News update
  • How to Visit Saint Martin’s Island in This Tourist Season 2025-26     |     
  • Khulna-Mongla dream rail line struggles for freight flow     |     
  • Guterres Urges Fair, Fast, Final Shift to Clean Energy     |     
  • US Shutdown Triggers Over 1,000 Flight Cancellations     |     
  • World leaders meet in Brazil to tackle global warming     |     

তরুণ দুই ফুটবলারের দিকে তাকিয়ে চারবারের বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন জার্মানি

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক ফুটবল 2022-11-18, 11:29am




কাতার বিশ্বকাপের আগে টানা দুটি টুর্নামেন্টে জার্মানির ফুটবল দল চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে, জার্মানির ফুটবল ইতিহাস ঘাটলে এমন ঘটনা পেতে অনেক পেছনে চলে যেতে হবে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে কখনোই জার্মানি টানা দুটি আন্তর্জাতিক ফুটবল টুর্নামেন্টে কোয়ার্টার ফাইনালের আগে বাদ পড়েনি।

এবার এমনই এক জার্মানি কাতারে বিশ্বকাপ খেলতে যাচ্ছে, যাদের বিষয়ে ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান বলছে, ‘তাদের ইতিহাসের সবচেয়ে তলানিতে’ আছে দলটি।

চার বছর আগে রাশিয়ায় ফিফা বিশ্বকাপে জার্মানি গ্রুপ পর্বেই বাদ পড়েছিল এবং ইউরোতে ইংল্যান্ডের কাছে হেরে দ্বিতীয় রাউন্ড পার হতে পারেনি জার্মানি।

২৩শে নভেম্বর জাপানের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে জার্মানির কাতার বিশ্বকাপ মিশন।

জার্মানির গ্রুপে আরও আছে স্পেন ও কোস্টা রিকা।

যদি জাপান নিজেদের সেরা ফুটবলটা খেলতে পারে এই টুর্নামেন্টে, তবে জার্মানির জন্য আরও একটি কঠিন বিশ্বকাপ অপেক্ষা করছে।

জার্মানির দলে প্রতিভার অভাব নেই

চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ও ইউরোপের শীর্ষ লিগ জয়ী ফুটবলার আছে এই স্কোয়াডে, যারা কঠিন মুহূর্তে স্নায়ুচাপ নিয়ন্ত্রণে রেখে নিজেদের দক্ষতার সবটুকু দিয়ে বড় ম্যাচে ভালো খেলে নিজেদের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছেন।

যেমন চেলসির হয়ে কাই হ্যাভার্টজ, ম্যানচেস্টার সিটির হয়ে ইকায়ে গুন্দোয়ান।

তবে এই দলটি তুলনামূলক কম সময় পেয়েছে, খুব বেশি প্রস্তুতি নিতে পারেনি একসাথে।

ব্যস্ত ক্লাব ফুটবল সূচির কারণে খুব বেশি আন্তর্জাতিক ফুটবল খেলা হয়নি এই সময়ে।

তবে সেপ্টেম্বর মাসে শক্তিশালী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে একটি ৩-৩ গোলের ড্র কোচ হ্যান্সি ফ্লিককে আশাবাদী করে তুলছে।

অন্তত সেমিফাইনালে ওঠার আশা করছেন তিনি।

জার্মানির দলে কারা আছেন

২০২০ ইউরোতে র্জামানির যে দল ছিল, সেই দলের সাথে এই দলের অনেক পার্থক্য।

যদিও ম্যানুয়েল নয়ার, টমাস মুলার, টনি ক্রুসরা আছেন- যারা ২০১৪ সালের বিশ্বকাপ জয়ী দলেও ছিলেন।

এই দলটাতে আছেন তরুণ কিছু ফুটবলার।

১৭ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড ইউসোফা মৌকোকোর দিকে বাড়তি নজর থাকবে এবারের বিশ্বকাপে।

সাথে আছেন অভিজ্ঞ কিছু ফুটবলার, যেমন পাঁচ বছর পর দলে ডাক পাওয়া মারিও গোৎজা।

আছেন টমাস মুলার, যিনি বর্তমানে খেলা ফুটবলারদের মধ্যে বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ গোলের মালিক।

তবে ম্যাট হামেলসের মতো অভিজ্ঞ একজন ডিফেন্ডারকে এবারের বিশ্বকাপের দলে না রাখার কারণে সমালোচনাও শুনতে হচ্ছে ফ্লিককে।

হামেলস একটি বিবৃতিতে জানিয়েছেন, “এটা  আমার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে হতাশার বিষয় হয়ে থাকবে”।

তবে তিনি দলের জন্য শুভকামনা জানিয়েছেন।

কোচ হ্যান্সি ফ্লিকের মতে, “হামেলস সম্পূর্ণ সুস্থ ও ফর্মেও আছেন কিন্তু আমাদের দৃষ্টি এখন ভবিষ্যতে। আমরা এমন একটা দল বানাতে চাই যারা সামনে আরও ভালো খেলবে।”

সার্জি নাব্রি, লেরয় সানে, জামাল মুসিয়ালাকে নিয়েও আলোচনা হচ্ছে।

জামাল মুসিয়ালাকে নিয়ে এতো আলোচনা কেন

জামাল মুসিয়ালা জার্মানির মিডফিল্ডার যিনি উইং থেকেও আক্রমণ তুলতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন।

২০১৯ সালে চেলসি থেকে বায়ার্ন মিউনিখে যোগ দিয়েছিলেন তিনি, তার বয়স তখন মাত্র ১৬।

মুসিয়ালা জার্মান ক্লাব বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে খেলা সবচেয়ে কম বয়সী ফুটবলার।

একই সাথে সবচেয়ে কম বয়সে গোলের রেবর্ডও তার।

শৈশবে চেলসির একাডেমিতে বেড়ে ওঠেন মুসিয়ালা, তার খেলার কথা ছিল ইংল্যান্ডের হয়ে, এমনকি ইংল্যান্ডের বয়সভিত্তিক দলেও খেলেছেন তিনি।

কিন্তু পরে জার্মানিতে চলে আসেন, জার্মানির সেরা ক্লাবের হয়ে ফুটবল খেলেন এবং সিদ্ধান্ত নেন জন্মভূমি জার্মানির হয়েই খেলবেন।

জার্মানির হয়ে দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নেমে নর্থ মেসিডোনিয়ার বিপক্ষে একটি গোল করেছিলেন তিনি, দেশটির দ্বিতীয় কম বয়সী গোলদাতা মুসিয়ালা।

মুসিয়ালার বড় শক্তির জায়গা শরীরের গড়ন, দ্রুতই তিনি ডিফেন্সের ভেতর দিয়ে চলে যেতে পারেন লিকলিকে শরীরের কারণে।

মুসিয়ালার আরেকটি বিশেষ ব্যাপার দুই পায়েই দক্ষ তিনি, শটের পাওয়ার এই বয়সেই বেশ ভালো তার।

বায়ার্ন মিউনিখের হেড কোচ হুলিয়ান ন্যাগলসমান বলেছিরেন, “অবিশ্বাস্য সম্ভাবনা মুসিয়ালার। অসাধারণ। সে বল ফিনিশ করতে পারে। আক্রমণে যেতে পারে ড্রিবিলিং দিয়ে। খুবই ভালো করছে মুসিয়ালা।”

জার্মানির সতীর্থরাও মুসিয়ালাকে পেয়ে খুভি, জশুয়া কিমিচ বুন্দেসলিগার ওয়েবসাইটে দেয়া একটি সাক্ষাৎকারে বলেন, “জামাল এখনই দারুণ একজন ফুটবলার। সামনে সে বিশ্বমানের হয়ে উঠবে। বয়স তুলনায় সে অনেক ভালো। অনেক কৌশল জানে সে, খুবই গতিশীল একজন ফুটবলার মুসিয়ালা।”

হ্যান্সি ফ্লিক কোচ হিসেবে কেমন

জার্মানিতে দীর্ঘদিন কোচের দায়িত্ব পালন করেছিলেন ইয়োয়াখিম লো।

তার অধীনে জার্মানি বিশ্বকাপ জিতেছিল ২০১৪ সালে, সেই বিশ্বকাপজয়ী জার্মানি ফুটবল দলের সহকারী কোচ ছিলেন হ্যান্সি ফ্লিক।

বিশ্বকাপের প্রস্তুতিমূলক ম্যাচে ওমানের বিপক্ষে ১-০ গোলের একটি জয় পেয়েছে জার্মানি।

এটাই ছিল হ্যান্সি ফ্লিকের জন্য দল গোছানোর শেষ সুযোগ।

ওমানের বিপক্ষে এমন জয়ের পরে পুরোপুরি সন্তুষ্ট হতে পারেননি ফ্লিক।

“আমাদের কিছু সমস্যা হয়েছে। ওমান আমাদের তটস্থ রেখেছে কিছুটা সময়।”

তবে ফ্লিক খুশি যে ওমানের বিপক্ষে চোট ছাড়াই দল ফুটবল খেলেছে।

বিশ্বকাপের আগে জার্মানি মার্কো রয়েস ও টিমো ভের্নারকে হারিয়েছে চোটের কারণে।

জাপানের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বিচার করতে বলেছেন ফ্লিক, “বিশ্বকাপের ম্যাচে জার্মানির ফুটবলারদের থেকে আমি আরও কঠিন আচরণ চাই”।

হ্যান্সি ফ্লিকের জীবন গত দুই-তিন বছরে বদলে গেছে।

তিনি তিন বছর আগেও জার্মানিতে একটি ছোট শহরে স্পোর্টস সামগ্রীর দোকান চালাতেন।

এরপর বায়ার্ন মিউনিখের কোচ হন তিনি কিছু সময়ের জন্য এবং সেখান থেকে জার্মানির হেড কোচ ফ্লিক।

বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে ১০৪টি ম্যাচ খেলেছিলেন তিনি।

কোচ হিসেবে বায়ার্নের হয়ে ট্রেবল জিতেছেন তিনি ২০২০ সালে।

জার্মানির বর্ষসেরা কোচের পুরস্কার পেয়েছিলেন সে বছর।

জার্মানি এমন একটা পরিস্থিতিতে এই টুর্নামেন্টে মাঠে নামছে যেখানে কড়া জার্মান সমর্থকরাও খুব একটা আশাবাদী হতে পারছেন না।

তারপরও দলটার নাম জার্মানি, চারবারের বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন, তাই প্রত্যাশা থাকবেই। তথ্য সূত্র বিবিসি বাংলা।