
কক্সবাজার বিমানবন্দরকে ‘আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর’ ঘোষণা করে জারি করা প্রজ্ঞাপন স্থগিত করেছে সরকার। ঘোষণার মাত্র ১১ দিনের মাথায় এই সিদ্ধান্তে হতাশ হয়েছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। তবে কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি বলছে, পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি সম্পন্ন করে দ্রুত আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালুর উদ্যোগ নেয়া উচিত।
গেলো ১২ অক্টোবর কক্সবাজার বিমানবন্দরকে দেশের চতুর্থ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে ঘোষণা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালুর জন্য প্রস্তুতও ছিল বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। সমুদ্রের বুক ছুঁয়ে রানওয়ে প্রস্তুত করা হয়েছিল, পাশাপাশি আন্তর্জাতিক টার্মিনাল ভবনের একটি অংশও প্রস্তুত ছিল।
কিন্তু ঘোষণার ১১ দিনের মাথায় সরকার প্রজ্ঞাপন স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিলে পর্যটন ব্যবসায়ীরা হতাশা প্রকাশ করেন।
হোটেল প্রাসাদ প্যারাডাইসের মহাব্যবস্থাপক মো. ইয়াকুব আলী বলেন, ‘কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারির পর সেটি স্থগিত হওয়ার খবর আমাদের জন্য হতাশাজনক। আমরা আশা করেছিলাম, আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর চালুর মাধ্যমে কক্সবাজারে বিপুল সংখ্যক বিদেশি পর্যটক আসবে, যা স্থানীয় পর্যটন শিল্পকে নতুন প্রাণ দেবে। কিন্তু স্থগিতের সিদ্ধান্তে সেই আশার জায়গাটা অনিশ্চয়তায় পড়ে গেল।’
ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কক্সবাজার (টুয়াক)-এর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সফিউল আলম কাজল বলেন, ‘গত ১২ অক্টোবর কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ঘোষণার পর আমরা অত্যন্ত উচ্ছ্বসিত ছিলাম। পর্যটন ব্যবসায়ীরা আশাবাদী ছিলাম যে, এই ঘোষণার ফলে কক্সবাজারে পর্যটনের নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে। কিন্তু হঠাৎ করে স্থগিত করার সিদ্ধান্ত আমাদেরকে হতাশ করেছে।’
তবে কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি মনে করে, আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালুর আগে অবকাঠামো ও সেবার মান আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উন্নীত করা জরুরি। তাদের মতে, স্থগিতের সিদ্ধান্ত ইতিবাচকও হতে পারে, যদি এটি পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতির জন্য নেয়া হয়।
চেম্বার সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী খোকা বলেন, ‘যদি কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর অর্ধেক সম্পন্ন অবস্থায় উদ্বোধন করা হয়, তাহলে বিদেশি পর্যটকদের মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সঙ্গে অনেক ধরনের সেবা ও সুবিধা যুক্ত থাকে। এসব সেবা যদি আন্তর্জাতিক মানের না হয়, কিংবা আগত পর্যটকরা প্রত্যাশিত মানের সেবা না পান, তাহলে তা কক্সবাজারের পর্যটন খাতের জন্য ভালো হবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিমানবন্দরের সব কাজ যথাযথভাবে সম্পন্ন করে, পূর্ণাঙ্গ আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে যত দ্রুত সম্ভব এর উদ্বোধন করা হোক।’
প্রজ্ঞাপন স্থগিত হলেও কক্সবাজারবাসীর প্রত্যাশা দ্রুতই বাস্তবায়িত হবে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালুর প্রতিশ্রুতি।