচ্ছিলেন ওই নেতা।

প্রার্থী বাছাইয়ে আরএসএসের ভূমিকা

দীর্ঘদিন বিজেপির খবরাখবর যোগাড় করেছেন কলকাতার সিনিয়র সাংবাদিক অরুন্ধতী মুখার্জী।

তার কথায়, “কংগ্রেস হাইকমান্ড বা তৃণমূল কংগ্রেসে মমতা ব্যানার্জীই প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করে। কিন্তু বিজেপির প্রার্থী তালিকা তৈরির পদ্ধতি এসবের থেকে আলাদা। একেবারে নিচু তলার কর্মীদের কাছ থেকে ধাপে ধাপে তারা যেমন নাম জোগাড় করতে থাকে, তেমনই সমান্তরাল ভাবে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘও একটি তালিকা দিয়ে থাকে তাদের নিজস্ব সমীক্ষার ওপরে নির্ভর করে।

“আরএসএস প্রচারকরা যে সমীক্ষাটা চালান, সেটা একেবারে তাদের নিজস্ব স্টাইলে। অনেক সময়েই বোঝা কঠিন হয় যে তারা আসলে সমীক্ষা চালাচ্ছেন। সারা বছর ধরেই প্রচারকরা নানা জায়গায় ঘুরতে থাকেন, সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলেন। তার ভিত্তিতে তারা সমান্তরাল একটা প্রার্থী তালিকা দেন,” জানাচ্ছিলেন মিজ মুখার্জী।

তার কথায়, আরএসএসের তালিকাটিকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হয় কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটির বৈঠকে। ভিন্ন ভিন্ন স্তর থেকে আসা তালিকা থেকে ওই কমিটি আলোচনা করে প্রার্থীর নাম চূড়ান্ত করে।

“কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটি যে তালিকা চূড়ান্ত করে, তার ওপরে বিজেপির আর কোনও নেতার কথা বলার অধিকার নেই। সে তিনি যত বড় নেতাই হোন না কেন,” বলছিলেন মিজ মুখার্জী।

বছরজুড়ে নজরদারি

পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির অন্যতম মিডিয়া প্যানেলিস্ট দীপ্তিমান সেনগুপ্ত বলছিলেন, “যে কোনও নির্বাচনের এক বছর পর থেকেই পরবর্তী ভোটের প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায় আমাদের দলে। এক বছর পর থেকেই নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের কাজের ওপরে নজরদারি চলতে থাকে। সেটিকেই এক অর্থে পরবর্তী নির্বাচনের প্রার্থী বাছাইয়ের একেবারে প্রথম স্তর বলা যেতে পারে।”

তিনি বলছিলেন, “এই পর্বে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের কাছ থেকে জনপ্রতিনিধির সম্বন্ধে ফিডব্যাক নেওয়া শুরু হয়। একজন সংসদ সদস্য বা বিধায়ক কোন কোন সরকারি প্রকল্পের কাজ করাতে পেরেছেন, কোনটা পারেননি, নিজে থেকে কোন প্রকল্পের উদ্যোগ নিয়েছেন, কোন কাজ করানোর জন্য কী কী ব্যবস্থা নিয়েছেন তিনি – এ সবের খতিয়ান রাখা হয়।”

“ওই সময় থেকেই নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের প্রয়োজনমত নির্দেশ দেওয়া হয়, কখনও সতর্ক করা হয়, কখনও উৎসাহ দেওয়া হয়। এই ব্যবস্থাপনা পরবর্তী চার বছর ধরেই চলতে থাকে। তাই একজন সংসদ সদস্য বা বিধায়ককে পরের বার আবারও প্রার্থী করা হবে কি না, সেই রিপোর্ট কার্ড তৈরির প্রক্রিয়া চার বছর ধরেই চালাতে থাকে দল,” বলছিলেন মি. সেনগুপ্ত। তথ্য সূত্র বিবিসি বাংলা।