দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি ও সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর টানা অবরোধ, হরতাল ও বিক্ষোভ মিছিলের মতো কর্মসূচি চলছে। দলগুলো কখনও হরতালের ডাক দিচ্ছে আবার কখনও অবরোধের। সাধারণ জনতার মাঝে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে হরতাল ও অবরোধের পার্থক্য নিয়ে। অনেকেই হরতাল ও অবরোধের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে পারেন না। দুটি কর্মসূচিতেই প্রায় একই ধরনের রাজনৈতিক পদক্ষেপ নেওয়া হলেও কিছু পার্থক্য রয়েছে।
হরতাল
হরতাল গুজরাটি শব্দ। ‘হর’ মানে সব জায়গায় আর ‘তাল’ মানে তালা। অর্থাৎ হরতাল মানে সব জায়গায় তালা। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের সময় মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী হরতালের প্রবর্তন করেছিলেন। ১৯৪৮ সালে বাংলাদেশে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে ‘তমুদ্দিন মজলিস’ প্রথম হরতাল ডাকার পর থেকে এ দেশের রাজনীতিতে হরতাল বেশ প্রচলিত একটি কর্মসূচি। হরতাল হচ্ছে সরকারের বিরুদ্ধে জনগণের সম্মিলিত আন্দোলন। হরতালের সময় সব কর্মক্ষেত্র, দোকান, আদালত বন্ধ থাকে। তবে সাধারণত জরুরিসেবা এর আওতামুক্ত থাকে।
এই কর্মসূচি মূলত জোর-জবরদস্তির বিষয় না। এটা সম্পূর্ণ ব্যক্তির নিজস্ব বিষয়। কেউ চাইলে হরতাল সমর্থন করে কলকারখানা বন্ধ রাখতে পারেন। অফিসে না যেতে পারেন। এখানে চাপিয়ে দেওয়ার কিছু নেই। বিরোধী দলগুলো সবসময় দাবি করে থাকে, তাদের ডাকা হরতাল সফল। সাধারণ মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে এতে অংশ নিয়েছে। কিন্তু ক্ষমতায় থাকা দল বলে থাকে, মানুষ হরতাল প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা হরতালকে সমর্থন দেয়নি। অর্থ্যাৎ এখানে ‘মানুষ’ খুব গুরুত্বপূর্ণ।
অবরোধ
কোনো দাবি আদায়ের একটি বিশেষ ব্যবস্থা হলো অবরোধ। অবরোধ হচ্ছে কর্মসূচি পালনে জনগণকে বাধ্য করা। সহজ করে বললে, জোর করে চাপিয়ে দেওয়া। অবরোধে মানুষকে জানিয়ে দেওয়া হয় যে, কর্মসূচি চলাকালে সড়ক, নৌ ও রেলপথ অবরোধ করে রাখা হবে। পরিবহন চলতে দেওয়া হবে না। অবরোধে মানুষের সাড়া দেওয়া বা না দেওয়ার কিছু নেই, বরং কর্মসূচি পালনে মানুষকে বাধ্য করা হয়। অবরোধের ইতিহাস বিভিন্ন আমলেই দেখা গেছে। গ্রিক উপাখ্যানে ইলিয়াড ও ওডেসিতে ট্রয় নগরী অবরোধের কথা আছে। ১১৮৭ সালে সালাউদ্দিন আইয়ুবি জেরুজালেম অবরোধ করেন। তথ্য সূত্র আরটিভি নিউজ।