News update
  • Stock Market key indexes rise, but SME sector struggles     |     
  • International Criminal Court condemns US sanctions move     |     
  • Yao Wen looks for grand celeb of 50 years of China-BD ties     |     
  • Jashore’s Godkhali flowers expected to fetch Tk 100 crore     |     
  • Turk warns DR Congo crisis may worsen, without inte’l action     |     

ইউএসএআইডির হাজারো কর্মীকে ছুটিতে পাঠানো নিয়ে ট্রাম্পের পরিকল্পনা আটকে দিলেন বিচারক

বিবিসি নিউজ মিডিয়া 2025-02-08, 5:37pm

wrwerwrwrdf-bc10a85c6fa9620fbd9579cd9538cf351739014656.jpg




যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডি- এর ২২০০ কর্মীকে বেতনসহ ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত আটকে গিয়েছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই পরিকল্পনা সাময়িকভাবে আটকে দিয়েছেন দেশটির একজন বিচারক।

ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত কার্যকর হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে এই স্থগিতাদেশ দেয়া হয়। বিচারক কার্ল নিকোলস বলেছেন, তিনি সীমিত সময়ের জন্য এই স্থগিতাদেশ দেবেন।

মূলত, ইউএসএআইডি কর্মীদের প্রতিনিধিত্ব করে এমন দুটি ইউনিয়নের দায়ের করা মামলার প্রতিক্রিয়ায় বিচারক কার্ল নিকোলস এই সাময়িক স্থগিতাদেশ জারি করেন।

সংস্থাটি বন্ধের বিষয়ে ট্রাম্পের পরিকল্পনা আটকে দেওয়ার জন্য এই দুটি ইউনিয়ন চেষ্টা করছিল। এই আদেশ এক সপ্তাহ পর্যন্ত অর্থাৎ ১৪ই ফেব্রুয়ারি মধ্যরাত পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।

ট্রাম্পের পরিকল্পনা অনুযায়ী, শুক্রবার মধ্যরাত থেকে ইউএসএআইডি-এর ১০ হাজার কর্মীর প্রায় সবাইকে বেতনসহ প্রশাসনিক ছুটিতে পাঠানোর পরিকল্পনা ছিল, শুধুমাত্র ৬১১ জন কর্মী ছাড়া।

এরই মধ্যে সংস্থাটির ৫০০ কর্মীকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। শুক্রবার তাদের সাথে এই২,২০০ কর্মীকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানোর কথা ছিল। কিন্তু সরকার যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান লঙ্ঘন করছেন এবং কর্মীদের ক্ষতি করছেন এই যুক্তিতে শেষ মুহূর্তে তা আটকে যায়।

বিচারক ইউনিয়ন দুটির পক্ষেই রায় দিয়েছেন, তবে বাকি কর্মীদের চাকরির ভবিষ্যৎ কী হবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে ইতোমধ্যেই ছুটিতে পাঠানো ৫০০ কর্মীকেও কাজে পরবর্তী নির্দেশনার আগ পর্যন্ত কাজে ফেরানোর কথা বলেছেন বিচারক।

মামলাকারী সংস্থাগুলো বিবিসিকে জানিয়েছে যে তারা আদালতের আদেশের লিখিত অনুলিপির জন্য অপেক্ষা করছে, যাতে বোঝা যায় সব কর্মীর ওপর এর প্রভাব কেমন হবে।

এই রায় ঘোষণার সময়, কর্মকর্তারা ওয়াশিংটন ডিসিতে ইউএসএআইডি-এর সদর দফতর থেকে সংস্থাটির সাইনবোর্ড সরিয়ে এবং ঢেকে দিচ্ছিলেন।

ইউএসএআইডি বিশ্বের সবচেয়ে বড় ত্রাণ সহায়তা প্রদানকারী সংস্থা, যার বাজেটের বেশিরভাগ অংশ স্বাস্থ্য কর্মসূচিতে ব্যয় হয়।

সংস্থাটির ১০ হাজার কর্মীর দুই-তৃতীয়াংশ যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে বিভিন্ন দেশে কাজ করে।

ট্রাম্প যুক্তি দিয়েছেন যে ইউএসএইড জনগণের করের টাকা সঠিকভাবে ব্যবহার করছে না।

তার প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি খরচ কমানোর জন্য অনেক সরকারি সংস্থার বাজেট কাটার চেষ্টা করছে, এর মধ্যে ইউএসএইড-ও রয়েছে।

ট্রাম্প সরকার সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন এবং বাজেট কমানোর জন্য ডিপার্টমেন্ট অফ গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি- ডজ নামে একটি পরামর্শদাতা সংস্থা গঠন করেছিলেন, যার নেতৃত্বে আছেন প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্ক।

আবেদনটি করেছিল আমেরিকান ফরেন সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন ও আমেরিকান ফেডারেশন অফ গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ, যা ইউএসএআইডি-এর কর্মীদের প্রতিনিধিত্ব করে।

বিচারক নিকোলস, যাকে ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদে মনোনীত করেছিলেন, তিনি বলেছেন যে লিখিত আদেশ পরে প্রকাশ করা হবে এবং এতে আরও বিস্তারিত তথ্য থাকবে।

পাবলিক সিটিজেন নামে একটি সংগঠনের আইনজীবী লরেন বেটম্যান বলেছেন, আপাতত সংস্থার ২,০০০-এর বেশি সরাসরি নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মী, যারা ইউনিয়নের সদস্য, তারা নিরাপদ থাকবেন। এই সংগঠনই মামলাটি দায়ের করেছিল।

শুনানির সময়, বিচারকের মনে হয়নি যে মামলার অংশ হিসেবে অন্যান্য দাবিগুলো মঞ্জুর করবেন, যেমন অনুদান ও চুক্তি পুনর্বহাল করা বা ইউএসএআইডি-এর অফিসগুলো আবার খুলে দেওয়া।

অভিযোগে বলা হয়েছে, সংস্থাটি বন্ধ করার চেষ্টা করে প্রেসিডেন্ট মার্কিন সংবিধান ও ফেডারেল আইন লঙ্ঘন করছেন।

এতে আরও বলা হয়েছে, "ইউএসএআইডি বন্ধের জন্য ট্রাম্প প্রশাসন যে সিদ্ধান্তগুলো নিয়েছে, তার একটিও কংগ্রেসের অনুমোদন নিয়ে হয়নি।"

"ফেডারেল আইনে বলা আছে, কেবল কংগ্রেসই আইনতভাবে এই সংস্থাটি বন্ধ করার অধিকার রাখে।"

ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষে বিচার বিভাগের কর্মকর্তা ব্রেট শুমেট বিচারককে বলেছেন, "প্রেসিডেন্ট মনে করেন, ইউএসএআইডিতে দুর্নীতি ও জালিয়াতি হয়েছে।"

গত ২০শে জানুয়ারি, দায়িত্ব নেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন, যাতে বলা হয় সমস্ত বিদেশি সহায়তা স্থগিত থাকবে যতক্ষণ না সেই তহবিল যাচাই করা হয এবং তার "আমেরিকা ফার্স্ট" নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য করা হয়।

এর ফলে , ইউএসএআইডি-এর সব কাজ বন্ধ হয়ে যায়। যা বিশ্বের প্রায় ১২০টি দেশে স্বাস্থ্য ও জরুরি সহায়তা কর্মসূচি পরিচালনা করে, যার মধ্যে সবচেয়ে দরিদ্র দেশগুলো রয়েছে।

"ইউএসএআইডি কট্টর বামপন্থীদের পাগল করে দিচ্ছে," ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে এমন পোস্ট করেন।

"এখানে দুর্নীতির মাত্রা এতো বেশি যা আগে কখনো দেখা যায়নি। এটি বন্ধ করে দাও!"

সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সময় ইউএসএআইডি-এর প্রধান ছিলেন সামান্থা পাওয়ার।

তিনি নিউ ইয়র্ক টাইমস-এ লিখেছেন, "আমরা মার্কিন ইতিহাসের সবচেয়ে খারাপ ও ব্যয়বহুল পররাষ্ট্র নীতির ভুলগুলোর একটি দেখছি।"

যুক্তরাষ্ট্র এখন পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক সাহায্য প্রদানকারী রাষ্ট্র।

ইউএসএআইডি-এর বার্ষিক বাজেট প্রায় ৪০ বিলিয়ন ডলার, যা মার্কিন সরকারের মোট ছয় দশমিক ৭৫ ট্রিলিয়ন ডলার বাজেটের মাত্র দশমিক ছয় শতাংশ।

জাতিসংঘের এইচআইভি/এইডস প্রতিরোধ কর্মসূচির প্রধান বিবিসিকে বলেছেন যে, এই তহবিল কমানোর ফলে বিশ্বজুড়ে ভয়াবহ প্রভাব পড়বে।

"যদি অর্থায়ন পুনরায় চালু না করা হয়, তাহলে আগামী পাঁচ বছরে এইডসের কারণে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ৬৩ লাখে দাঁড়াবে," বলেছেন ইউএনএইড-এর নির্বাহী পরিচালক উইনি বায়ানাইমা।