News update
  • Dhaka’s air against worst in the world on Sunday     |     
  • 14-year-old Vaibhav Suryavanshi youngest ever IPL cricketer     |     
  • Chapainawabganj farmer creates stir with purple rice farming     |     
  • $10mn Approved for Climate Resilience in CHT: ICIMOD     |     
  • At least 143 dead in DR Congo river boat fire tragedy     |     

ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তার ৬১ বিলিয়ন ডলারের বিল পাস করলো মার্কিন কংগ্রেস

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক সংঘাত 2024-04-21, 7:30pm

ghhhg-4bfa15f633f3ac0c56699898cda38a731713706265.jpg




যুক্তরাষ্ট্র পার্লামেন্টের প্রতিনিধি পরিষদে শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার আগ্রাসন ঠেকাতে লড়াইরত ইউক্রেনকে নতুন করে সামরিক সহায়তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি বিল পাস হয়েছে।

তবে বিলম্বিত এই পদক্ষেপের বিরোধিতাও হয়েছে কংগ্রেসে এবং ৬১ বিলিয়ন ডলারের এই প্যাকেজটি পেতে একটি ভঙ্গুর দ্বিদলীয় সমঝোতা হয়েছে।

এখন সবার নজর হবে যে কখন এই সহায়তা পৌঁছাবে। প্রকাশিত খবর অনুযায়ী এটি কয়েক দিনের মধ্যে শুরু হবে।

এর মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বহির্বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বের বিষয়ে একটি ‘পরিষ্কার বার্তা’ দিলেন।

বিলটি পাসের পর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন: “গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার বৈশ্বিক গুরুত্ব সবসময়ই থাকবে এবং আমেরিকা যতদিন এর সুরক্ষায় সহায়তা করবে ততদিন এটি ব্যর্থ হবে না”।

তিনি বলেন এই সহায়তা যুদ্ধের সম্প্রসারণ ঠেকাতে এবং হাজারো জীবন বাঁচাতে সহায়তা করবে।

ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ পাল্টা প্রতিক্রিয়াতে বলেছেন, এই প্যাকেজ ‘যুক্তরাষ্ট্রকে আরও ধনী বানাবে, ইউক্রেনকে আরও ধ্বংস করবে এবং ফলাফলস্বরুপ এমনকি আরও বেশী ইউক্রেনিয়ানের মৃত্যু দেখা যাবে’।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে সর্বাত্মক আগ্রাসন শুরু করেন। এরপর থেকে উভয় পক্ষের হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই সৈনিক। ইউক্রেনের লাখ লাখ মানুষকে তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে হয়েছে।

শনিবার পাস হওয়া ওই বৈদেশিক সহায়তা প্যাকেজ বিলে আরও আছে:

ইসরায়েলের জন্য ২৬ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তা এবং গাজার জন্য ৯ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলারের মানবিক সহায়তা

‘কমিউনিস্ট চীনকে জবাব দিতে’ তাইওয়ানসহ এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সহযোগীদের জন্য ৮ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলারের সহায়তা

এছাড়া চীন ভিত্তিক সামাজিক মাধ্যম টিকটককে তার একাংশ বিক্রি বা যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ করতেও একটি বিল পাস করেছে কংগ্রেস।

৩১১-১১২ ভোটে বিলটি পাসের সময় কংগ্রেস সদস্যরা তুমুল করতালি দিয়ে স্বাগত জানান। কেউ কেউ ইউক্রেনের পতাকা নাড়ান।

বিলটি এখন সিনেটে যাবে এবং আশা করা হচ্ছে আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই সেখানে এটি অনুমোদিত হবে। এরপর প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের স্বাক্ষরের পর এটি আইনে পরিণত হবে।

ওদিকে ‘ইতিহাসের ডাকে সাড়া দেয়ার জন্য’ পার্লামেন্টে উভয় দলের চেষ্টার প্রশংসা করেছেন মি. বাইডেন।

একই সঙ্গে তিনি দ্রুত বিলটির অনুমোদন দেয়ার জন্য সিনেটের প্রতি আহবান জানিয়েছেন যাতে ‘দ্রুত স্বাক্ষর করে দ্রুত ইউক্রেনের রণাঙ্গনের জন্য জরুরি ভিত্তিতে দরকারি অস্ত্র ও উপকরণ পাঠাতে’ এটিকে আইনে পরিণত করতে পারেন।

নেটো সেক্রেটারি জেনারেল ইয়েন্স স্টোলটেনবার্গ বলেছেন, এই সহায়তা ইউক্রেনের ইউরোপীয় সহযোগীদের কাছ থেকে পাওয়া শত বিলিয়ন ডলারের সহায়তাকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বাড়িয়ে তুলবে।

“ইউক্রেন রাশিয়ার বিরুদ্ধে দরকারি সব ধরনের সহায়তা পাওয়ার অধিকারী,” এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেছেন ইইউ প্রধান উরসুলা ভন দের লিয়েন এবং চার্লস মিশেল।

বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসের নিউজ আওয়ার প্রোগ্রাম এর সাথে আলাপে ইউক্রেনের ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির প্রধান ওলেকসান্দ্র মেরেজকো যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্টের ভোটকে ‘ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন, যা তার মতে ‘অসংখ্য সৈনিক ও বেসামরিক নাগরিকের জীবন বাঁচাবে’।

“এটি আমাদের শক্তি, সাহস ও লড়াই চালিয়ে যাওয়ার মনোবল দেয়। এবং আমি নিশ্চিত সামনে পরিস্থিতি আমাদের পক্ষে আসবে,” বলছিলেন তিনি।

পশ্চিমা অস্ত্রের ওপর নির্ভরশীল ইউক্রেনের এই সহায়তা খুবই দরকার ছিলো কারণ দেশটি যাদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে সেই রাশিয়া গত কয়েক সপ্তাহে বেশ অগ্রগতি অর্জন করেছে।

ইউক্রেনের সৈনিকদের অস্ত্র কমে আসছে। বারশ কিলোমিটার রণাঙ্গনের জন্য তাদের হাতে পর্যাপ্ত আর্টিলারি গোলা পর্যন্ত নেই।

মি. জেলেনস্কি এবং সিআইএ প্রধান উইলিয়াম বার্নস বলেছেন আমেরিকার সহায়তা না পেলে ইউক্রেন যুদ্ধে হেরে যাবে।

গত ছয় মাসে রাশিয়া আরও কিছু ভূখণ্ড নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। ওয়াশিংটনের শূন্যতা পূরণে অন্য পশ্চিমার হিমশিম খাচ্ছিলো।

ইউক্রেন আরও একবার আমেরিকার সহায়তার গুরুত্ব অনুধাবন করলো।

এর মাধ্যমে ইউক্রেন যুদ্ধে জিতবেই তার নিশ্চয়তা নেই তবে লড়াই অব্যাহত রাখার সুযোগ বাড়াবে।

রিপাবলিকানদের কারণে পার্লামেন্টে এই ভোটাভুটি কয়েক মাস বিলম্বিত হলো। কারণ কেউ কেউ যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্ত ইস্যু বাদ দিয়ে বিদেশে অর্থ পাঠানোর বিরোধিতা করছিলেন।

রিপাবলিকান হাউজ স্পীকার মাইক জনসন বলেছেন নিজের অবস্থান ঝুঁকিতে পড়ার আশঙ্কা থাকা সত্ত্বেও তিনি একে এগিয়ে নিয়ে গেছেন।

শনিবার স্পষ্ট ব্যবধানেই বিলটি পাস হয়েছে। তারপরেও এই ইস্যুতে দুই দলের মধ্যকার মতবিরোধ প্রকাশ পেয়েছে।

ডেমোক্র্যাট দলীয় ২১০ জনের সবাই পক্ষে ভোট দিয়েছেন। অন্যদিকে বেশিরভাগ রিপাবলিকান বিরোধিতা করেছেন। দলটির ১১২ জন বিপক্ষে থাকলেও পক্ষে ছিলেন ১০১ জন।

এটাই মি. জনসনের জন্য সমস্যার কারণ হতে পারে। তিন জন সদস্য এর মধ্যেই মি. জনসনকে সরে যাওয়ার কথা বলেছেন। এমনকি আগামী সপ্তাহে তারা এ নিয়ে ভোটের জন্যও জোর করতে পারেন।

বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের সহায়তা সামনের দিনগুলোতে ইউক্রেনের লড়াইকে টেকসই করলেও যদি ভবিষ্যতে কংগ্রেসে বা হোয়াইট হাউজে রিপাবলিকানদের শক্তি বাড়ে তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে আরও সহায়তা পাওয়া ক্রমশ অনিশ্চিতও হয়ে উঠতে পারে। বিবিসি বাংলা