মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের ১ হাজার ৩০০ এর বেশি গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাকে একযোগে চাকরিচ্যুত করছে ট্রাম্প প্রশাসন। শুক্রবার (১১ জুলাই) থেকে এই ছাঁটাই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে ফরেন সার্ভিস ও সিভিল সার্ভিস কর্মকর্তারা।
ট্রাম্প প্রশাসনের নির্দেশে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট বা পররাষ্ট্র দফতরে শুরু হয়েছে বড় ধরনের রদবদল। সংস্থাটির নোটিশ অনুযায়ী, ১ হাজার ৩৫৩ জন কর্মকর্তাকে ছাঁটাই করা হচ্ছে। যার মধ্যে ১ হাজার ১০৭ জন সিভিল সার্ভিস ও ২৪৬ জন ফরেন সার্ভিস অফিসার। আরও প্রায় ১ হাজার ৬০০ কর্মী স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করছেন বলে জানানো হয়েছে।
পুনর্গঠনের আওতায় শতশত ব্যুরো ও অফিস একীভূত, বাতিল বা নতুন কাঠামোয় রূপান্তর করা হচ্ছে। ছাঁটাইপত্র পাঠানো হচ্ছে ই-মেইলে এবং বেশিরভাগ কর্মকর্তাকে ছাঁটাই কার্যকর হওয়ার আগে কয়েক মাসের বাধ্যতামূলক ছুটিও দেয়া হয়েছে।
গত এপ্রিলে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এই পুনর্গঠন পরিকল্পনা অনুমোদন করেন। দফতরের এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কাজের ধরন বিবেচনায় ছাঁটাই করা হয়েছে। তবে ছাঁটাই প্রক্রিয়ায় সরকারি অর্থ কত সাশ্রয় হবে, তা জানাতে পারেনি ট্রাম্প প্রশাসন।
পররাষ্ট্র দফতরের দাবি, কূটনৈতিক অগ্রাধিকারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়, এমন কর্মকর্তাদের ছাঁটাই করা হচ্ছে। তবে তা এমনভাবে করা হয়েছে যাতে কর্মীদের মর্যাদা অক্ষুণ্ন থাকে। ট্রাম্প প্রশাসনের বক্তব্য, এই পদক্ষেপে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার চেয়ে অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ এবং জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে।
পররাষ্ট্র দফতরের নাটকীয় এই সংস্কারে অভ্যন্তরীণ কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক হতাশা দেখা গেছে, যাদের অনেকেই কূটনৈতিক ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। সবচেয়ে বড় আঘাত পড়েছে ফরেন সার্ভিস কর্মকর্তাদের ওপর।
আমেরিকান ফরেন সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট থমাস ইয়াজগেরদি বলেন, এমন সময় এই ছাঁটাই চলছে যখন গাজা, ইউক্রেন, ইরানসহ নানা সংকটে দক্ষ কূটনীতিকের চাহিদা সবচেয়ে বেশি।
তার ভাষায়, ‘এই সিদ্ধান্ত শুধু মনোবল নয়, ভবিষ্যতে নিয়োগ ও দক্ষতা ধরে রাখাতেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব খর্ব হবে। বিশেষ করে যখন তাদের ভূমিকা মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপে শান্তি প্রতিষ্ঠায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
পররাষ্ট্র দফতর জানিয়েছে, সংস্কার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে বিদেশে নিযুক্ত মার্কিন মিশনগুলোতে আপাতত কর্মী ছাঁটাই হচ্ছে না। তবে দূতাবাসগুলোতেও কর্মী ছাঁটাইয়ের শঙ্কা তৈরি হয়েছে।