
রাতের আকাশে ঝরে পড়বে একের পর এক উল্কা। ছুটে যাবে এক দিক থেকে আরেক দিকে। ছাদে শুয়ে সারারাত দেখতে পারবে মানুষ। শুধু বাংলাদেশ থেকেই নয়, সারাবিশ্ব থেকেই দেখা যাবে সেই দৃশ্য। আর সপ্তাহ খানেকের অপেক্ষা মাত্র।
কবে কখন দেখা যাবে উল্কাবৃষ্টি
‘লিওনিড মেটিওর শাওয়ার’ বা উল্কাবৃষ্টি সবচেয়ে ভাল দেখা যাবে আগামী ১৬ নভেম্বর। ওই দিন দিবাগত রাত ১২টা থেকে ১৭ নভেম্বর ভোর ৩টা পর্যন্ত আকাশে দেখা যাবে উল্কাবৃষ্টি। এরপর ভোর সাড়ে ৩টার দিকে উঠবে এক ফালি চাঁদ।
তবে চাঁদের জন্য উল্কাবৃষ্টি দেখতে কোনো সমস্যা হবে না। ছাদে বিছানা পেতে শুয়েই দেখা যাবে সেই দৃশ্য। আকাশে তাকাতে হবে উত্তর গোলার্ধে লিও কনস্টেলেশনের দিকে। সেখানেই দেখা যাবে উল্কাবৃষ্টি।
এই উল্কাপাত বা তারাখসার রাস্তা হবে দীর্ঘ। এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটে যাবে উল্কা। সেই সঙ্গে ধোঁয়া উঠবে। উল্কার রংও পাল্টে যাবে, যা পর্যবেক্ষকদের আগ্রহ তৈরি করবে।
কীভাবে হবে এই লিওনিড উল্কাবৃষ্টি
জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বলছেন, ১৬৯৯ সালে ৫৫পি/টেম্পল-টাটল ধূমকেতুটি সূর্যের কাছ দিয়ে চলে যায়। সে সময় সে একটি লেজ ফেলে যায় কক্ষের ওপর। সেই লেজের মধ্যেই ১৬-১৭ তারিখ নাগাদ ঢুকে পড়বে পৃথিবী।
যা প্রতিবছরই একবার করে ঘটে। এবার সেই জায়গায় যদি আগে থেকেই ধূমকেতুর কোনো লেজ পড়ে থাকে, তা হলে তার ধুলো পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে ঢুকে পড়বে। আর সেটাই হবে উল্কাবৃষ্টি।
৫৫-পি/টেম্পল-টাটল ৩৩.১৭ বছর পর পর সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে। ১৮৬৫ সালে প্রথম আবিষ্কার হয় এই ধূমকেতু। এটা আবার পৃথিবীর কাছে আসবে ২০৩০ সালে। তখনও হয়তো ভাল ভাবে দেখা যাবে উল্কাবৃষ্টি, এমনটাই মনে করছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা।
ধূমকেতু দ্রুত চলে যাওয়ার সময় তার একটা লেজ তৈরি হয়। ওই লেজ ধুমকেতুর কক্ষ থেকে ছিটকে প্রায় নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়। এই লেজের মধ্যদিয়ে পৃথিবী যখন যায়, তখন শয়ে শয়ে উল্কাবৃষ্টির মতো ঝরে পড়ে।
এর আগে চলতি বছরের ১২ ও ১৩ আগস্ট দেখা গিয়েছিল উল্কাবৃষ্টি। প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ১০০টি উল্কা ঝরতে দেখেছিল উৎসাহী মানুষ। বাংলাদেশের আকাশ থেকেও দেখা গিয়েছিল ‘পার্সাইড উল্কাবৃষ্টি’ নামের এই মহাজাগতিক ঘটনা। এবার অন্ধকার আকাশ হওয়ার কারণে আরও ভালভাবে দেখা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।