News update
  • Pakistan claims it has shot down five Indian fighter jets and a drone     |     
  • India says its strikes are of non-escalatory nature: BBC summary      |     
  • Waterways gasp for breath in Feni; 244 rivers, canals dying     |     
  • Indian Airstrikes Kill 8 in Pakistan, Mosques Hit     |     
  • Israeli crimes escalate, Gaza faces catastrophic situation     |     

বিএনপি কি দল পুনর্গঠন প্রক্রিয়া শুরু করলো?

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক রাজনীতি 2024-06-15, 8:49am

kqrqiurioquoruoq-67c6fa7365c7d8451f6159229196458b1718419775.jpg




বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরসহ চারটি মহানগর কমিটি, সহযোগী সংগঠন যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটি এবং ছাত্রদলের চারটি নগর কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণার পর অনেকেই মনে করছে দলটি পুনর্গঠন প্রক্রিয়া শুরু করেছে।

তবে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে অনেকটা হুট করেই এসব কমিটি বাতিলের বিজ্ঞপ্তি গণমাধ্যমে প্রচারের পর দলটির বিভিন্ন পর্যায়ে অনেকে বিস্মিত হয়েছেন। তবে যারা বাদ পড়েছেন তারা দলের সিদ্ধান্ত নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, কমিটি বাতিল বা পরিবর্তন আনা দলের নিয়মিত সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের অংশ।

“এটা খুব স্বাভাবিক রাজনৈতিক প্রক্রিয়া। যেসব জায়গায় কমিটি বিলুপ্ত হয়েছে সেখানে নতুন কমিটি আসবে। এ প্রক্রিয়া চলমান থাকবে,” বলছিলেন তিনি।

কিন্তু বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটি ও স্থায়ী কমিটিতেও পরিবর্তন আসবে কি না, আসলে তা কাউন্সিলের মাধ্যমে হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছেন, “সরকারের অব্যাহত নিপীড়নের কারণে আমরা অনেক দিন কাউন্সিল করতে পারিনি। সামনে পরিবেশ পরিস্থিতি অনুযায়ী দলের নেতৃত্ব আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে।”

প্রসঙ্গত, বিএনপির সর্বশেষ জাতীয় কাউন্সিল হয়েছিলো ২০১৬ সালের মার্চে। দলটির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তিন বছর পরপর কাউন্সিল হওয়ার কথা থাকলেও দলটি সেটি করতে পারেনি।

যদিও মি. আলমগীর বলেছেন, “আমরা কাউন্সিল করতে পারিনি তা নয়, সরকারের কারণে করা যায়নি। চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াসহ আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মী কারাগারে ছিল ও আছে। এমন পরিস্থিতিতে কাউন্সিল কীভাবে করা সম্ভব?”

মধ্যরাতে কমিটি বিলুপ্ত- ‘ব্যর্থতার’ খেসারত নাকি পুনর্গঠন

বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের পাশাপাশি চট্টগ্রাম ও বরিশাল মহানগর কমিটি বিলুপ্তির কথা জানানো হয়। ২০২১ সালের অগাস্টে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণের আহবায়ক কমিটি করা হয়েছিলো।

পাশাপাশি, যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটিও বাতিল ঘোষণা করা হয়। এরপর দলের আরেক সহযোগী সংগঠন ছাত্রদল জানায় যে তারাও ঢাকা মহানগরের চারটি কমিটি বাতিল করেছে।

মধ্যরাতে এমন বিজ্ঞপ্তির খবর দলের ভেতরে জানাজানি হওয়ার পর এ নিয়ে সারাদেশে দলের অভ্যন্তরে নানা ধরনের আলোচনা ও পর্যালোচনা শুরু হয়। কেউ কেউ খবরটি শুনে বিস্ময় প্রকাশ করেন।

তবে দলের বিভিন্ন পর্যায়ের একাধিক নেতার সাথে আলাপ করে জানা গেছে গত বছর জুলাই থেকে সরকার বিরোধী আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ২৯শে জুলাই ঢাকার প্রবেশ মুখে অবস্থানের কর্মসূচি সফল না হওয়ায় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নগর কমিটিগুলো দলের মধ্যে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে।

সহযোগী সংগঠনের নেতাদের সাথে এক বৈঠকে এসব নিয়ে তখনি ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

এর কয়েকদিনের মধ্যেই ছাত্রদল সভাপতির পদ থেকে কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণকে ‘অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে’ সরিয়ে দিয়েছিলেন মি. রহমান, যা দলের মধ্যে তোলপাড় তৈরি করেছিলো।

এরপর আটাশে অক্টোবর ঢাকার নয়াপল্টনে ডাকা মহাসমাবেশ পণ্ড হওয়ার ঘটনাতেও এসব নেতাদের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা হচ্ছিলো।

পরে টানা অবরোধ কর্মসূচি পালন করলেও বিএনপির বর্জনের মধ্যেই চলতি বছরের জানুয়ারিতে সংসদ নির্বাচন হয়ে যায় এবং আওয়ামী লীগ আবারও সরকার গঠন করে।

এরপর দলটির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভায় একাধিকবার সব স্তরে পরিবর্তন আনার প্রস্তাব আসে বলে জানিয়েছেন স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডনে থেকে ভার্চুয়ালি এসব সভায় সভাপতিত্ব করেছেন।

দলের সূত্রগুলো বলছে মহাসচিব নিজেও স্থায়ী কমিটির সভায় সম্মেলন করা এবং দলের সব স্তরে পরিবর্তনের পক্ষেই মত দিয়েছিলেন।

“তবে নির্বাচনের আগে ও পরে আমাদের বহু নেতাকর্মী আটক হয়েছিলেন। যাদের অনেকেই গত কয়েক মাসে মুক্তি পেয়েছেন। নেতাদের জেলে রেখে কমিটি বাতিলের দিকে যাওয়া হয়নি। এখন যেহেতু নেতারা অনেকেই জামিনে বেরিয়ে এসেছেন তাই শীর্ষ নেতৃত্ব হয়তো কমিটি বিলুপ্ত করার জন্য এটাকেই ভালো সময় মনে করেছে,” বলছিলেন জাতীয় নির্বাহী কমিটির একজন সদস্য।

যদিও বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে নগর কমিটিগুলো বাতিলের সিদ্ধান্ত সিনিয়র নেতাদেরও অনেকের জানা ছিল না।

জানা গেছে তারেক রহমানের নির্দেশনা পেয়েই মহাসচিবকে অবহিত করে গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়েছে দলের দফতর বিভাগ থেকে। দফতরের সাথে সংশ্লিষ্ট কেউ এসব নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি।

কাউন্সিল হবে ? নাকি কাউন্সিল ছাড়াই কমিটি

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে যে ধারণা পাওয়া গেছে তাতে এখনি দলটির কাউন্সিল আয়োজনের সম্ভাবনা কম।

তবে পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে জাতীয় স্থায়ী কমিটি ও নির্বাহী কমিটিতে পরিবর্তন আনার সম্ভাবনা রয়েছে।

“পুনর্গঠন বা সংযোজন বিয়োজন দলের অভ্যন্তরীণ রুটিন ওয়ার্ক। আর কাউন্সিল হলে আপনারা তা দেখতে পাবেন,” বলেছেন মি. আলমগীর।

তবে দলটির বেশ কিছু নেতা মনে করেন, কাউন্সিলের আগে পুনর্গঠন প্রক্রিয়ায় আরও তরুণ নেতাদের, বিশেষ করে ছাত্রদলের সাবেক নেতাদের অনেককে জাতীয় নির্বাহী কমিটিতে নিয়ে আসবেন তারেক রহমান। এতে করে মি. রহমানের কর্তৃত্ব আরো দৃঢ় হবে বলে মনে করেন দলটির নেতারা।

তারপর 'সময় সুযোগ বুঝে কাউন্সিলের উদ্যোগ নেয়া হতে পারে' বলে মন্তব্য করেছেন দলের একজন সহসভাপতি।

প্রসঙ্গত, বিএনপির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দলের চেয়ারম্যান যে কাউকেই দলের মধ্যে তার পদ থেকে সরিয়ে দিতে পারেন কিংবা কাউকে নিয়োগ দিতে পারেন।

দলের নেতাদের বড় অংশেরই ধারণা গঠনতন্ত্রের এই বিধান বলেই নির্বাহী কমিটিসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কমিটিতে পরিবর্তন এনে ‘আপাত পুনর্গঠন’ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবেন তারেক রহমান।

২০০৪ সালের ২১শে অগাস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় করা মামলার রায়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের যাবজ্জীবন সাজা দিয়েছিল বাংলাদেশের আদালত।

এছাড়া জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা আরেকটি মামলায় নয় বছরের কারাদণ্ড পাওয়া মি. রহমান লন্ডনে থেকে ইন্টারনেটের সাহায্যে অনলাইনেই দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে দলীয় বৈঠকসহ সভা-সমাবেশে যোগ দিচ্ছেন। বিবিসি বাংলা