News update
  • Dhaka seeks global pressure on Myanmar for lasting peace     |     
  • BSEC Chairman’s resignation urged to stabilise stock market     |     
  • Rain, thundershowers likely over 8 divisions: BMD     |     
  • First freight train leaves Mongla carrying molasses     |     
  • 2 dead, six hurt in Sherpur micro-autorickshaw-motorbike crash     |     

পঞ্চমবারের মতো প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন পুতিন

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক সংঘাত 2024-03-18, 10:58am

tgdstsgsdgf-1ca3a87127ce87f901e7ebea37b71a9a1710738070.jpg




ভ্লাদিমির পুতিন বরাবরই বলে আসছিলেন নিরঙ্কুশ বিজয় নিয়ে পঞ্চমবারের মতো ক্ষমতায় বসবেন তিনি। এখন ক্রেমলিনেরই অনুগত অন্য তিন প্রার্থীর বিপক্ষে নির্বাচনে ৮৭ শতাংশ ভোট পাওয়ার পর তিনি বলছেন, রাশিয়ার গণতন্ত্র পশ্চিমা অনেক দেশের চেয়েও বেশি স্বচ্ছ।

প্রকৃতপক্ষে, কোনো যথার্থ বিরোধী প্রার্থীকে নির্বাচনে দাঁড়াতেই দেওয়া হয়নি।

সদ্য প্রয়াত আলেক্সেই নাভালনির সমর্থকরাই যা কিছু প্রতীকী প্রতিবাদ করেছেন।

তাদের 'নুন অ্যাগেইনস্ট পুতিন' কর্মসূচির অংশ হিসেবে মস্কো এবং সেন্ট পিটার্সবার্গের মতো শহর এবং বিদেশের অনেক দূতাবাসের বাইরে ভোটারদের দীর্ঘ সারি দেখা গেছে বটে, কিন্তু ফলাফলের উপর এর কোনো প্রভাব নেই।

অন্তত ৮০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানাচ্ছে পর্যবেক্ষক সংস্থা ওভিডি-ইনফো। শুক্রবার কিছু ভোটকেন্দ্রে বিক্ষিপ্ত হামলার ঘটনা ঘটেছিল। তবে পরের দু’দিন তার আর পুনরাবৃত্তি হয়নি।

পশ্চিমা দেশগুলো এক সুরে বলছে, ভোট অবাধ বা সুষ্ঠু কোনোটিই হয়নি।

জার্মানি এটিকে "সাজানো-নির্বাচন" বলে অভিহিত করেছে। বলছে, রাশিয়ার কর্তৃত্ববাদী শাসন সেন্সরশিপ, দমন ও সহিংসতার উপর ভর করে টিকে আছে।

যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লর্ড ক্যামেরন "ইউক্রেনের ভূখণ্ডে অবৈধ নির্বাচন" আয়োজনের নিন্দা করেছেন।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, "এটি স্বৈরশাসককে ক্ষমতায় রাখার নির্বাচন।"

নাভালনি’র ঘনিষ্ঠ মিত্র লিওনিড ভলকভের মন্তব্য, "পুতিনের প্রাপ্ত ভোটের হারের সঙ্গে বাস্তবতার সামান্যতম সম্পর্কও নেই।"

লিথুয়ানিয়ায় নির্বাসিত ভলকভ গত সপ্তাহে ভয়াবহ হামলার শিকার হন। হাতুড়ি দিয়ে পেটানো হয় তাকে।

তিন দিন ধরে ভোটগ্রহণ চলে রাশিয়ায়। ইউক্রেনের রাশিয়া-অধিকৃত এলাকার বাসিন্দাদের ভোটদানে উদ্বুদ্ধ করতে সেখানে সময় বরাদ্দ ছিল আরও বেশি।

রোববার দখলকৃত বার্দিয়ানস্ক শহরে নির্বাচন কমিশনের একজন কর্মকর্তা নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সেখানকার বাসিন্দারা জানাচ্ছেন রুশপন্থীরা সশস্ত্র সৈন্যদের সাথে নিয়ে ব্যালট বাক্স হাতে বাড়িতে বাড়িতে যাচ্ছেন।

তারপরও, রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টিভি চ্যানেলগুলোতে ফলাফলকে বিপুল বিজয় হিসেবেই উল্লেখ করা হয়েছে।

একজন সংবাদদাতাকে বলেতে শোনা গেল, এই ফল ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতি সমর্থন এবং ঐক্যের অবিস্মরণীয় বহিঃপ্রকাশ।

"এবং পশ্চিমা দেশগুলোর জন্য একটি সংকেত," উচ্ছ্বসিত মন্তব্য তার।

প্রেসিডেন্ট পুতিন অবশ্য সেই তুলনায় নমনীয়ই ছিলেন সংবাদ সম্মেলনে।

অবশ্য, রাশিয়ার নির্বাচনি প্রচারণাকে মার্কিনিদের চেয়ে অনেক বেশি অগ্রসর বলে দাবি করেছেন তিনি। বিশেষ করে, অনলাইন ভোটিংয়ের কথা উঠে আসে তার বক্তব্যে।

নির্বাচনি কর্মকর্তাদের মতে, ৮০ লাখ ভোটার এবার অনলাইনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন।

ভ্লাদিমির পুতিনও অনলাইনে ভোট দিয়েছেন।

তিনি বলেন, "এটি স্বচ্ছ এবং একেবারে নিরপেক্ষ।"

"মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মেইল-ইন ভোটিং এর মতো নয়... যে আপনি ১০ ডলার দিয়ে একটি ভোট কিনতে পারেন,” যোগ করেন রুশ প্রেসিডেন্ট।

স্বাধীন পর্যবেক্ষণ সংস্থা গোলোসকে ভোট পর্যবেক্ষণ করতে দেয়া হয়নি। কিন্তু, অনিয়মের তথ্য ঠিকই বেরিয়ে এসেছে। জানা গেছে, সরকারি কর্মচারিদের ভোট কেন্দ্রে বা অনলাইনে ভোট দেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করা হয়।

প্রেসিডেন্ট পুতিন বিরোধীদের প্রচারণারও প্রশংসা করেছেন। বলেন, এতে ভোটার উপস্থিতি বেশি হয়েছে। যারা ব্যালট নষ্ট করেছেন তাদের সমালোচনা করে, ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।

এই প্রথম বারের মতো অ্যালেক্সেই নাভালনির নাম নিয়েছেন পুতিন। মাসখানেক আগে পুতিনের সবচেয়ে কট্টর সমালোচক আর্কটিক সার্কেলের একটি কারাগারে মারা যান।

নাভালনিকে হত্যার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করার চেষ্টা ছিল তার বক্তব্যে। জানান, তিনি চেয়েছিলেন বন্দি বিনিময়ের মাধ্যমে নাভালনিকে পশ্চিমা কোনো দেশে পাঠিয়ে দিতে। শর্ত শুধু, আর কখনো দেশে ফিরতে পারতেন না।

"আমি এমন প্রক্রিয়ার পক্ষেই ছিলাম, কিন্তু, দুর্ভাগ্যবশত, যা ঘটার ঘটেছে। কী করার আছে? এটাই তো জীবন।"

নাভালনির স্ত্রী ইউলিয়া নাভালনায়া প্রতিবাদের অংশ হিসেবে ভোট দিতে যান। তিনি বার্লিনে রুশ দূতাবাসের সামনে ছয় ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। বলেন, তিনি তার ব্যালট পেপারে প্রয়াত স্বামীর নাম লিখে এসেছেন।

প্রতিবাদে শামিল হওয়া মানুষদের ধন্যবাদ জানান তিনি। বলেন, তাদের উপস্থিতি প্রমাণ করেছে "সবকিছু বিফলে যায়নি"।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন কখনোই লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড হওয়ার ছিল না। কারণ, ক্রেমলিন রাজনৈতিক ব্যবস্থা থেকে শুরু করে মিডিয়া, নির্বাচন সবকিছুই কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করে।

ভ্লাদিমির পুতিনের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন কমিউনিস্ট পার্টির প্রার্থী নিকোলাই খারিতোনভ। তিনি পেয়েছেন চার শতাংশের এর কিছু বেশি ভোট। অন্য দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী পেয়েছেন তার চেয়েও কম।

তিন প্রার্থীর মধ্যে কেউই ‘সিরিয়াস’ ছিলেন না। এমনকি, মি খারিতোনভ নির্বাচনের আগে "জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার" জন্য রীতিমত রাষ্ট্রপতির প্রশংসা করেন।

আস্থা রাখার মতো কোনো বিকল্প দেখতে পাচ্ছে না বলেই লাখো রাশানকে আংশিকভাবে পঞ্চমবারের মতো পুতিনকেই রাষ্ট্রপতি পদের জন্য বেছে নিতে হয়েছে।

তবে এর মূল কারণ, ক্রেমলিন রাজনৈতিক দৃশ্যপট থেকে সম্ভাব্য যে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বীকে সরিয়ে দিয়েছে। বিরোধীরা হয় জেলে গেছেন, অথবা নির্বাসনে পালিয়েছেন নয়তো প্রাণ হারিয়েছেন।

কয়েক সপ্তাহ ধরে শোনা যাচ্ছিল, বরিস নাদেজদিন নামে একজন যুদ্ধবিরোধী রাজনীতিবিদকে দাঁড়ানোর অনুমতি দেওয়া হতে পারে। কিন্তু গত মাসে তাকে নির্বাচন কমিশন বাদ দিয়ে দেয়। কারণ ক্রমশ তার সমর্থন বাড়ছিল। বিবিসি নিউজ