News update
  • $10mn Approved for Climate Resilience in CHT: ICIMOD     |     
  • At least 143 dead in DR Congo river boat fire tragedy     |     
  • Dhaka has worst air pollution in the world Saturday morning     |     
  • Container ships to ply between Mongla and Chattogram ports     |     
  • France to Break Away from UK & US in Recognising Palestine as Nation State     |     

তুরস্কের বিশাল গুহা নগরীর প্রাচীন রহস্য উন্মোচন

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক বিবিধ 2024-07-30, 8:41am

647c3aa8-311d-4895-8d54-2a6aed463603_cx0_cy10_cw0_w408_r1_s-cb0946c5b12fa9175849093ebd458f691722307292.jpg




তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে একটি বাড়ির নীচতলার দরজা দিয়েই আবিষ্কৃত হলো সম্ভবত দেশের সবচাইতে বড় বিস্তৃর্ণ একটি কেইভ বা গুহা শহর। একজন ইতিহাসবিদ বিশ্বাস করেন যে যিশু খ্রিস্টের জন্মের আগে নবম শতাব্দীতে গুহার ভেতরে একটি শহর তৈরি করা হয়েছিল।

সিরিয়া সীমান্তের কাছাকাছি মিদিয়াতে ২০২০ সালে একটি বাড়িতে ওয়াইন সেলারগুলিতে খনন কাজ করার সময় প্রত্নতত্ত্ববিদরা “প্রায় অনভিপ্রতভাবেই” একটি শহরের-নিচে-শহর আবিষ্কার করেন। তারা গোলকধাঁধামত বিশাল কেইভ সিটি বা গুহা-শহর আবিষ্কার করেন।

এরই মাঝে মাটির গভীর তলদেশে গুহা খোদাইকারী কর্মীরা ৫০টিরও বেশি গোপন কক্ষ আবিষ্কার করেন। ঘরগুলো ১২০ মিটার সুড়ঙ্গ পথ দিয়ে সংযুক্ত, যা পাথর খোদাই করে তৈরি করা হয়েছিল।

তবে এটাই সব নয়, অনুমানিক প্রায় ৯ লক্ষ বর্গমিটার এলাকা জুড়ে যে ভূগর্ভস্থ শহর অবিস্কৃত হয়েছে, এটা হচ্ছে তারই ক্ষুদ্র ভগ্নাংশ মাত্র। অর্থাৎ, এটাই তুরস্কের দক্ষিণে আনাতোলিয়ার বৃহত্তম গুহা-শহর।

“সম্ভবত বিশ্বের সবচেয়ে বড় হতে পারে,” বলেন মেরভান ইয়াভুয যিনি মিদিয়াতের সংরক্ষণ পরিচালক এবং প্রত্নতাত্বিতক কাজের তত্বাবধানে নিয়োজিত।

ইয়াভুয আরও বলেন, “আবহাওয়া, শত্রু, হত্যাকারী এবং রোগ থেকে নিজেদের রক্ষা করার জন্য মানুষ ঐ গুহায় আশ্রয় নিয়েছিল এবং তাকে তারা সত্যিকারের একটি শহরে পরিণত করেছিল।”

এই ইতিহাসবিদ প্রাচীন শহরের শুরুটা চিহ্নিত করেন রাজা দ্বিতীয় অসুরনাসিরপাল-এর সময় থেকে, যিনি খ্রিস্টপূর্ব ৮৮৩ থেকে ৮৫৯ সাল পর্যন্ত নব্য-আসিরিয়ান সাম্রাজ্য শাসন করেন।

খ্রিস্টপূর্ব সপ্তম শতাব্দীতে, সাম্রাজ্যটি পূর্বে উপসাগর থেকে পশ্চিমে মিশর পর্যন্ত সম্প্রসারিত হয়েছিল।

প্রাচীন আসিরিয়ান ভাষায় মেটিয়েট (গুহার শহর) নামক শহরটিতে প্রবেশের জন্য মানুষকে নিচের দিকে ঝুঁকে পুরো বাঁকা হয়ে গোলাকৃতির দরজা দিয়ে নিজেকে ঠেলে ঢুকাতে হতো

মিদিয়াত পৌরসভা এই প্রবেশদ্বারটি থেকেই প্রথম তাদের ঐ ভূগর্ভস্থ শহরের অস্তিত্বের আভাস পেয়েছিল।

অন্ধকারাচ্ছন্ন গুহার মধ্য দিয়ে হেঁটে যেতে যেতেই “আমরা সন্দেহ করেছিলাম যে এখানে প্রবেশদ্বারের অস্তিত্ব নিশ্চিয় রয়েছে," ইয়াভুয বলেন।

"উনিশ'শ সত্তরের দশকে মেঝে ধসে পড়লে একটি নির্মাণ যন্ত্র পড়ে যায়। কিন্তু সেই সময় আমরা আর কিছু জানার চেষ্টা করিনি, আমরা কেবল গর্তটি শক্ত করে বন্ধ করে দিয়েছিলাম।"

গুহা শহরটি যে অঞ্চলে অবস্থিত তা একসময় মেসোপটেমিয়া নামে পরিচিত ছিল যা বিশ্বের প্রাচীনতম কিছু সভ্যতার ব্যুৎপত্তি হিসাবে স্বীকৃত।

অনেক গুরুত্বপূর্ণ সাম্রাজ্য এই অঞ্চল জয় করেছে বা এর ভেতর দিয়ে গিয়েছে। ফলে মেটিয়েট-এর আশেপাশের অধিবাসীদের হয়তো গুহায় আশ্রয় নিতে হয়েছিল।

"আরবদের আগমনের আগে এই এলাকাটি নিয়ে আসিরিয়ান, পার্শিয়ান , রোমান এবং তারপরে বাইজেন্টাইনদের মধ্যে তীব্র প্রতিযোগিতা ছিল," বলছেন একরেম আকমান, স্থানীয় মারদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসবিদ।

ইয়াভুয উল্লেখ করেছেন যে “হাতায় অঞ্চলের খ্রিস্টানরা রোমান সাম্রাজ্যের নিপীড়ন থেকে পালিয়ে তাদের আক্রমণ এড়াতে পাহাড়ে মঠ তৈরি করেছিল।”

তিনি সন্দেহ করেন যে ইহুদি এবং খ্রিস্টানরা তাদের সে সময়ে নিষিদ্ধ ধর্ম চর্চার জন্য গোপন জায়গা হিসেবে মেটিয়েটকে ব্যবহার করতেন।

তিনি দেয়ালে বিশেষ আকৃতিতে খোদাই করা জিনিসগুলির দিকে ইঙ্গিত করেছিলেন, যেমন একটি ঘোড়া, একটি আট-কোণাকৃতির তারা, একটি হাত, গাছ – আবার আরেকটি ঘরের মেঝেতে একটি পাথরের খন্ড রাখা যা আনুষ্ঠানিক কোন কাজে জন্তু বলি দেওয়ার জন্য ব্যবহার করা হয়।

আজ অবধি, মারডিন অঞ্চলের অর্থোডক্স খ্রিস্টান সম্প্রদায় ওয়াইন উত্পাদনের সেই পুরানো ঐতিহ্য বজায় রেখেছে।

তুরস্কের মধ্যাঞ্চল ক্যাপাডোসিয়ায় অবস্থিত প্রাচীন গুহা গ্রামের জন্যও দেশটি বিখ্যাত।

তারকান ব্যাখ্যা করেন, ক্যাপাডোসিয়ার ভূগর্ভস্থ শহরগুলিতে কক্ষগুলো একটির উপরে আরেকটি অর্থাৎ উল্লম্বভাবে নির্মান করা হয়েছিল, কিন্তু মেটিয়েটে পাথালেভাবে অর্থাৎ হরাইজন্টালী তৈরি করা হয়েছিল।

মিদিয়াত পৌরসভা এই কাজের জন্য অর্থায়ন করে এবং তারা কেইভটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত না করা পর্যন্ত খনন চালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছে।

মিদিয়াত পৌরসভা আশা করছে যে এটা পর্যটন আকর্ষণ হিসাবে এই জায়গা একটি জনপ্রিয় স্থান হিসেবে প্রমাণিত হবে এবং দর্শনার্থীদের ১২০,০০০ বাসিন্দার শহরে আকর্ষণ করবে। তথ্য সূত্র ভয়েস অফ আমেরিকা।