News update
  • UN Chief Condemns Russian Attacks, Warns of Nuclear Risks     |     
  • Dhaka Urges Clear Outcome from Upcoming Rohingya Talks     |     
  • Khulna falls short of jute output target for lack of incentives     |     
  • UNRWA Report on the Humanitarian Crisis in Gaza & West Bank     |     
  • Rail link with Khulna cut off as train derails in Chuadanga     |     

চাঁদের আসল মালিক কে?

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি 2024-06-11, 7:25am

tryeyeu-93cafa88477f0909f48fd99da35710d71718069228.jpg




আমরা চাঁদের ভিড়ে আছি। মহাকাশের আধিপত্য বিস্তারের প্রতিযোগিতায় নেমেছে নানা দেশের পাশাপাশি এখন নেমেছে বিভিন্ন কোম্পানি। চন্দ্র পৃষ্ঠে নতুন করে যুক্ত হচ্ছে আরও দেশ-কোম্পানি।

এটাকে চন্দ্র অন্বেষণের নতুন যুগ বলেও ধরে নেওয়া যেতে পারে। বিবিসির বিজ্ঞান বিভাগীয় সম্পাদক রেবেকা মোরেলে এসব মন্তব্যের পাশাপাশি তার লেখায় প্রশ্ন রেখেছেন, ‘তাহলে কি আমরা চন্দ্র অন্বেষণের এই নতুন যুগের জন্য প্রস্তুত?’

রেবেকা মোরেলে লিখেছেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যুক্তরাষ্ট্র এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। সে সময়, মহাকাশও এই দুই দেশের একটি সামরিক যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হতে পারে বলে আশঙ্কা দেখা দেয়। এ কারণে আউটার স্পেস চুক্তির মূল অংশ জুড়ে ছিল—কোনো পারমাণবিক অস্ত্র মহাকাশে পাঠানো যাবে না। এতে শতাধিক দেশ সই করে সম্মতি জানায়। তবে, আউটার স্পেস চুক্তিটি বেশ শান্তিপূর্ণ ও সহযোগিতামূলক মনে হলেও এর উদ্দেশ সহযোগিতামূলক ছিল না। এর মূল উদ্দেশ ছিল, স্নায়ুযুদ্ধের সময় রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা করা।

১৯৬৭ সালে জাতিসংঘের চুক্তিতে বলা হয়েছে—কোনো জাতি চাঁদের মালিক হতে পারে না। আউটার স্পেস নামের একটি চুক্তিতে বলা হয়েছে—চাঁদ সবার জন্য, যেকোনো অভিযান সমস্ত মানবজাতির কল্যাণের জন্য এবং মানব জাতির স্বার্থে পরিচালনা করা উচিত।

রেবেকা লিখেছেন, বর্তমান মহাকাশ যুগটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ের মহাকাশ যুগের চাইতে আলাদা। এরমধ্যে সবচেয়ে বড় পার্থক্য হলো চাঁদে মিশন পাঠানো এখন আর জাতীয় প্রকল্পের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই, বরং এটি কোম্পানিগুলোর জন্যও একটি প্রতিযোগিতার খাতে পরিণত হয়েছে।

চাঁদের পৃষ্ঠে ওড়ানো চীনা পতাকার ছবি চলতি সপ্তাহে পৃথিবীতে এসে পৌঁছেছে। এ নিয়ে দেশটি চতুর্থবারের মতো চাঁদে অবতরণ করেছে। সেইসঙ্গে এটি এমন এক অনুসন্ধান অভিযান যেখানে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কোনো মহাকাশযান চাঁদের সুদূরে পৌঁছেছে এবং সেখান থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পৃথিবীতে নিয়ে এসেছে। গত ১২ মাসে ভারত এবং জাপানের মহাকাশযানও চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণ করেছে। ফেব্রুয়ারি মাসে, আমেরিকান কোম্পানি ‘ইনটুইটিভ মেশিনস’ চাঁদে ল্যান্ডার স্থাপনের ক্ষেত্রে প্রথম বেসরকারি কোম্পানি হয়ে ওঠে। আরও অন্যান্য কোম্পানি এই তালিকায় জায়গা করার অপেক্ষায় আছে।

অন্যদিকে, নাসা চাঁদে মানুষ পাঠাতে চায়। আর্টেমিস প্রকল্পের মহাকাশচারীরা ২০২৬ সালের মধ্যে চাঁদে অবতরণের প্রস্তুতি নিচ্ছে। চীন বলেছে, তারা ২০৩০ সালের মধ্যে চাঁদে মানুষ পাঠাবে। যদিও ক্ষণস্থায়ী সফরের পরিবর্তে চাঁদে স্থায়ী ঘাঁটি তৈরিতে তারা পরিকল্পনা করছে। কিন্তু নতুন মহাশক্তির রাজনীতির যুগে, মহাকাশে আধিপত্য বিস্তারের প্রতিযোগিতা কি পৃথিবীতে উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে এবং সেই দ্বন্দ্ব চাঁদ পর্যন্ত পৌঁছে যেতে পারে?

‘চাঁদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক খুব শিগগিরই মৌলিকভাবে পরিবর্তিত হতে চলেছে’ উল্লেখ করে কানসাস বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতাত্ত্বিক জাস্টিন হলকম্ব সতর্ক করে বলেছেন, ‘মহাকাশ অনুসন্ধানের গতি এখন আমাদের নির্ধারিত আইনকে ছাড়িয়ে গেছে।’

চলতি বছরের জানুয়ারিতে পেরেগ্রিন নামে একটি মার্কিন বাণিজ্যিক মিশন ঘোষণা দিয়েছিল যে তারা চাঁদে মানুষের ছাই, ডিএনএ-এর নমুনা এবং ব্র্যান্ডিংসহ একটি স্পোর্টস ড্রিংক নিয়ে যাবে। কিন্তু জ্বালানির ট্যাংক ফুটো হয়ে যাওয়ায় সেই অভিযান তার অভীষ্ট গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেনি। তবে, এসব জিনিস মহাকাশে নেওয়ার সঙ্গে আদৌ মানবতার সেবার কোনো সম্পর্ক আছে কি না, অর্থাৎ অভিযানটি আউটার স্পেস চুক্তির বিধানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল কি না তা নিয়ে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।

মহাকাশবিষয়ক আইনজীবী এবং ফর অল মুনকাইন্ডের প্রতিষ্ঠাতা মিশেল হ্যানলন বলেছেন, ‘এখন চাঁদ আমাদের নাগালের মধ্যে চলে আসছে এবং এখন আমরা একে অপব্যবহার করতে শুরু করেছি।’

রেবেকার প্রতিবেদনটির পুরোভাগে বোঝানো হয়েছে, বেসরকারিভাবে মহাকাশ কর্মসূচি বৃদ্ধি পাওয়া সত্ত্বেও হাতে গোনা কয়েকটি দেশ এর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ফলে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে—চাঁদ তুমি কার?