News update
  • Netanyahu-Trump meet reveals unexpected gaps on key issues     |     
  • Move to prolong Interim Govt in name of keeping Yunus in power: Manna     |     
  • Billionaire Backers Turn Critics of Trump’s Tariff Plan     |     

অতি হিন্দুত্বই কি কাল হলো বিজেপির?

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক গনতন্ত্র 2024-06-05, 10:57am

fdgdgdsg-a7b449ab50374490dd7341a807e917ae1717563443.jpg




লোকসভা নির্বাচনের মাস তিনেক আগে অযোধ্যায় রামমন্দিরের উদ্বোধন। রামলালার পায়ের সামনে লুটিয়ে পড়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। নিজের ধর্মীয় বিশ্বাসে আস্থা রাখা প্রত্যেক নাগরিকের মতো প্রধানমন্ত্রীরও অধিকার। কিন্তু মোদির ছবিটি ছিল বেশ সাংকেতিক। কারণ তিনি যেমন নিজেকে সঁপে দিয়েছিলেন রামচন্দ্রের চরণে, তেমনি সঁপে দিয়েছিলেন নিজের ভোটভাগ্যকেও। বস্তুত, গোটা ভোটপর্বে হিন্দুত্বকেই নিজের মূল এজেন্ডা বানিয়েছিলেন মোদি।

এর আগের দুই নির্বাচনে হাওয়া ছিল বিজেপির পক্ষে। ২০১৪ সালে ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ কংগ্রেস সরকারের প্রতি মানুষের ক্ষোভ এবং ‘আচ্ছে দিন’র স্বপ্ন পাথেয় করে ভোটবাক্সে ঝড় তুলেছিলেন মোদি। ২০১৯-এ ছিল পুলওয়ামা-বালাকোট ঝড়। 

তবে এবার ঝড় তোলার মতো ইস্যু ছিল না। ফলে, নরেন্দ্র মোদি কিছুটা তড়িঘড়ি করেই রামমন্দির উদ্বোধন করে দিলেন। দেশের চার শীর্ষ শঙ্করাচার্যের আপত্তিকেও তোয়াক্কা করলেন না। এ তো গেল মন্দির উদ্বোধন। ভোট প্রচারে নেমেও মোদি ‘আচ্ছে দিন’, ‘উজ্জ্বলা যোজনা’, ‘বিনামূল্যে রেশন’ প্রকল্পের মতো সরকারের জনকল্যাণমুখী প্রকল্পের প্রচারকে পেছনের সারিতে ফেলে পুরোপুরি হিন্দু হৃদয় সম্রাট রূপে অবতীর্ণ হলেন। 

প্রথম দফার ভোটের পরই পুরোপুরি হিন্দুত্ব, মেরুকরণের প্রচার শুরু করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কখনও তিনি বললেন, কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে হিন্দু মা বোনেদের মঙ্গলসূত্র কেড়ে নেয়া হবে। কখনও বললেন, কংগ্রেস এলে হিন্দুদের সম্পত্তি ভাগ করে দেবে, যাদের বেশি সন্তান তাদের মধ্যে। কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে রামমন্দির ভেঙে দেয়া হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

কিন্তু শেষবেলায় এসে যখন বুঝলেন এত কিছুতেও বিশেষ লাভ হচ্ছে না, তখন সোজা নিজেকে ‘ঈশ্বরের দূত’ হিসেবে প্রচার করা শুরু করলেন।

প্রশ্ন হলো, এত কিছু করে লাভ হলো কী? ভোটের ফল অন্তত সে ইঙ্গিত দিচ্ছে না। হিসাব বলছে, ২০১৯ সালের তুলনায় তো বটেই, ২০১৪ সালের থেকেও কম আসন পাচ্ছে এনডিএ জোট। আর বিজেপি এককভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা থেকে অনেকটাই পেছনে। যেসব রাজ্যে হিন্দুত্বের হাওয়ায় সবচেয়ে বেশি ভরসা করছিল সেই উত্তরপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, রাজস্থানে গেরুয়া শিবিরের একপ্রকার বিপর্যয় হয়েছে। ক্ষমতায় ফেরার সম্ভাবনা থাকলেও, ৪০০ পারের স্লোগান দেয়া বিজেপির পক্ষে এই ফলাফল কিঞ্চিত বিপর্যয়ই বলতে হবে। 

কিন্তু কেন এই বিপর্যয়?

বিজেপি নেতাদের ব্যাখ্যা, ২০১৪ এবং ২০১৯ সালে উন্নয়নের নামে মুসলিমদের একাংশের ভোট পেয়েছিলেন মোদি। কিন্তু এবারে প্রচারে অতিমাত্রায় মুসলিম বিদ্বেষের ফলে মুসলিমরা একচেটিয়াভাবে ভোট দিয়েছেন ইন্ডিয়া জোটকে। কোনোরকম বিভাজন হয়নি। 

এছাড়া, প্রধানমন্ত্রীর মুখে লাগাতার সাম্প্রদায়িক কথাবার্তা ভালোভাবে নেয়নি দেশের যুবসমাজ। আসলে ভারতীয় সংস্কৃতির মূলে ধর্মনিরপেক্ষতা গাঁথা রয়েছে। সেটাকে অতিমাত্রায় আঘাত করায় সুশীল সমাজে বিরূপ প্রভাব পড়েছে। 

অন্যদিকে, অতিমাত্রায় হিন্দুত্বের প্রচারে সরকারের বহু ভালো কাজও আড়ালে পড়ে গেছে। জি-২০’র সফল আয়োজন, ৮০ কোটি মানুষকে রেশন দেয়া, উজ্জ্বলা যোজনা, কোভিডের সময় সরাসরি টাকা দেয়া, দেশবাসীকে বিনামূল্যে টিকা- এসব সেভাবে প্রচারেই আসেনি। 

এসবের চেয়েও বড় যে সমস্যা, রামমন্দির এবং অতিমাত্রার প্রচারে বিজেপি কর্মীরা অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী হয়ে পড়েন। ধরেই নিয়েছিলেন, নির্বাচন জিতিয়ে দেবেন ‘রামলাল্লা’। রামলাল্লা এবং হিন্দুত্বের এই অতিমাত্রায় প্রচারই লোকসভায় বিজেপির ‘বিপর্যয়ের’ অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়াল। সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন