BNP Vice-Chairman Shamsuzzaman DUdu addressing a BNP founding anniversary organised by the Jatiyatabadi Sansgritic Dal on Tuesdayul
দুদু বলেন, “বিএনপির জন্ম না হলে বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরে আসতো না। ৭৫ এর পরবর্তী সময়ে দেশে যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছিল, আইনের সংকট সৃষ্টি হয়েছিল তা থেকে উত্তরণের জন্যই বিএনপির জন্ম হয়েছে। বিএনপির জন্মের পরেই বাংলাদেশের মুক্তিকামী মানুষ কৃষক, শ্রমিক, জনতা আশা দেখেছিল।” সব রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ থেকে বর্তমান ক্রাইসিসের (ক্রান্তিকাল) মোকাবেলা করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু।
বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের উদ্যোগে বিএনপির ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এক সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, “নানান ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। এই ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে। যদি এই ষড়যন্ত্র রুখে দিতে না পারি তাহলে দেশের যে সংকট তৈরি হবে তাতে অস্তিত্ব সংকটে পড়বে দেশ।” তিনি সব রাজনৈতিক দলকে আহ্বান জানিয়ে বলেন, “এখন বিতর্কিত করা যাবে না। সব রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ থেকে এই ক্রাইসিসের মোকাবেলা করতে হবে।” তিনি বলেন, “বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা স্বাধীনতার ঘোষক, রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধা, বীর উত্তম শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি এবং আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি আল্লাহ যেন তাকে জান্নাতবাসী করেন।”
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, “শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্বল্পকালীন দেশ পরিচালনার পরে এদেশে স্বৈরাচার ফিরে আসে। দেশের গণতন্ত্র ধ্বংস করার পাঁয়তারা করেছে স্বৈরাচারী এরশাদ। পরবর্তী সময়ে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বিএনপির হাল ধরে দীর্ঘ ৯ বছর সংগ্রাম করে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি (বেগম খালেদা জিয়া) নারীদের উন্নয়ন করেছেন, কৃষিতে উন্নয়ন করেছেন। দেশের সব সেক্টরেই তিনি উন্নয়ন করেছেন। তাকেও ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকার নানান মিথ্যা মামলায় জর্জরিত করে দীর্ঘ ছয় বছর বন্দী করে রেখেছিল।” বিএনপির এই ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, “দেশনায়ক তারেক রহমান এখনো দেশের বাইরে নির্বাসিত জীবনযাপন করছেন। তার সব মামলা প্রত্যাহার করা দরকার। দেশনেত্রীর মামলা প্রত্যাহার করা দরকার। বিএনপির মহাসচিবসহ বিরোধীদলগুলোর নেতাকর্মী যারা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছে তাদের মামলা এখনো প্রত্যাহার করা হয় নাই। ৬০ লাখ আসামি আড়াই লাখ মামলা, এই মামলাগুলো যতক্ষণ না প্রত্যাহার করা হবে ততক্ষণ প্রশ্ন থেকেই যাবে যে এই সরকার গণতন্ত্রের পক্ষে কাজ শুরু করছে কিনা।”
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অনুরোধ জানিয়ে কৃষকদলের সাবেক এই আহ্বায়ক বলেন, “এই সরকার আমাদের ভালোবাসার সরকার, এই সরকারকে আমরা সমর্থন করি। এই সরকার ছাত্র-জনতার সরকার। এই সরকার জুলুমবাজদের বিরুদ্ধে দাঁড়াবে। হাসিনা নাই তার করা মামলা থাকবে কেন? হাসিনা নাই কোর্টকাছারি তো এখন মুক্ত। এই বিষয়গুলো এই সরকারকে ভাবতে হবে। যত দ্রুত সম্ভব উদ্যোগ নিয়ে এগুলো বাতিল করতে হবে।”
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, “এখন বাংলাদেশের সবচেয়ে জরুরি কাজ হচ্ছে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করা; তিনটি নির্বাচনে মানুষ ভোট দিতে পারেনি, মানুষ যাতে ভোট দিতে পারে তার অবস্থা তৈরি করে নির্বাচন দেওয়া। সেই নির্বাচনে জনগণ যাকে নির্বাচিত করবে আমরা তাকে সাধুবাদ জানাব।” তিনি বলেন, “বিএনপি জনগণের দল হিসেবে আগামীতে কৃষক শ্রমিক মেহনতি মানুষের জন্য কাজ করতে চায়। বিএনপি মানুষের জন্য কাজ করতে চায় বলেই ৩১ দফা রাষ্ট্র মেরামতের কথা বলেছে। এর থেকে বড় সংস্কার বাংলাদেশে আপাতত আর কেউ দিতে পারেনি।”
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি হুমায়ুন কবির বেপারীর সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাবেক সভাপতি সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রেজাবুদৌলা চৌধুরী। উপস্থিত ছিলেন- যোগাযোগ বিষয়ক সম্পাদক আব্দুর রাজি, কাজী মনিরুজান মনির, এম আহমেদ খান মন্টু, বাবু সুরঞ্জন ঘোষ, কৃষকদল নেতা সাদি, সহ-সাধারণ সম্পাদক এম জাহাঙ্গীর আলম, সহ-সাংস্কৃতিক দল কেন্দ্রীয় ঢাকা মহানগর নেতৃবৃন্দ।