News update
  • Reported massacre at hospital in Sudan’s El Fasher leaves 460 dead     |     
  • DSE to complete IPO process within 6 months: MD     |     
  • Prof Yunus asks for simplifying reform report for people     |     
  • Forces from inside-outside may work to thwart polls: Prof Yunus     |     
  • NCC for referendum, after July Charter order promulgation     |     

সালমান শাহ হত্যা মামলার আসামি কে এই আজিজ মোহাম্মদ ভাই?

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক সেলিব্রিটি 2025-10-29, 7:13am

6379252dfc773b8389e28e73a8e88a94c9920fbb5ea2b5e2-8d87c0422938e5ac70ebe3962635c4ec1761700426.jpg




আজিজ মোহাম্মদ ভাই। যাকে নিয়ে আছে নানা গল্প, নানা রহস্য। আর এসব গল্পের বেশিরভাগই চলচ্চিত্র জগতের নারী ও হত্যা কেন্দ্রিক। নব্বই দশকের চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা মামলায় আজিজ মোহাম্মদ ভাইসহ তিনজনের যাবজ্জীবন আদেশ দেয়া হয়।

এছাড়া অমর নায়ক সালমান শাহকে হত্যা করার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। দীর্ঘ ২৯ বছর পর অভিনেতা সালমান শাহর অপমৃত্যু মামলা রূপ নিয়েছে হত্যা মামলায়। সালমান শাহ হত্যা মামলায় সর্বমোট ১১ জনকে আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

হত্যা মামলায় প্রধান আসামি নায়কের সাবেক স্ত্রী সামিরা হক। অন্য ১০ আসামির মধ্যে প্রযোজক আজিজ মোহাম্মদ ভাইও রয়েছেন।

তার নামের সঙ্গে ‘ভাই’ শব্দটি থাকার কারণে অনেকেই মনে করেন গডফাদার বলেই তাকে ভাই বলা হয়। সাধারনত মাফিয়া ডন বা গডফাদারদেরকে ভাই ডাকে তাদের অনুগতরা। কিন্তু আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের নামে ‘ভাই’ শব্দটি মূলত তাদের বংশপদবী। তাদের পরিবারের সকলেরই নামের শেষে ভাই পদবী আছে। এমনকি নারীদের নামের সঙ্গেও ভাই দেখতে পাবেন। তার বাবার নাম মোহাম্মদ ভাই। মায়ের নাম খাদিজা মোহাম্মদ ভাই।

১৯৪৭ এ ভারত ভাগের পর তাদের পরিবার ভারতের গুজরাট থেকে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান বাংলাদেশে আসে। তাদের পরিবার মূলত পারস্য বংশোদ্ভুত। তারা ‘বাহাইয়ান’ সম্প্রদায়ের লোক। বাহাইয়ান’ কে সংক্ষেপে ‘বাহাই’ বলা হয়। উপমহাদেশের উচ্চারণে এই ‘বাহাই’ পরবর্তীতে ‘ভাই’ হয়ে যায়।

ধনাঢ্য এই পরিবার পুরান ঢাকায় বসবাস শুরু করে। ১৯৬২ সালে আজিজ মোহম্মদ ভাইয়ের জন্ম হয় আরমানিটোলায়। পারিবারিক সূত্রে আজিজ মোহাম্মদ ভাই নিজেও শুরু করে ব্যবসা।

দিনে দিনে বাড়তে থাকে তার অর্থ সম্পদ। অলিম্পিক ব্যাটারি, অলিম্পিক বলপেন, অলিম্পিক ব্রেড ও বিস্কুট, এমবি ফার্মাসিটিউক্যাল, এমবি ফিল্ম ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানের মালিক তিনি। এছাড়াও মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, হংকং, সিঙ্গাপুরে রয়েছে তার হোটেল ও রিসোর্ট ব্যাবসা। আবার মাদক ব্যাবসার সাথে জড়িত থাকার প্রমাণও পাওয়া গেছে। তিনি সার্ক চেম্বারের আজীবন সদস্য। কথিত আছে, ভারতের পলাতক ডন দাউদ ইব্রাহিমের সাথে রয়েছে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক।

ব্যবসার পাশাপাশি ৯০ এর দশকে আজিজ মোহাম্মদ ভাই এমবি ফিল্মসের ব্যানারে চলচ্চিত্র প্রযোজনায় আসেন। চলচ্চিত্রের প্রতি ভালোবাসা থেকে নাকি নায়িকাদের রূপের মোহে নাকি কালো টাকা সাদা করতে নাকি শুধুই ব্যবসায়িক মানসিকতায় অথবা মিডিয়ার মনযোগ কাড়তে প্রযোজনায় আসলেন- সেটা নিয়ে চর্চা রয়েছে।

তবে এসেই নিজের আধিপত্য বিস্তার করে ফেলেন তিনি। পরিচালক, অভিনেতা, অভিনেত্রী, মিডিয়া মালিক ও সাংবাদিকরা সমীহ করে চলতো তাকে। ৫০টির মত চলচ্চিত্র প্রযোজনা করেছেন আজিজ মোহাম্মদ ভাই। দেশের বিজ্ঞাপন জগতে গ্লামার আনতেও তার ভূমিকা ছিল। নিজের প্রতিষ্ঠান অলিম্পিক ব্যাটারির ‘আলো আলো বেশি আলো’ বিজ্ঞাপনে মিতা নূরের ঝলমলে উপস্থিতি তখন বেশ নজর কেড়েছিল।

এরশাদের আমলে তিনি গ্রেফতার হন। প্রচলিত আছে এক নারী নিয়ে দন্দ্বের কারণেই এরশাদ তাকে গ্রেফতার করিয়েছিলেন। চলচ্চিত্র নায়িকাসহ বিভিন্ন নারীর সাথে আজিজ মোহাম্মদ ভাই এর সম্পর্ক নিয়ে নানা মুখরোচক গল্প ছড়াতে থাকে।

একজন পত্রিকা সম্পাদককে হত্যার অভিযোগ আসে তার বিরুদ্ধে কিন্তু সেটাকে পরে হার্ট অ্যাটাক বলে প্রচার করা হয়। তবে তিনি ব্যাপক ভাবে আলোচনায় আসেন ১৯৯৭ সালে। সেসময়ের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহকে হত্যা করার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। কিন্তু সেটাকে আত্নহত্যা বলেই প্রচার করা হয়।

শোনা যায় সালমান শাহ মারা যাওয়ার আগে একটি পার্টিতে সালমানের স্ত্রী সামিরাকে চুমু দেয় আজিজ। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সকলের সামনে আজিজকে চড় মারেন সালমান। এটাকে মোটিভ হিসেবে ধরেন অনেকেই। সেসময় সালমান হত্যাকান্ড নিয়ে দুইবার জিজ্ঞাসাবাদও করা হয় আজিজকে। কিন্তু পরে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।

এর দুই বছর পর ঢাকা ক্লাবে খুন করা হয় আরেক চিত্র নায়ক সোহেল চৌধুরীকে। এ হত্যাকাণ্ডেও আজিজ মোহাম্মদ ভাই ও তার পরিবারের জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে। সে সময় সোহেল চৌধুরীর প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণে ছিল ঢাকার ডিশ ব্যবসা। এই ব্যবসা নিজেদের কব্জায় নিতে সোহেল চৌধুরীকে হত্যা করা হয় বলে ধারণা।

বর্তমানে আজিজ মোহাম্মদ ভাই সপরিবারে থাইল্যান্ডে থাকেন। সেখান থেকেই ব্যবসা পরিচালনা করেন। তার স্ত্রী নওরিন মোহাম্মদ ভাই দেশে এসে ব্যবসা দেখেন।