News update
  • $10mn Approved for Climate Resilience in CHT: ICIMOD     |     
  • At least 143 dead in DR Congo river boat fire tragedy     |     
  • Dhaka has worst air pollution in the world Saturday morning     |     
  • Container ships to ply between Mongla and Chattogram ports     |     
  • France to Break Away from UK & US in Recognising Palestine as Nation State     |     

দুবাইয়ে বাংলাদেশিদের শত শত বাড়ি হলো কীভাবে

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক মিডিয়া 2024-05-17, 10:48pm

8a273a20-143a-11ef-aaba-c118de1aaa36-1640312f6b60611b09df8a4ae7c422e31715964597.jpg




বাংলাদেশের অর্থপাচার নিয়ে কাজ করা সংস্থাগুলোর একটি ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ বা টিআইবি। এর নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলছেন বাংলাদেশ থেকে যেসব দেশে অর্থ যায় তার মধ্যে আরব আমিরাত নতুন তবে ক্রমশ এটি বাড়ছে।
“দুবাইয়ের আবাসনে সব বাংলাদেশিদের সম্পদ কেনার টাকা হয়তো অবৈধ নয়। তবে অনেকেই অবৈধ পথে নিয়েছেন এতে কোনো সন্দেহ নেই। কর্তৃপক্ষেরও এটা জানা আছে। সরকার চাইলে বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক আইনের সুযোগ নিয়ে এটি জেনে ব্যবস্থা নিতে পারে,” বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন তিনি।
প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে সামাজিক মাধ্যমগুলোতে দুবাইতে বাড়ি কেনার নানা অফারের বিজ্ঞাপনও অনেকের দৃষ্টিতে এসেছে। যদিও বাংলাদেশ ব্যাংক কোনো বাংলাদেশিকে দেশটিতে বিনিয়োগের অনুমতি দেয়নি।
বিবিসি বাংলার খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল অনুসরণ করুন
টি পাউণ্ডের বিবাহবিচ্ছেদ২১ ডিসেম্বর ২০২১কীভাবে জন্ম হয়েছিলো সংযুক্ত আরব আমিরাতেরনে জ
 বাংলাদেশি মালিকানাধীন সম্পদও আছে এখানে।ইইউ ট্যাক্স অবজারভেটরির রিপোর্টে কী আছেএই রিপোর্টের তথ্য অনুযায়ী ২০২২ সালে দুবাই শহরে সাড়ে বাইশ কোটি ডলারের সম্পদ কিনেছেন ৩৯৪ জন। তবে আরও বিভিন্ন তথ্যাদি বিশ্লেষণ করে বলা হয়েছে সংখ্যাটি ৫৩২ হতে পারে। এর আগে ২০২০ সালে এমন বাংলাদেশির সংখ্যা ছিল ৪০৫ জন।
যদিও এই ব্যক্তিরা কারা কিংবা এদের মধ্যে কোনো দ্বৈত নাগরিক (আমেরিকান বাংলাদেশি কিংবা ব্রিটিশ বাংলাদেশি) আছে কি না সে সম্পর্কে কোনো তথ্য রিপোর্টে দেয়া হয়নি।
রিপোর্টে ফাঁস হওয়া এবং ফাঁস না হওয়া ঘটনা বিবেচনায় নিয়ে বলা হয়েছে যে সব মিলিয়ে ২০২২ সালে যে ৫৩২ জন আবাসন সম্পদ কিনেছেন তার অর্থমূল্য প্রায় সাড়ে সাইত্রিশ কোটি ডলার।
ওদিকে ইইউ ট্যাক্স অবজারভেটরির অ্যাটলাস অফ অফশোর ওয়ার্ল্ড নামে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী বিশ্বের নানা জায়গায় ট্যাক্স হ্যাভেন বা কর স্বর্গে বাংলাদেশিদের প্রায় ৫ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলারের অফশোর সম্পদ আছে।
ট্যাক্স হ্যাভেন বা কর স্বর্গ হিসেবে পরিচিত দেশগুলোতে বিদেশিরা নামমাত্র কর দিয়ে বা কোনো ক্ষেত্রে কর না দিয়েও বিনিয়োগ করতে পারে। এভাবে বিনিয়োগ করা সম্পদকে অফশোর সম্পদ বলা হয়।
বাংলাদেশি যারা বিনিয়োগ করেছেন তাদের বেশিরভাগই সিঙ্গাপুর ও দুবাইয়ের রিয়েল এস্টেট খাতে বিনিয়োগ করেছেন।
এর আগে অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের সংগঠন অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন রিপোর্টিং প্রজেক্ট বা ওসিসিআরপির এক অনুসন্ধান উঠে এসেছিলো যে দুবাইয়ে ৩৯৪ জন বাংলাদেশি ৬৪১টি আবাসিক সম্পদের মালিক।
এ প্রতিষ্ঠানটির মতে পলাতক ব্যক্তিদের ফিরিয়ে দিতে আরব আমিরাত অন্য রাষ্ট্রকে খুব একটা সহযোগিতা করে না বলে দুবাই অফশোর বিনিয়োগের জন্য জনপ্রিয়।
দুবাইয়ে বাংলাদেশিদের এতো বাড়ি হলো কীভাবেগত কয়েক বছরে দুবাই, আবুধাবি, আজমান ও শারজাহতে বহু বাংলাদেশি নিজের নামে বা অন্যের নামে বাড়ি, ভিলা, ফ্ল্যাট, হোটেল মোটেল কিনেছেন। ধারণা করা হচ্ছে অনেকে অপ্রচলিত দেশের নাগরিকত্ব নিয়ে বাংলাদেশ থেকে ভিন্ন পথে নেয়া অর্থ দিয়েই এ ধরনের সম্পদ করেছেন সেখানে।
পাশাপাশি পাম জুমেইরা, দুবাই মেরিনা কিংবা বিজনেস বে’র মতো বিলাসবহুল এলাকাগুলোতে ভিলা ও হোটেল কিনেছেন কেউ কেউ।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে এখন প্রায় বার লাখ বাংলাদেশি বাস করেন এবং বাংলাদেশি মালিকানা আছে এমন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে প্রায় এক লাখ, যাদের অনেকে দীর্ঘদিন ধরে সেখানে ব্যবসা করে সফলতা পেয়েছেন। আরব আমিরাত থেকে প্রতি বছর প্রায় তিন বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স আসে বাংলাদেশে।
কিছু বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান সেখানকার রিয়েল এস্টেট খাতেও ভালো করছে। তারা নানা ধরনের আবাসন সম্পদের পাশাপাশি জমি কেনা বেচায় জড়িত। এর বাইরে ব্রিটিশ বাংলাদেশি বা আমেরিকান বাংলাদেশি কিংবা এ ধরনের দ্বৈত নাগরিকত্ব থাকা অনেক বাংলাদেশিও দুবাইয়ের আবাসন খাতে বিনিয়োগ করেছেন।
তবে এর বাইরেও গত কয়েক বছর ধরেই বেশ কিছু বাংলাদেশি দুবাই শহরে আবাসনে বিনিয়োগ করার বিষয়টি নিয়ে সেখানকার কমিউনিটির মধ্যে আলোচনা আছে বলে জানিয়েছে দুবাই ভিত্তিক সাংবাদিক সাইফুর রহমান।
যদিও আবাসন খাতে বিদেশে বিনিয়োগের জন্য বৈধ পথে কোনো অর্থ বাংলাদেশ থেকে নেয়ার সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। কারণ বাংলাদেশ ব্যাংক এ অনুমতি কখনো দেয়নি।
অবশ্য দুবাই কর্তৃপক্ষ বা আরব আমিরাত সরকার আবাসন খাতে বিনিয়োগ করা অর্থের উৎস সম্পর্কে জানতে চায় না। আবার অন্য কোনো দেশকে সেখানকার বিনিয়োগকারীদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দিয়েও খুব একটা সহযোগিতা করে না। এ কারণেই নানা পথে অর্থ নিয়ে সেখানে বিনিয়োগ করছেন বাংলাদেশসহ অনেক দেশের নাগরিকরা।
মি. রহমান বলছেন আইনি কাঠামোতে সুযোগ না থাকলেও বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন পথে যে প্রতিনিয়ত অর্থ আসছে সেটি সবার জানা।
“এখানে যারা আছে সবাই জানি এবং এ টাকা বিনিয়োগের জায়গাগুলো দৃশ্যমান। বিলাসবহুল ভিলাও কিনেছেন কেউ কেউ,” বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন তিনি।
বিশেষ করে করোনা মহামারির কয়েক বছর আগে থেকে শুরু হওয়া এ প্রবণতা করোনার পর আরও বেড়ে গেছে বলেও জানা যাচ্ছে।
প্রসঙ্গত, দুবাইয়ের আবাসন খাতে বিনিয়োগ করলে বছরে প্রায় ৬-৭ শতাংশ লাভ আসে বলে এটি বিনিয়োগকারীদের জন্য খুবই আকর্ষণীয়।

ড. ইফতেখারুজ্জামান বলছেন বৈধভাবে বাংলাদেশ থেকে অর্থ নিয়ে করার সুযোগ নেই। বরং অর্থপাচার নিয়ে কাজ করতে গিয়ে তারা দেখেছেন সিংহভাগ টাকা পাচার হয় আমদানি রফতানি বাণিজ্যের নামে।
কখনো কখনো তৃতীয় দেশ ঘুরেও টাকা যাচ্ছে দুবাইয়ে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ থেকে একজন ব্যক্তি বিদেশে যাওয়ার সময় সর্বোচ্চ বার হাজার ডলার পর্যন্ত নিতে পারেন। এর বাইরে বাইরে বিনিয়োগের জন্য কোনো অর্থ নিতে হলে বিশেষ অনুমতির প্রয়োজন হয়। কিন্তু বিদ্যমান আইন অনুযায়ী অন্য দেশের আবাসন খাতে বিনিয়োগের জন্য আবেদনের সুযোগ নেই।
সাইফুর রহমান বলছেন আইনি কাঠামোতে যাই থাকুক বাস্তবতা হলো অনেকেই নানা পথে দুবাইতে টাকা নিচ্ছেন ও সম্পদ কিনছেন।
“টাকা দুবাইতে আসছে এবং দুবাই থেকে যাচ্ছেও। অনানুষ্ঠানিক পথেই যে এগুলো আসছে এবং বিনিয়োগ হচ্ছে সেটা ওপেন সিক্রেট,” বলছিলেন মি. রহমান।
দুবাইয়ে ব্যবসা করেন এমন একজন জানিয়েছেন সেখান থেকে টাকা পাঠাতে ও বাংলাদেশ থেকে টাকা নেয়ার জন্য বহু মাধ্যম সক্রিয় আছে।
“কিছু লোক আছে যারা দিরহাম দিবে এখানে। বিনিময়ে টাকা নিবে ঢাকায়। ধরেন এখন আমার এক কোটি দিরহাম লাগবে। দশ মিনিটে দিয়ে যাবে। ওই একই সময়ে ঢাকায় তাদের লোক ক্যাশ টাকা নিয়ে নিবে,” বলছিলেন তিনি। তিনি তার নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ করেছেন।
বাংলাদেশ থেকে কেউ যদি অবৈধ পন্থায় অর্থ নিয়ে দুবাইয়ের মতো দেশের আবাসন খাতে বিনিয়োগ করলে তাকে চিহ্নিত করার সুযোগ আছে কি না জানতে চাইলে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সরকার উদ্যোগ নিলে সম্ভব তবে সময় লাগতে পারে।
“বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক আইনের মধ্যে সে সুযোগ আছে। আন্তর্জাতিক সহযোগিতা নিয়ে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার উদ্যোগ নেয়া সম্ভব। কিন্তু পাচারকারীরা ক্ষমতাবান ও প্রভাবশালী। এ কারণেই প্রতি বছর বিপুল অর্থ পাচার হচ্ছে। আবার টাকাটা যেসব দেশে যায় তারা লাভবান হয় বলে খুব একটা সহযোগিতা করতে চায় না,” বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন তিনি।
প্রসঙ্গত, সিঙ্গাপুর থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর অর্থ বাংলাদেশ সরকার ফিরিয়ে এনেছিলো। বিবিসি বাংলা