
গাজীপুরসহ সারাদেশে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। এসময় গাজীপুরের টঙ্গী ও শ্রীপুরে কয়েকটি পোশাক কারখানায় হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে শতাধিক শ্রমিক আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কারখানাটি ছুটি ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষরা।
শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে ভূমিকম্পের মুহূর্তে উঁচু ভবন দুলতে শুরু করলে ঘরবাড়ি, অফিস, শিল্পকারখানা, দোকানপাট থেকে মানুষ দ্রুত খোলা জায়গায় ছুটে আসে। এ অবস্থায় বন্ধ রাখা হয়েছে বিদ্যুৎ সরবরাহ।
জানা গেছে, কয়েক সেকেন্ড স্থায়ী ভূমিকম্পে গাজীপুর মেট্রোপলিটন এলাকার টঙ্গী, জয়দেবপুর ও জেলার কালিয়াকৈর, শ্রীপুর, কালীগঞ্জ ও কাপাসিয়াজুড়ে হঠাৎ মোবাইল নেটওয়ার্কে চাপ বৃদ্ধি পায়। কলড্রপ ও নেটওয়ার্ক অস্থিরতার পাশাপাশি কোনাবাড়ী, বোর্ডবাজার, চান্দনা চৌরাস্তা, কড্ডা ও সালনাসহ বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিল্পকারখানায়ও আতঙ্ক দেখা দেয়। তবে দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনায় বড় ধরনের বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়নি। অনেক প্রতিষ্ঠান নিরাপত্তার স্বার্থে কিছু সময়ের জন্য কার্যক্রম স্থগিত রাখে।
অনেক কারখানায় দুলুনি অনুভূত হতেই শ্রমিকরা আতঙ্কে নিচে নেমে আসে। সাইরেন বাজিয়ে শ্রমিকদের নিরাপদ জায়গায় দাঁড় করানো হয়।
টাহাটা এলাকায় স্থানীয় কোস্ট টু কোস্ট কারখানায় ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে অন্তত ৩শ এর অধিক শ্রমিক আহত হন।
শ্রীপুরে ডেনিমিক্স লিমিটেড কারখানারও একই পরিস্থিতি। শ্রমিকরা জানায়, আতংকে সবাই বাইরে বের হতে চাইলে কারখানা কর্তৃপক্ষ গেট খুলেনি। সেই সময় পদদলিত হয়ে অসংখ্য শ্রমিক আহত হন।
এদিকে এমন খবরে চিকিৎসা দিতে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ছুটে আসেন বিএনপির সহ স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম বাচ্চু। আহতদের আতঙ্কিত না হয়ে আশপাশের স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার পরামর্শ তার।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গাজীপুরের বেশ কয়েকটি কারখানা ছুটি ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।
টঙ্গী হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ডা. ইশরাত জাহান এ্যানি বলেন, ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত কোনো বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। মাঠে ফায়ার সার্ভিসের টিম মাঠে রয়েছে এবং যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় তারা পুরোপুরি প্রস্তুত।
গাজীপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আলম হোসেন বলেন, গাজীপুরে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতির তথ্য পাওয়া যায়নি। কিছু শ্রমিক হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে আহত হয়েছেন। জেলা প্রশাসনের টিম বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে পরিস্থিতি পর্যেবক্ষণ করছে। সামগ্রিক পরিস্থিতি দ্রুতই স্বাভাবিক হবে।