জার্মানিতে উচ্চশিক্ষার জন্য আবেদন করেছেন প্রায় ৮০ হাজার বাংলাদেশি শিক্ষার্থী। তবে, বাংলাদেশে নিযুক্ত জার্মান দূতাবাস বছরে সর্বোচ্চ ২ হাজার শিক্ষার্থীকে ভিসা দিতে সক্ষম।
বুধবার (১২ মার্চ) রাষ্ট্রদূত আখিম ট্র্যোস্টার নিজের এক্স হ্যান্ডেলে পোস্টে এ তথ্য জানান।
রাষ্ট্রদূতের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের প্রথম প্রান্তিকে ১০ হাজার ৯৫৫ জন, দ্বিতীয় প্রান্তিকে ১০ হাজার ৬৩৫, তৃতীয় প্রান্তিকে ১৬ হাজার ৪৬৯ এবং শেষ প্রান্তিকে ১৪ হাজার ৪৭৬ জন জার্মানির ভিসার জন্য আবেদন করেন।
এছাড়া ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ৯ মার্চ পর্যন্ত আবেদন জমা দিয়েছেন ৮ হাজার ৭৬২ জন শিক্ষার্থী। এ নিয়ে মোট আবেদনের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৯ হাজার ৮৮০।
দীর্ঘ অপেক্ষার শঙ্কা
এই বিপুল আবেদনকারীর বিপরীতে দূতাবাস প্রতি বছর মাত্র ২ হাজার জনকে ভিসা দিতে পারে। যার অর্থ, বেশীরভাগ শিক্ষার্থী হয়তো কখনই ইন্টারভিউয়ের ডাক পাবেন না। এতে অনেক শিক্ষার্থী হতাশ হয়ে বিকল্প দেশ বেছে নেওয়ার কথা ভাবছেন, আবার কেউ কেউ দূতাবাসের ভিসা প্রক্রিয়া আরও দ্রুত করার দাবি তুলছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাফি আহমেদ (ছদ্মনাম) প্রায় ১৮ মাস আগে ভিসার জন্য আবেদন করেন। এই দীর্ঘ সময় পার হলেও তিনি এখনও কোনো আপডেট পাননি।
তিনি বলেন, প্রতিদিন ইমেইল চেক করি। কিন্তু কোনো আপডেট পাই না। আমার বন্ধুরা ইতোমধ্যে কানাডা, অস্ট্রেলিয়া চলে গেছে, আর আমি শুধু অপেক্ষাই করে যাচ্ছি।
বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ফেসবুক প্লাটফর্মের তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ যারা ভিসা ইন্টারভিউয়ের ডাক পেয়েছে তাদের অপেক্ষা করতে হয়েছে প্রায় ২৭ মাস। যদিও অ্যাম্বাসি তাদের ওয়েবসাইটে অপেক্ষার সময় ১৯ মাস উল্লেখ করে রেখেছে গত প্রায় এক বছর ধরে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ভিসা অ্যাপয়েন্টমেন্টের দীর্ঘ প্রতীক্ষার কারণে তাদের উচ্চশিক্ষার পরিকল্পনা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তবে, দূতাবাসের সক্ষমতা সীমিত থাকায় দ্রুত সমাধানের সম্ভাবনা কম।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আবেদনকারীর সংখ্যা যেভাবে বাড়ছে, তাতে অপেক্ষার সময় আরও দীর্ঘ হবে। যারা ২০২৪ সালে আবেদন করেছেন তাদের অনেকেই হয়তো ২০২৬ বা তার পরেও ইন্টারভিউয়ের সুযোগ পাবেন না।
জার্মানিতে পড়তে যেতে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের এখন বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনা করে বিকল্প পরিকল্পনা গ্রহণ করাই হতে পারে সবচেয়ে বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্ত।আরটিভি