News update
  • Bangladesh at a Crossroads as 2025 Reshapes the Nation     |     
  • Khaleda Gets Eternal Farewell from Over a Million of Hearts     |     
  • Sea of Mourners Gathers to Pay Tribute to Khaleda Zia     |     
  • State mourning begins, state funeral for Khaleda Zia at 2 pm     |     

বাশার আল আসাদের পতন মধ্যপ্রাচ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য বদলে দেবে

বিবিসি বাংলা মিডিয়া 2024-12-09, 7:23pm

erwerwerw-d842845f7f3238f667327fbc4b1a94f31733750612.jpg




সিরিয়ার বিদ্রোহীরা দেশটির উত্তর-পশ্চিমের ইদলিবে তাদের ঘাঁটি থেকে সরকার বিরোধী বিস্ময়কর অভিযান শুরুর পর বহু বছরের শাসন শেষে বাশার আল-আসাদের পতন হয়েছে। কিন্তু মাত্র এক সপ্তাহ আগেও এটি ছিলো অচিন্তনীয়।

এটাই সিরিয়ার জন্য টার্নিং পয়েন্ট। ২০০০ সালে বাবার মৃত্যুর পর ক্ষমতায় এসেছিলেন বাশার আল-আসাদ এবং তারা বাবার মতোই শক্তভাবে দেশ শাসন করেছেন। মি. আসাদের পিতা ঊনত্রিশ বছর রাষ্ট্র ক্ষমতায় ছিলেন।

উত্তরাধিকার সূত্রেই তিনি শক্তভাবে নিয়ন্ত্রিত এবং দমনপীড়নমূলক রাজনৈতিক কাঠামো পেয়েছেন, যেখানে বিরোধীদের প্রতি কোনো ধরনের সহনশীলতা ছিল না।

প্রথম দিকে একটি প্রত্যাশা ছিলো যে তিনি হয়তো ভিন্ন হবেন- আরও খোলামেলা, তুলনামূলক কম নিষ্ঠুর। কিন্তু সেগুলো বেশি দিন টিকেনি।

২০১১ সালে তার সরকারের বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা আন্দোলন নৃশংসভাবে দমনের জন্য তাকে সবসময়েই মনে রাখা হবে। ওই ঘটনাই সিরিয়াকে গৃহযুদ্ধের দিকে নিয়ে যায়।

এই যুদ্ধে পাঁচ লাখেরও অধিক মানুষ মারা যায় এবং শরণার্থীতে পরিণত হয় অন্তত ৬০ লাখ মানুষ।

রাশিয়া ও ইরানের সহযোগিতা নিয়ে তিনি বিদ্রোহীদের দমন করে নিজেকে রক্ষা করেছিলেন। রাশিয়া তার বিমানশক্তি ব্যবহার করেছিলো আর ইরান তার সামরিক উপদেষ্টা পাঠিয়েছিলো সিরিয়ায়।

পাশাপাশি ইরান সমর্থিত লেবাননের হেজবুল্লাহ তাদের প্রশিক্ষিত যোদ্ধাদের মোতায়েন করেছিলো।

কিন্তু এর কিছুই এবার ঘটেনি। তার সহযোগীরা নিজেদের বিষয় নিয়ে ব্যস্ত। তারা মি. আসাদকে কার্যত পরিত্যাগ করেছে।

অথচ তার সেনারা এদের সহযোগিতা ছাড়া অক্ষম। কিছু ক্ষেত্রে বিদ্রোহীদের থামাতে কার্যত তারা ছিলো অনিচ্ছুক। এই বিদ্রোহীদের নেতৃত্ব দিয়েছে ইসলামপন্থী জঙ্গি গ্রুপ হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস)।

গত সপ্তাহে প্রথমে তারা আলেপ্পো দখল করে, কার্যত কোন প্রতিরোধ ছাড়াই। এটি সিরিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর।

এরপর তার কয়েকদিন পরেই হামা, হোমস শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকা দখলে নেয়।

অন্যদিকে পূর্ব ও দক্ষিণ দিক থেকেও এগিয়ে আসছিলো বিদ্রোহীরা। ফলে অভিযানের এক পর্যায়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে দামেস্ক।

কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বিদ্রোহী যোদ্ধারা রাজধানীতে প্রবেশ করে, যা ছিলো আসাদের ক্ষমতার কেন্দ্র।

তবে আসাদ পরিবারের পাঁচ দশকের শাসনের অবসান আঞ্চলিক ক্ষমতার ভারসাম্যকে বদলে দিতে যাচ্ছে।

সিরিয়ায় এই পরিবর্তনের ফলে এই অঞ্চলে ইরানের প্রভাব বড় ধরনের ধাক্কা খেলো। আসাদের অধীনে সিরিয়া ছিলো ইরানিদের সাথে হেজবুল্লাহর যোগাযোগের অংশ। হেজবুল্লাহকে অস্ত্র ও গোলাবারুদ পাঠানোর জন্য এটা ছিলো মূল পথ।

হেজবুল্লাহ নিজেই ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে মারাত্মক দুর্বল হয়ে গেছে এবং এর ভবিষ্যতও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

ইরান সমর্থিত আরেকটি গোষ্ঠী হলো ইয়েমেনের হুথিরা। তারা বারবার বিমান হামলার লক্ষ্যবস্তু হয়েছে।

এসব গোষ্ঠীর সাথে ইরাকের মিলিশিয়া এবং গাজার হামাস—সব মিলিয়েই তেহরানের ভাষায় 'প্রতিরোধের অক্ষ', যা বর্তমানে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত।

এখন ওই অঞ্চলের নতুন চিত্র নিয়ে ইসরায়েলে উদযাপন হবে, যেখানে ইরানকে দেখা হবে অস্তিত্বের হুমকি হিসেবে।

অনেকে বিশ্বাস করেন বিদ্রোহীদের এবারের অভিযান তুরস্কের আশীর্বাদ ছাড়া হয়নি। তারা অবশ্য সিরিয়ার কিছু বিদ্রোহীদের সমর্থন দিলেও এইচটিএসকে সমর্থনের দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে।

কিছু সময়ের জন্য তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তায়েফ এরদোয়ান কূটনৈতিক সমাধানের জন্য আলোচনায় বসার চাপ দিয়েছেন, যাতে করে সিরিয়ার শরণার্থীরা নিজ দেশে ফিরতে পারে।

কমপক্ষে ত্রিশ লাখ সিরিয়ান শরণার্থী তুরস্কে অবস্থান করছে। এটা স্থানীয়ভাবে এখন স্পর্শকাতর ইস্যুতে পরিণত হয়েছে।

কিন্তু বাশার আল-আসাদ তা করতে রাজি হচ্ছিলেন না। ফলে এখন আসাদের বিদায়ে অনেকেই খুশী। কিন্তু এরপর কী হবে?

এইচটিএসের উৎস হলো আল-কায়েদা এবং তাদের একটি সহিংস অতীত আছে।

তারা গত কয়েক বছর ধরে জাতীয়তাবাদী শক্তি হিসেবে তাদের পরিচিত করানোর চেষ্টা করে আসছিলো। তাদের সাম্প্রতিক বার্তাগুলোর মধ্যে কূটনৈতিক ও সমঝোতামূলক সুর আছে।

কিন্তু বহু মানুষই আছেন যারা এতে আশ্বস্ত নন এবং তারা উদ্বিগ্ন হয়েছিলেন এই ভেবে যে, সরকার উৎখাতের পরই আসলে করণীয় ঠিক করবে বিদ্রোহীরা।

একই সময়ে নাটকীয় এই পরিবর্তন ক্ষমতার বিপজ্জনক শূন্যতার দিকে ঠেলে দিতে পারে এবং এর ফলে আরও নৈরাজ্য, এমনকি আরও সহিংসতার জন্ম দিতে পারে।