News update
  • BNP strikes polls deal with 7 more partners, reserves 8 seats     |     
  • BRTA tops corruption list among public service offices: BBS     |     
  • Toll-free entry for vehicles via airport area expressway Thursday     |     
  • ‘Very unhealthy’ air quality persists in Dhaka     |     
  • Customs duty on dates imports cut ahead of Ramadan     |     

শেষ পর্যায়ে মঞ্চের কাজ, জড়ো হচ্ছেন নেতাকর্মীরা

তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন

রাজনীতি 2025-12-24, 9:27am

img_20251224_092654-3af0aa326c6bd1b4937117113a491b951766546838.jpg




বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দীর্ঘ ১৭ বছরে নির্বাসিত জীবন শেষে দেশে ফিরছেন। তার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে ‘ঐতিহাসিক ও স্মরণীয়’ করে রাখতে নানামুখী কর্মপরিকল্পনা নিয়েছে বিএনপি। রাজধানীর পূর্বাচল ৩০০ ফিট এলাকায় নির্মিত মঞ্চ এখন প্রায় প্রস্তুত। এই আয়োজন ঘিরে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি এলাকায় সেনাবাহিনীর টহল জোরদার করা হয়েছে। 

এই মাহেন্দ্রক্ষণের সাক্ষী হতে ঢাকায় মানুষের ঢল নামতে শুরু করেছে। সবাই ঐতিহাসিক এই মুহূর্তের সাক্ষী হতে চায়। দূর থেকে হলেও একনজর দেখতে চায়, তার কণ্ঠস্বর শুনতে চায়। এ জন্য দেশের নানা প্রান্ত থেকে যে যেভাবে পারছে, ঢাকার দিকে ছুটছে। এরই মধ্যে কয়েক লাখ মানুষ ঢাকায় এসেছে। 

বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) স্ত্রী ও কন্যাসহ দুপুর ১২টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। বিমানবন্দর থেকে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে তিনি সরাসরি পূর্বাচলের ৩০০ ফিট এলাকার সংবর্ধনাস্থলে যাবেন। সেখান থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মা ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে কিছু সময় কাটিয়ে গুলশানের বাসভবনে যাওয়ার কথা রয়েছে।

দেখা যায়, বাঁশ ও কাঠ দিয়ে তৈরি হচ্ছে ৪৮ ফুট বাই ৩৬ ফুটের বিশাল মঞ্চ। প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে মঞ্চের কাজ। এরই মধ্যে এলইডি স্ক্রিনও লাগানো হয়ে গেছে। মঞ্চের দুপাশে তাঁবু স্থাপন করা হয়েছে। রাস্তার ল্যাম্পপোস্টে লাগানো হচ্ছে মাইক। কুড়িল থেকে সংবর্ধনা মঞ্চের পরবর্তী অংশ পর্যন্ত রাস্তার দুধারে তারেক রহমানকে স্বদেশে স্বাগত জানিয়ে ব্যানার-ফেস্টুনও লাগানো হয়েছে।

মঞ্চের সামনে ও আশপাশের এলাকায় বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা জড়ো হচ্ছেন। কেউ কেউ দুদিন আগেই এসে অবস্থান নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন। তাদের ভাষ্য, দীর্ঘদিন পর দলের শীর্ষ নেতার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ঘিরে ঐতিহাসিক এই মুহূর্তে উপস্থিত থাকতে তারা আগেভাগেই ঢাকা এসেছেন।

নেতাকর্মীরা বলছেন, তারেক রহমানকে স্বাগত জানাতে বিশাল সমাগম ঘটবে। তাই প্রিয় নেতাকে একনজর দেখতে এবং তার কথা শুনতে আগেই চলে এসেছেন তারা। 

তারেক রহমানকে বরণ করে নিতে দলীয়ভাবে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। মঞ্চ ও আশপাশের ব্যবস্থাপনা ছাড়াও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের সদস্যদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। নেতাকর্মীদের ভিড় বাড়তে থাকায় মঞ্চ এলাকায় প্রবেশ ও বের হওয়ার জন্য আলাদা পথ নির্ধারণ করা হয়েছে। এ জন্য দেশের নানা প্রান্ত থেকে যে যেভাবে পারছে, ঢাকার দিকে ছুটছে। এরই মধ্যে কয়েক লাখ মানুষ ঢাকায় এসেছে। সবার গন্তব্য ঢাকা। বাস, ট্রেন, লঞ্চসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহনে তিল ধারণের ঠাঁই নেই।

তারেক রহমানের নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে মঞ্চের কাজ তদারকি করছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের সিকিউরিটি ফোর্সের স্পেশাল (এসএসএফ) সদস্যরা। মঞ্চের অদূরে পুলিশের উপস্থিতিও লক্ষ্য করা গেছে। পাশাপাশি টহল দিতে দেখা যায় সেনাবাহিনীকেও।

তারেক রহমানের এই স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে স্মরণীয় করে রাখতে তার সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ৫০ লাখ মানুষের সমাগমের প্রত্যাশা করছে বিএনপি।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে ১০টি রুটে বিশেষ ট্রেন পরিচালনা করার কথা জানিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। বলা হয়, তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে দলটির নেতাকর্মী ও সমর্থকদের ঢাকায় যাতায়াতের উদ্দেশে বিশেষ ট্রেন অথবা অতিরিক্ত কোচ বরাদ্দের আবেদন করেছে বিএনপি। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১০টি রুটে স্পেশাল ট্রেন পরিচালনা করা হবে এবং নিয়মিত চলাচলকারী একাধিক ট্রেনে অতিরিক্ত কোচ সংযোজন করা হবে।

অন্যদিকে, আগামীকাল সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরদিন ২৫ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাত্রী ছাড়া সহযাত্রী, দর্শনার্থীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।

বিএনপির দলীয় সূত্র জানায়, আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা ৫৫ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তারেক রহমানকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের নিয়মিত ফ্লাইটটি অবতরণের কথা। এর আগে আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) লন্ডনের স্থানীয় সময় ৬টা ১৫ মিনিটে লন্ডনের হিথরো বিমানবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হবেন তিনি। ফ্লাইটটি সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাত্রাবিরতি দিয়ে ঢাকায় পৌঁছবে। 

তারেক রহমানের সঙ্গে একই বিমানে তার সহধর্মিণী ডা. জুবাইদা রহমান, কন্যা জাইমা রহমান, মিডিয়া টিমের আবু আবদুল্লাহ সালেহ, পারসোনাল অ্যাসিস্ট্যান্ট আব্দুর রহমান সানি ও তাবাসসুম ফারহানা নামের আরেকজনের আসার কথা রয়েছে।

ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বিমানবন্দর থেকে ৩০০ ফিটের গণসংবর্ধনাস্থলে আসবেন এবং সেখান থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মা বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে দেখতে যাবেন।

তারেক রহমানের এই স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে ঐতিহাসিক ও স্মরণীয় করে রাখতে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি।

দেশে ফেরার পর গুলশানের ১৯৬ নম্বর বাড়িতে ওঠার কথা রয়েছে তারেক রহমানের। তবে এখনো সেই বাড়ির সংস্কার কাজ চলছে বলে জানা গেছে। যদি কাজ পুরোপুরি শেষ না হয়, তাহলে পাশে থাকা মা খালেদা জিয়ার বাসভবন ‘ফিরোজা’য় আপাতত উঠবেন বলে জানিয়েছেন ‘আমরা বিএনপি পরিবার’র আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমন।

উল্লেখ্য, দেশে ২০০৭ সালের জানুয়ারিতে ক্ষমতা নেওয়া সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার হন বিএনপির তৎকালীন সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব তারেক রহমান। ১৮ মাস কারাগারে থাকার পর ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বরে মুক্তি পান তিনি। চিকিৎসার জন্য ১১ সেপ্টেম্বর লন্ডনের উদ্দেশে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঢাকা ছাড়েন তারেক রহমান।