News update
  • UNRWA chief: Ceasefire is the start, not the solution     |     
  • UNRWA chief: Ceasefire is the start, not the solution     |     
  • Sudan war becomes more deadly: Ethnically motivated attacks up     |     
  • Dhaka's RMG exports reach $38.48 bn in 2024: New markets up     |     
  • Bangladesh’s GDP Growth to Decline to 4.1% in FY25: WB     |     

কুয়াকাটায় দখল, চাঁদাবাজিতে বেপরোয়া বিএনপি নেতাকর্মীরা

রাজনীতি 2025-01-18, 12:18am

kuakata-sea-beach-1-12-08-22-afd6ce3ee9c49e7d891b3ceb7e50d1231737137915.jpg

Kuakata sea beach-1-12-08-22



পটুয়াখালী:  পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় দখল, চাঁদাবাজিতে বেপরোয়া হয়ে উঠছে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। প্রতিবাদ করায় সন্ত্রাসী হামলার শিকার হচ্ছেন স্থানীয় সাংবাদিকরা। খোদ উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারাও বাদ পড়ছে না তাদের হুমকি, ধামকি লাঞ্চনার হাত থেকে। অভিযুক্ত এসব নেতা কর্মীদের দলের পক্ষ থেকে শোকজ নোটিশ প্রদান সহ দল থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও বন্ধ হচ্ছেনা দখল, চাঁদাবাজি। 

ভুক্তভোগী সাধারণের কোন অভিযোগ থানা পুলিশ রেকর্ড না করলেও বিদ্যুৎ প্লান্টের লোহা, তামা, স্টিল লোপাটের অভিযোগে কলাপাড়া থানায় ও উপজেলা প্রশাসনের সরকারি কাজে বাঁধা দেয়ার অভিযোগে মহিপুর থানায় মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। তবে এসব মামলায় বিএনপি'র অভিযুক্ত নেতা কর্মীদের আসামি করা হলেও পুলিশ তাদের ছুঁতে পারেনি এখনও।

এদিকে বিএনপি'র কুয়াকাটা পৌর শাখার সম্পাদক মো. মতিউর রহমান হাওলাদারের বিআরটিসি কাউন্টার দখলের একটি নির্দেশনা মূলক কথোপকথনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। যাতে তাকে বলতে শোনা যায়, 'কাল থেকে তোমাদের কাউন্টার বন্ধ থাকবে। বিএনপি'র ৯ ওয়ার্ডের নেতা কর্মীরা এখন থেকে ভোগ করবে।' সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন ভিডিও ক্লিপ ছড়িয়ে পড়ার পর পটুয়াখালী জেলা বিএনপি'র পক্ষ থেকে মতিউর রহমানকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। ১৬ জানুয়ারী জেলা বিএনপি'র আহবায়ক আলহাজ্ব আবদুর রশিদ চুন্নু মিয়া ও সদস্য সচিব স্নেহাংশু সরকার কুট্টি স্বাক্ষরিত শোকজ নোটিশে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। তবে এনিয়ে কুয়াকাটা পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমানের বক্তব্য ৫ তারিখের পর কুয়াকাটায় দু'টি কাউন্টার হয়েছে। এতে পর্যটকরা টিকিট কাটা নিয়ে ঝামেলায় পড়ছেন। এর নিরসনে একটি কাউন্টার বন্ধ রাখতে বলা হয়েছিল। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ক্লিপটি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা অসৎ উদ্দেশ্যে ফেসবুকে ছড়িয়ে দিয়েছেন। 

বিআরটিসি বরিশাল ডিপো ম্যানেজার মো. জামিল হোসেন বলেন, 'এটি সরকারি পরিবহন। দীর্ঘ ৩০/৪০ বছর ধরে কুয়াকাটার আলী হোসেন নামের একজন এটি পরিচালনা করছেন। তার সাথে বিআরটিসি'র বৈধ চুক্তি পত্র এবং জামানত টাকা নেয়া রয়েছে। অথচ এটি এখন জবর দখলে নিতে চায় ৪/৫টি গ্রুপ। বিআরটিসি'র পক্ষ থেকে এ বিষয়ে আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।'

এর আগে ৫ নভেম্বর কুয়াকাটায় সরকারি খাস জমি ও সৈকতে বিএনপি'র অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মীদের তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান শুরু করে উপজেলা প্রশাসন। ৬ নভেম্বর দুপুরে উচ্ছেদ অভিযান কালে ভেকু ভাঙচুর ও চালককে মারধর করে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এসময় কুয়াকাটা ট্যুরিজম পার্কে অবস্থানরত দুই জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কলাপাড়া ইউএনও মো. রবিউল ইসলাম ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) কৌশিক আহমেদকে পুলিশসহ অবরুদ্ধ করে ইটপাটকেল ছুঁড়ে মারেন তারা। এ সময় তাদেরকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়া হয়। এ ঘটনায় মহিপুর ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা আ ন ম মুরাদুল ইসলাম বাদী হয়ে মহিপুর থানায় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের অভিযুক্ত ১৯ নেতা-কর্মীর নামে মামলা দায়ের করেন। ৪ জানুয়ারী মসজিদের সামনে খাস জমির ওপর ফের অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ শুরু করেন কুয়াকাটা পৌর শ্রমিকদলের সহ-সভাপতি জসিম। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কৌশিক আহমেদ বাধা দিলে প্রকাশ্যে তাকে গালমন্দ করা সহ মারধরের হুমকি দেয় জসিম। এছাড়া সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন দেশ রূপান্তরের সাংবাদিক কেএম বাচ্চু। বসতবাড়ি সহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাংচুর করা হয় একুশে টেলিভিশন ও দৈনিক যুগান্তরের প্রতিনিধি নাসির উদ্দিন বিপ্লবের ও আমাদের সময়ের কুয়াকাটা প্রতিনিধি মাসুদ পারভেজ সাগরের।

এদিকে ৫ আগষ্টের পর উপজেলার হাট-বাজার, খেয়াঘাট, বালু মহল, বাস কাউন্টার দখল সহ চাঁদাবাজিতে মেতে ওঠে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এমনকি বিদ্যুৎ প্লান্টের লোহা, তামা, স্টিল চুরির সাথে জড়িয়ে পড়েন তারা। যদিও বিদ্যুৎ প্লান্ট এর পক্ষ থেকে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের ৩৬ জনের নাম উল্লেখ সহ অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে কলাপাড়া থানায় মামলা করে বিদ্যুৎ প্লান্ট কর্তৃপক্ষ। এমনকি ঢাকা মহাসড়কের রাজপাড়া পয়েন্টে রাতের অন্ধকারে পুলিশ পরিচয়ে মাছের ট্রাক আটকে পুলিশ পরিচয়ে চাঁদাবাজি কালে হাতে নাতে পুলিশের হাতে আটক হন বিএনপির সহযোগী সংগঠনের ইউনিয়ন পর্যায়ের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী। এসব বিষয়ে বিএনপি'র পক্ষ থেকে শোকজ, বহিষ্কারের মত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। 

উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কলাপাড়া ইউএনও মো. রবিউল ইসলাম ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) কৌশিক আহমেদ বলেন, 'সরকারি কাজে বাঁধা দানের বিষয়টি কোনভাবেই কাম্য নয়। এ ঘটনায় মামলা করা হয়েছে। বিচারিক বিষয়টি আদালত দেখবেন।'

উপজেলা প্রশাসনের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি সূত্রের বক্তব্য, ইউএনও এবং এসি ল্যান্ড তাঁরা দু'জনই আওয়ামী লীগের ডিও লেটারে পদোন্নতি পেয়ে এখানে আছেন। সকল অবৈধ স্থাপনা গুলো ছিল আওয়ামী লীগ আমলের। এতদিন তারা চুপ ছিলেন, এখন উচ্ছেদ শুরু করেছেন। এবং জনরোষের কবলে পড়ে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের দুষছেন। - গোফরান পলাশ