কিছু খাবার রয়েছে যা মানুষকে আনন্দ ও সুখের অনুভূতি দেয়। এসব খাবার শরীরে সুখের হরমোন বা হ্যাপি হরমোনের নিঃসরণ বাড়িয়ে দেয়, ফলে মন ভালো থাকে।
সুখের হরমোন ও খাবার
ডোপামিন, সেরোটোনিন, অক্সিটোসিন ও এন্ডোরফিন—এই চারটি হরমোন সুখের হরমোন হিসেবে পরিচিত। এসব হরমোনের নিঃসরণ বাড়ানোর জন্য কিছু নির্দিষ্ট খাবার খাওয়া প্রয়োজন।
ডোপামিন
ডোপামিনের নিঃসরণ বাড়াতে গুড ফ্যাটসমৃদ্ধ খাবার, ফার্মেন্টেড ফুড ও ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। যেমন:
পেটিযুক্ত মাছ ও মাছের তেল
অলিভ অয়েল
টকদই ও পান্তা
শাকসবজি ও সামুদ্রিক মাছ
ভাজাপোড়া, প্রক্রিয়াজাত ও প্যাকেটজাত খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। এছাড়া হাসিখুশি থাকা, ভ্রমণ করা ও পছন্দের পোশাক পরার মাধ্যমেও ডোপামিন নিঃসরণ বাড়ে।
সেরোটোনিন
সেরোটোনিন অন্ত্রের পেশির চলন নিয়ন্ত্রণ করে এবং মুড, ঘুম, স্মৃতি ও ক্ষুধার ওপর প্রভাব ফেলে। এর নিঃসরণ বাড়াতে উপকারী খাবার হলো:
ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডসমৃদ্ধ খাবার
আঁশযুক্ত খাবার
ভিটামিন বি-১২ ও ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার
দারুচিনি, লবঙ্গ, হলুদ, ফ্ল্যাক্স সিড, চিয়া সিড
রাতের ভালো ঘুম সেরোটোনিন নিঃসরণ বাড়াতে সাহায্য করে।
এন্ডোরফিন
এন্ডোরফিন প্রাকৃতিকভাবে ব্যথা উপশম করে এবং স্ট্রেস কমায়। এর নিঃসরণ বাড়াতে খাদ্যাভ্যাসের পাশাপাশি নিয়মিত ব্যায়াম, হাসি, গান শোনা ও মানসিক প্রশান্তির কার্যক্রম গুরুত্বপূর্ণ। খাবারের ক্ষেত্রে:
লো-কার্ব, হাই-প্রোটিন ও গুড ফ্যাটসমৃদ্ধ খাবার
ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার
অক্সিটোসিন
অক্সিটোসিন স্তন্যপায়ীদের দেহে তৈরি হয় এবং বিশেষ করে সন্তান প্রসবের সময় নারীদের শরীরে বাড়ে। এর নিঃসরণ ভিটামিন ‘সি’ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। তাই পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’যুক্ত খাবার খেতে হবে।
এছাড়া, চকলেট শরীরের জন্য ভালো না খারাপ, সে নিয়ে বিতর্ক আছে। কিন্তু চকলেট যে যে-কারও মন ভালো করে দিতে যথেষ্ট, সে নিয়ে কারও সন্দেহ নেই। ডার্ক চকলেটে রয়েছে প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা মন ভালো করতে বেশ উপকারী। চকলেটে থাকা প্রচুর পরিমাণ ট্রাইফোফান শরীরকে চনমনে রাখতে সাহায্য করে।
সুস্থ অন্ত্র ও সুখের অনুভূতি
আমাদের শরীরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ ক্ষুদ্রান্ত্র। অস্বাস্থ্যকর খাবার খেলে ক্ষুদ্রান্ত্রের উপকারী ব্যাকটেরিয়া কমতে থাকে, ফলে গ্যাস, ফ্যাটি লিভার, কোলেস্টেরল ও কোষ্ঠকাঠিন্যের ঝুঁকি বাড়ে।
করণীয়
চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া গ্যাস্ট্রিকের ওষুধসহ যেকোনো ওষুধ না খাওয়া।
লাল আটা ও ফাইবারসমৃদ্ধ চাল খাওয়ার অভ্যাস গড়া।
ফার্মেন্টেড খাবার যেমন টকদই, পান্তা খাওয়া।
সপ্তাহে ২-৩ দিন সামুদ্রিক মাছ খাওয়ার চেষ্টা করা।
প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট ব্যায়াম করা।
সপ্তাহে একদিন ঘুরতে যাওয়া।
প্রতিদিন ৬-৭ ঘণ্টা গভীর ঘুম নিশ্চিত করা।
সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও সুস্থ জীবনযাত্রার মাধ্যমে শরীর ও মনের সুখ নিশ্চিত করা সম্ভব। আরটিভি